দ্য ব্রেকথ্রু ম্যান!

Arfin Rupok
  • প্রকাশিত সময় : শনিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২১
  • শেয়ার করুন

  • Facebook
HOVE, ENGLAND - AUGUST 11: Mrittunjoy Chowdhury of Bangladesh bowling during the Under 19 Tri-Series Final match between Bangladesh and India at the 1st Central County Ground on August 11, 2019 in Hove, England. (Photo by Christopher Lee/Getty Images)

ক্রিকেটের প্রতি নেশাটা খুব বেশীদিন আগের না হলেও ক্রিকেট এখন এক ভালোবাসার নাম। ছোট বেলায় টিভির সামনে বসে বাংলাদেশের খেলা দেখতাম আর মনে মনে ভাবতাম স্টার্কদের মতো পেসার আমাদের দেশে কবে হবে! কবে লাল-সবুজের জার্সিতে বাঁহাতি পেসার দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে প্রতিপক্ষের পরিকল্পনায় ভাঙ্গন ধরাবে? এমন সব প্রশ্নের উত্তর দিতে বাংলাদেশে এসেছে মোস্তাফিজুর, আবু হায়দারদের মতো পেসার। কেউ নিজেদের প্রমাণ করেছেন আবার কেউ হারিয়ে খুঁজছেন।

সময় এখন ২০২০ সাল; বাংলাদেশ এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন! আর এই চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলো দুইজন বাঁহাতি পেসার। একজন শরিফুল আরেকজন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। আজকের আয়োজন মোহাম্মদ মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী নিপুণকে নিয়ে। যাকে বলা হয় আগামীর তারকা বাঁহাতি পেসার। এক নাম্বার জার্সি পরিহিত এই ক্রিকেটার ইতিমধ্যেই প্রমাণ রেখেছেন নিজের শক্তিমত্তার। দিনশেষে একজন মৃত্যুঞ্জয় কোথায় নিয়ে যাবেন নিজেকে সেটা সময়-ই বলে দিবে। আজ জানবো একজন মৃত্যুঞ্জয়ের জানা-অজানা নানান গল্প।

জন্মস্থান এবং বেড়ে ওঠা:
সময়টা ২০০০ সাল, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হিজলদী গ্রামে জন্ম হয় এক শিশুর। তাহাজ্জত হোসেন চৌধুরীর ঘরে জন্ম নেওয়া ছোট্ট শিশুটি যেনো আলো হয়ে ফুটে উঠেছিলেন সেদিন। বাবা-মা আদর করে শিশুটির নাম রেখেছিলেন মোহাম্মদ মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী নিপুণ।

পরিবারের ছোট হওয়ায় সবার আদরেই বড় হতে থাকে মৃত্যুঞ্জয়। বাবা-বড় ভাইদের সংস্পর্শেই বেড়ে উঠেন তিনি। বাবা তাহাজ্জত হোসেনের স্বপ্ন ছিলো তাদের ছেলে পেসার হবে; মস্ত বড়ো পেস বোলার। বাবার সেই স্বপ্ন পূরণেই লক্ষ্য নিয়েই বেড়ে উঠতে থাকেন মৃত্যুঞ্জয়। এভাবেই প্রায় ১০ বছর কেটে যায়; ছোট্ট মৃত্যুঞ্জয়ও বড় হতে থাকে।

ক্রিকেটীয় জীবনের শুরু:
বর্তমান সময়ে বাবা-মায়েরা চায় তাদের ছেলে পড়াশোনা করে একদিন মস্ত বড়ো অফিসার হবে; উজ্জ্বল করবে তাদের মুখ। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয়ের ক্ষেত্রে যেনো ঠিক উল্টোটা ঘটেছিলো। এদিকদিয়ে মৃত্যুঞ্জয়কে অনেক ভাগ্যবান বলতেই হয়। কেননা সেই ছোট বেলা থেকেই মৃত্যুঞ্জয়ের বাবার স্বপ্ন ছিলো তাদের ছেলে ক্রিকেটার হবে, লাল-সবুজের জার্সিতে বিশ্ব মাতাবেন। ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর লক্ষে ২০১০ সালে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় পাড়ি জমান তাহাজ্জত হোসেনের পরিবার। আর এতেই মৃত্যুঞ্জয়ের ক্রিকেটার হবার রাস্তা খুলে যায়।

এর আগে বড় ভাইদের সাথে সাতক্ষীরায় ক্রিকেট খেলতেন মৃত্যুঞ্জয়! ৭৫ টাকার বল কিনে বোলিং অনুশীলন করতেন তিনি সঙ্গী বড় ভাই। মৃত্যুঞ্জয়ের ক্রিকেটের হাতে খড়ি শুরু হয় বাবা তাহাজ্জত এবং বড় ভাইয়ের হাত ধরেই। যদি সেই ছোট বেলায় বাবা-ভাইয়ের সার্পোট না থাকতো তাহলে কি পরীক্ষা মিস দিতে ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেতেন মৃত্যুঞ্জয়! শুরুতেই বললাম মৃত্যুঞ্জয় ভাগ্যবান; অনেক বেশী ভাগ্যবান।

প্রথম কোচ:
প্রথম কোচের কথা বলতে গেলে সবার প্রথমে যেই নামটি বলতে হয় সেটা ছিলেন তার বাবা এবং বড় ভাই। কেননা তাদের অধিনেই শুরু হয় মৃত্যুঞ্জয়ের ক্রিকেট দীক্ষা। এরপর আবাহনীর মাঠে বেশকিছু কোচের অধিনেই এগিয়ে নিতে থাকেন নিজেকে।

পড়াশোনা:
ক্রিকেট মাঠে সেরা মৃত্যুঞ্জয় পড়াশোনাতেও নেই পিছিয়ে। ছোট বেলা থেকেই ক্রিকেটকে ভালোবাসলেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে ভুল করেননি। ২২ গজের সেরা ছাত্র ইতিমধ্যেই এইচএসসি পাস করেছেন। দিনশেষে পড়াশোনা – ক্রিকেটকে আঁকড়ে ধরেই এগিয়ে যাচ্ছেন সামনের দিকে।

যে একাডেমির ক্রিকেটার মৃত্যুঞ্জয়:
শুরুর ১০ বছর কোনো ক্লাবে যুক্ত না হলেও ২০১২ সালে আবাহনীর মাঠে অনুশীলন করতে শুরু করেন নিপুণ। এই সময়ে ক্রিকেট কোচিং স্কুল (সিসিএস) -এর অধিনেই ক্রিকেটীয় অনুশীলন করতেন মৃত্যুঞ্জয়। পরবর্তী সময়ে উদয়ন ক্রিকেট একাডেমিতে শুরু হয় মৃত্যুঞ্জয়ের নতুন পথচলা।

বাবার স্বপ্ন আর বড় ভাইয়ের আশা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে থাকেন মৃত্যুঞ্জয়। শুরু হয় নতুন ইনিংস; এবার সঙ্গী প্রিয় ব্যাট এবং বল। আর লক্ষ্য নিজেকে বাঁহাতি পেসার হিসেবে গড়ে তোলা।

ইচ্ছেশক্তি থাকলে সবকিছুই সম্ভব সেটি করে দেখিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়। অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে সুযোগ করে নিয়েছিলেন নিজেকে। জার্সিতে ২২ গজে তুলেছেন ঝড়; জানান দিয়েছে নিজের প্রতিভার। কথায় আছে আত্মবিশ্বাসী মানুষেরা সবসময় বড় স্বপ্ন দেখে! ঠিক তেমনি এক ছোট্ট ছেলেটিও ছিলেন আত্নবিশ্বাসী; তাইতো ২২ গজে সাহসীকতার পরিচয় দিয়ে বিশ্বকে জানান দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। দিনশেষে উঁচু গলায় বলতে পেরেছেন ‘আমি সফল! বাবা সামনে দাঁড়িয়ে বলতে পেরেছেন বাবা; আমি তোমার স্বপ্ন পূরণ করেছি। বড় ভাইকে জড়িয়ে ধরে আনন্দে মেতেছেন!

ছোট বেলায় বড় ভাইয়ের সাথে মজার সব স্মৃতি লুকিয়ে আছে মৃত্যুঞ্জয়ের। এর মাঝে একটি স্মৃতি হয়তো তুখোড় করে তুলেছিলো মৃত্যুঞ্জয়কে। বানিয়ে দিয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন! সেই স্মৃতিটি ছিলো হতাশার। কেননা ২০০৫ সালে বাংলাদেশ অ-১৯ দলের সবরকম ক্ষমতা ছিলো চ্যাম্পিয়ন হবার। কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠেনি। একদিন গল্পের তালে বলেই দিলেন আমার এই জীবনে হয়তোবা দেশকে চ্যাম্পিয়ন দেখা হবেনা! সেদিন দূর থেকে মৃত্যুঞ্জয় হয়তো সেই গল্পটি শুনে নিয়েছিলো। তাইতো ২০২০ এ এসে বিশ্বজয় করে বড় ভাইকে বলেছিলো বাংলাদেশও পারে!! এইসব গল্প না হয় অন্য একদিন আলোচনা করবো। আজ মৃত্যুঞ্জয়ের ক্যারিয়ারের শুরু এবং পারফরম্যান্স নিয়ে জানার চেষ্টা করি।

২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সাল; মৃত্যুঞ্জয়ের জীবনের সেরা একদিন দিন। কেননা এই দিনে প্রথম বারের মতো লাল-সবুজের অফিসিয়াল জার্সি গায়ে উঠেছিলো তার। অভিষেক ওয়ানডে ম্যাচে ব্যাট হাতে ১২ রানের সাথে বল হাতে ২১ রানে ১ উইকেট শিকার করে জানান দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে কিছু দিতেই এসেছেন তিনি।

পরবর্তী সময়ে সেটার প্রমাণ রেখেছেন মৃত্যুঞ্জয়। অ-১৯ দলের হয়ে ২২ ম্যাচে ১২৪ রানের সাথে বল হাতে শিকার করেছেন ৩৬ উইকেট। এর মাঝে ২০১৯ সালে মাত্র ১২ ম্যাচে ২৪ উইকেট শিকার করে নিজেকে নিয়েছিলেন রেকর্ড পাতায়।

অ-১৯ দলের হয়ে ১ টেস্ট এবং ১ টি টি-২০ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন মৃত্যুঞ্জয়। সাদা পোশাকে ২৬ রানের সাথে ৩ উইকেট এবং টি-২০ ক্রিকেটে ১ টি উইকেট শিকার করেন।

অনূর্ধ্ব -১৯ এ ওয়ানডে ফরম্যাটে ৭ টি দলের বিপক্ষে মাঠে নেমেছেন মৃত্যুঞ্জয়। এবার এই ৭ দেশের বিপক্ষে তার পারফরম্যান্স জানবো:

ইংল্যান্ড: ৫ ম্যাচ – ১৭ রান – ১১ উইকেট।
ভারত: ৫ ম্যাচ – ৭৬ রান – ৯ উইকেট।
নিউজিল্যান্ড: ২ ম্যাচ – ৫ উইকেট।
পাকিস্তান: ১ ম্যাচ – ৪ রান – ১ উইকেট।
স্কটল্যান্ড: ১ ম্যাচ – ১ উইকেট।
শ্রীলঙ্কা: ৭ ম্যাচ – ২৭ রান – ৮ উইকেট।
জিম্বাবুয়ে: ১ ম্যাচ – ১ উইকেট।

বিভিন্ন দেশের মাটিতে মৃত্যুঞ্জয়ের পারফরম্যান্স:
বাংলাদেশ: ৫ ম্যাচ – ৩৫ রান – ৮ উইকেট।
ইংল্যান্ড: ৬ ম্যাচ – ৫৩ রান – ১১ উইকেট।
নিউজিল্যান্ড: ২ ম্যাচ – ৫ উইকেট।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২ ম্যাচ – ২ উইকেট।
শ্রীলঙ্কা: ৭ ম্যাচ – ৩৬ রান – ১০ উইকেট।

অ-১৯ দলের হয়ে ৪ টি মহাদেশে খেলেছেন মৃত্যুঞ্জয়। আর এই চারটি মহাদেশেই ২+ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

সেরা বোলিং ফিগার:
২০১৮ সালের স্মৃতিগুলো হয়তো কখনোই ভুলবেন না মৃত্যুঞ্জয়! কেননা এই বছরে হয় তার অভিষেক। এবং এই বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ৪৬ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন তিনি। আর সেটিই অ-১৯ এ তার সেরা বোলিং ফিগার।

মৃত্যুঞ্জয় মূলত বোলিং অলরাউন্ডার। বাঁহাতি পেস বোলিংয়ের সাথে ব্যাটিং পারেন মোটামুটি। ফিনিশিং পজিশন রয়েছে বেশকিছু ইনিংস, যা দলের জয়ে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। অ-১৯ এ দুই অধিনায়কের নেতৃত্ব খেলেছেন মৃত্যুঞ্জয়!

আকবর আলী: ১৪ ম্যাচ – ৯৫ রান – ২৬ উইকেট।
তৌহিদ হৃদয়: ৮ ম্যাচ – ২৯ রান – ১০ উইকেট।

ব্যাটিংয়ের দিক দিয়ে কিছুটা পিছিয়ে থাকা মৃত্যুঞ্জয় ব্যাট যে চালাতে পারেননা এমন নয়! ব্যাট হাতে রয়েছে ৩৩ রানের ইনিংস। মূলত ফিনিশিং পজিশনে ব্যাটিং করেন তিনি। দলের প্রয়োজনে দ্রুত রান তুলতে পারেন। হিটিং এবিলিটি আছে যা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছেন। মৃত্যুঞ্জয় যেহেতু বোলার তাই তার বোলিংয়ের শক্তি নিয়ে কিছু কথা জানা যাক!

বাঁহাতি এই পোসারের মূল শক্তি কাটার। বাঁহাতি কাটারে ইতিমধ্যেই পরাস্ত করেছেন বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের। মৃত্যুঞ্জয়কে বলা হয় ব্রেকথ্রু ম্যান! কেননা দলের প্রয়োজনে অধিনায়ককে ব্রেকথ্রু এনে দেওয়ার দায়িত্ব ভালোভাবেই পালন করে এসেছেন তিনি। সেই সাথে ইকোনমিক বোলিং করে আটকে দিয়েছেন বিপক্ষের রানের চাকা। এছাড়াও বুদ্ধিদীপ্ত বাউন্সার কিংবা দুর্দান্ত সব ইয়র্কারের গল্প তো রয়েছেই।

আর এইসব গল্পের শুরুতে যাদের অবদান তাদের কথা তো শুরুতেই বলেছি। কিন্তু তাদের ইচ্ছে পূরণ করতে হয়েছে মৃত্যুঞ্জয়কেই। মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ না নিলে হয়তো আজকের গল্পটা অন্য রকম হতে পারতো! ক্রিকেট মাঠে সফলতা কিংবা ব্যর্থতার গল্প রয়েছেই। এখানেও মৃত্যুঞ্জয় রয়েছে বড় একটা জায়গা জুড়ে।

বল হাতে মৃত্যুঞ্জয়ের খুব বেশী দূর্বলতা না থাকলেও ইনজুরি নামক শব্দটি তাকে বারবার পিছিয়ে দিচ্ছে। এই ইনজুরি তাকে পুরো বিশ্বকাপ মাতাতে দেয়নি! অপারেশনের পর দীর্ঘদিনের বিরতি কাটিয়ে মাঠে ফিরলেও আবারো ইনজুরি তাকে পিছিয়ে দিয়েছে। তাইতো বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপ মিস করছেন তিনি। কিন্তু এটাই শেষ নয়; মৃত্যুঞ্জয় রয়েছেন ক্যারিয়ারের শুরুর প্রান্তে! এখনো লম্বা পথ পাড়ি দিতে হবে তাকে; জয় করতে হবে বিশ্ব।

মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী; বাংলাদেশ ক্রিকেটের আগামীর ভবিষ্যৎ পেসার। ৫ ফুট ১০ ইঞ্চির লম্বাদেহী এই পেসার ডেল স্টেইনকে আইডল মেনে এগিয়ে যাচ্ছেন স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে। দিনশেষে নিজেকে সেখানেই নিতে চান মৃত্যুঞ্জয়! যেখানে তার প্রিয় দুই ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং বেন স্টোকস নিজেদের নিয়েছেন। প্রিয় ক্রিকেটারদের মতো মৃত্যুঞ্জয়ও এগিয়ে যাবে বহুদূর। নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে বাবার ইচ্ছে আর বড় ভাইয়ের কষ্ট ভুলিয়ে দিতেই চাইবেন দেশকে বড় কোনো ট্রফি এনে দিয়ে। নিপুন তার বাঁহাতি পেসে বিপক্ষের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের শিকারে পরিণত করে লাল-সবুজের পতাকাটিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরবেন এটাই চাওয়া।

হয়তো মৃত্যুঞ্জয়ের মাধ্যমেই আমরা একজন স্টার্ককে খুঁজে পাবো। সেই দিনগুলোর অপেক্ষায়। শুভ কামনা রইলো আগামীর জন্য।

 

মন্তব্য করুন

এই বিভাগের আরো খবর