স্বপ্নচারণ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট

Mugdha Saha
  • প্রকাশিত সময় : শুক্রবার, ১৯ জুন, ২০২০
  • শেয়ার করুন

  • Facebook

১৬ই ডিসেম্বর, ২০৩১ (রাত ৯ টা)

মিরপুর শেরে বাংলা মাঠ থেকে বেরিয়ে এবার আর টিম বাসে নয়, বাংলাদেশ দল উঠে গেল মিনি ট্রাকটিতে৷ আকবর আলীর হাতে সেই বিশ্বকাপটি। কাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপ। মিরপুর থেকে টেকনিক্যাল হয়ে শ্যামলী দিয়ে ট্রাকটি এগিয়ে চলছে পুরান ঢাকার দিকে। চিরচেনা জ্যামের শহর নিউমার্কেটেও আজ দোকান বসেনি৷ রাস্তায় একটিও গাড়ি নেই৷ শুধু মানুষ আর মানুষ। সবাই চোখে মুখে আনন্দের হাসি৷ ট্রাকটির চারদিক দিয়ে মানুষের মুখের হাসি দেখতে দেখতে এগিয়ে যাচ্ছেন টাইগার বাহিনী ট্রাকটি ঘুরে বেড়াচ্ছে পুরো ঢাকা শহর। উত্তরা, বসুন্ধরা, বনানী গুলশান সর্বত্র আজ লোকের মুখে হাসি৷ বিজয়ের ৬০ তম বছরে পদার্পণের দিনে এ যেন আরেকটি বিজয়। প্রতিপক্ষ ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপ অর্জন বলে কথা।

২০২৭ সাল…..
২০২৭ বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিভাগ। স্বেচ্ছায় অবসরে যান বিসিবির অধিকাংশ কর্মকর্তা। ছাটাই করা হয় সকল বিদেশী কোচ। দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশের অতীত রত্নদের হাতে।
বিসিবির সভাপতি ও নির্বাচকের দায়িত্ব নেন দুই বন্ধু তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। টিম ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পান আরেক বন্ধু মুশফিকুর রহিম। প্রধান কোচ হিসেবে আসেন মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পান যথাক্রমে শাহরিয়ার নাফীস, আব্দুর রাজ্জাক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

মাশরাফি ছেলেটার বয়স ৪৫+ হলেও ঘাড়তেরামি কমেনি। বেড়েছে নাফীস, রাজ্জাক ও রিয়াদের ধৈর্য্যও। ২০৩১ বিশ্বকাপের জন্য দল তৈরি করে ফেলে ২০২৯ সালেই৷ এদের নিয়েই শুরু হয় ‘মিশন ২০৩১’।

২২ অক্টোবর, ২০৩১
দেখতে দেখতে চলে এলো ২০৩১ সাল। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন যেকোনো দলের জন্য ভয়ের কারণ। ১৬ দলের বিশ্বকাপে গ্রুপ সি তে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান।

১৬ই ডিসেম্বর, ২০৩১ (বিকাল ৫ টা)
গ্রুপ পর্ব সহ কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালের সব ম্যাচ জিতে আজ ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্র‍য়োজন আর ৬টি রান৷ হাতে আছে ১ বল। বল করবেন ভারতের সেরা বোলার তিয়াগী। ব্যাট হাতে প্রস্তুত আকবর আলী। বোলার বল করলেন, গুড লেন্থের বল, সোজা এগিয়ে এসে সজোরে খেললেন আকবর। ধারাভাষ্যকার ইমরুল কায়েস বলতে থাকলেন,

“Comes the Hero, Down the wicket and hit it too hard. Ball is floating in the aiiiiir, and its a Siiix. Bangladesh have done it, Tigers done it. Won the world cup Trophy for the first and the same man who brought it 12 years ago in under-19, Akbar the great Ali….”

সেদিন ম্যান অফ দ্য টুর্ণামেন্ট সাইফুদ্দিনকে নিয়ে মাতামাতি হয়নি। হয়নি শেষ বলে ৬ মেরে ম্যাচ জেতানো আকবর আলীকে নিয়েও। ৭২৮ করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তানজিদ তামিমকে নিয়ে কথা হয়নি। হয়নি সর্বোচ্চ ২৯ উইকেট শিকারি তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়েও কোন কথা। সেদিন ইমন, জয়, মৃত্যুঞ্জয়, শরিফুল, আফিফ, আকবরদের ঘাড়ে জায়গা করে নেয় সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, মাশরাফি, নাফীস ও রাজ্জাকরা। ওরাই তো নায়ক। পর্দার আড়ালের হিরো যাকে বলা হয়।

ওহ হ্যা, বলাই তো হয়নি। আতাহার আলী খানের শরীর ভাল না থাকায় তারা ঘরে খেলা দেখার সময় আকবর যখন ম্যাচ ফিনিশ করে তখন নিজেই নিজেকে বলে ওঠে, “এই দিনটার জন্যেই আমরা কমেন্ট্রি বক্সে বাংলাদেশকে নিয়ে মাতামাতি করতাম।” আর বিছানায় শুয়ে শুয়ে রকিবুল হাসান তার ছেলেকে বলে, “দেখ বাবা, এই দিনটা দেখব বলেই আমরা সেদিন যুদ্ধ করেছিলাম।”
ওদিকে মাথার উপর থেকে টাইগারদের জয় দেখে হাসছেন আর হাততালি দিচ্ছেন শহীদ জুয়েল আর শহীদ মুশতাক।

[বিঃদ্রঃ লিখাটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। এর সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই।]

 

,

মন্তব্য করুন

এই বিভাগের আরো খবর