রেকর্ড বহুল এক টেস্ট সিরিজ

Md Riyad Hasan Riyaz
  • প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০২০
  • শেয়ার করুন

  • Facebook

১১৭ দিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ ম্যাচ টেস্ট সিরিজ দিয়ে মাঠে ফিরেছিল ক্রিকেট। আর এই সিরিজটি ইতিমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। সময়ের হিসেবে এতদিন ক্রিকেট বন্ধ ছিলনা আর কখনোই। সেই সাথে দর্শক বিহীন একটা টেস্ট সিরিজও কখনো দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব।

করোনা পরবর্তী সময়ে খেলতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিয়েছে ইংলিশরা। প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ৩২ বছর পর ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে সেই রেকর্ডটি অপূর্ণ থাকলেও ব্যক্তিগত এবং দলগত বিভিন্ন রেকর্ড হয়েছে এই সিরিজে। চলুন জেনে নিই সেইসব রেকর্ড গুলো।

▪দ্রুততম ৪ হাজার টেস্ট রান এবং ১৫০ উইকেট:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার জোসেফ কে আউট করে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন ডানহাতি মিডিয়াম পেসার বেন স্টোকস। সেই সাথে টেস্ট ক্রিকেটে ৪০০০ রান এবং ১৫০ উইকেট পূর্ণ করে গ্যারি সোবার্স, ইয়ান বোথাম, কপিল দেব, জ্যাক ক্যালিস ও ড্যানিয়েল ভেট্টোরির পর ষষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন বেন স্টোকস। গ্যারি সোবার্সের পর ২য় দ্রুততম অলরাউন্ডার হিসেবে ৬৪ ম্যাচে এই রেকর্ড স্পর্শ করেন স্টোকস। উল্লেখ্য, গ্যারি সোবার্স ৬৩ ম্যাচে ৪০০০ রান ও ১৫০ উইকেট পূর্ণ করেছিলেন।

▪অধিনায়ক হিসেবে হোল্ডারের ১০০০+ রান ও ১০০+ উইকেট:
টেস্ট ইতিহাসের ৫ম অধিনায়ক হিসেবে ১০০০+ রান এবং ১০০+ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করছেন হোল্ডার। এছাড়াও ওয়েস্ট ইন্ডিজোর টেস্ট ইতিহাসে ৩য় অলরাউন্ডার হিসেবে ২০০০+ রান ও ১০০+ উইকেটের মালিক হয়েছেন হোল্ডার। পাশাপাশি স্যার গ্যারি সোবার্সের পর অধিনায়ক হিসেবে ১০০ উইকেট শিকার করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এই অধিনায়ক।

▪১৪৩ বছরের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে হোল্ডারের অন্যরকম এক রেকর্ড:
১৮৭৭ সালে মেলবোর্নে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া মধ্যকার টেস্ট ম্যাচ দিয়ে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছিল ক্রিকেট। ১৪৩ বছরের ইতিহাসে যা কখনো ঘটেনি সেটিই ঘটেছে এই সিরিজে। টেস্ট সিরিজে প্রথম ম্যাচের প্রথম দুই ইনিংসেই ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকসকে আউট করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অধিনায়ক। আর টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথম বার এক দলের অধিনায়ক আরেক দলের অধিনায়ককে টেস্টের দুই ইনিংসে আউট করার নজির গড়েছে।জেসন টেস্টের প্রথম ইনিংসে বেন স্টোকস কে ৪৩ রানে এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ রানে আউট করেছিল।

▪জেসন হোল্ডারের এক ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগার:
১ম টেস্টে ১ম ইনিংস ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৫ রানে ৬ উইকেট শিকার করেছিল জেসন হোল্ডার। যা টেস্টে জেসন হোল্ডারের সেরা বোলিং ফিগার। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৮ সালে হোল্ডারের বোলিং ফিগার ছিল ৬/৫৯।

▪ক্রিস ওকসের ১০০, রোচের ২০০ ও ব্রডের ৫০০ উইকেট:
এই সিরিজ শুরু হওয়ার আগে উইকেটের মাইলফলক স্পর্শের অপেক্ষায় ছিল রোচ, ব্রড, এন্ডারসন এবং ওকস।

অপেক্ষার পর খেলতে নেমে ২৬ বছর পর ৯ম ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলার হিসেব রোচ স্পর্শ করছেন ২০০ উইকেটের মাইলফলক। ১৯৯৪ সালে স্যার কার্টলি অ্যামব্রসের পর রোচ ছাড়া আর কোন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলার এ কীর্তি গড়তে পারেনি।

ক্রিস ওকস ৪৮ তম ইংলিশ খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ তম টেস্ট উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন।

এছাড়াও টেস্ট ক্রিকেটের ৭ম বোলার হিসেবে ৫০০ উইকেট এর এলিট ক্লাবে ঢুকলেন ব্রড। তবে ৬০০ উইকেটের অপেক্ষায় আছেন এন্ডারসন।

▪কুকের পর ১ হাজার রান:
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক দ্যা গ্রেট ওপেনার আলিস্টার কুকের পর এই সিরিজে টেস্ট ক্রিকেটে ১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করছিলেন ইংলিশ ওপেনার ররি বার্নস। কুকের পর বলতে ২০০৭ সালের পর আর কোনো ইংরেজ ওপেনার টেস্টে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেনি। জেনে রাখা ভালো, ২০০৭ সালের পর ২৮ জন ওপেনার টেস্টে ইংল্যান্ডের পক্ষে ওপেনিং করলেও কুক এবং বানার্স ছাড়া কেউ ১০০০ রান করতে পারেনি।

▪ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ এলবিডব্লিউ উইকেট শিকারী বোলার:
ইংল্যান্ড পেসার জেমস এন্ডারসন কে পিছনে ফেলে টেস্ট ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ এলবিডব্লু উইকেট শিকারী বোলার এখন স্টুয়ার্ট ব্রড।

▪দ্রুততম ফিফটি:
২য় টেস্টের ১ম ইনিংসে বেন স্টোকস ফিফটি করেছিলেন ১১৯ বলে। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনার হিসেবে নেমে মাত্র ৩৬ বলে করলেন ফিফটি। সেই সাথে ইংলিশ ওপেনার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়ছেন স্টোকস।

তবে ৩য় টেস্টে এ্যালন লাম্প ও ফ্লিনটফের সমান ৩৩ বল খেলে ইংল্যান্ডের ৫ম দ্রুততম ফিফটি রেকর্ড গড়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রড।

▪ধীরগতির সেঞ্চুরি ও সবচেয়ে বেশিবলের জুটি:
ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজের ২য় টেস্ট ৩১২ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন সিবলি। যা ইংল্যান্ডের মাটিতে ৫ম কোন ব্যাটসম্যানের ধীরগতির সেঞ্চুরি। এছাড়াও বেন স্টোকস এবং সিবলি মিলে ২য় টেস্টে ২৬০ রানের জুটি গড়েছিলেন। তবে ২৬০ করতে এই জুটি মোকাবেলা করছিলেন ৫৬৮ বল। যদি আর মাত্র ৭ বল তারা মোকাবেলা করতেন তাহলে ইংল্যান্ডের হয়ে সবার উপরে থাকা স্টুয়ার্ট ব্রড আর জোনাথন ট্রটয়ের ৫৭৪ বলের রেকর্ড ভেঙে দিতেন। অবশ্য ৫৭৪ বল খেলে এই জুটি রান ছিল ৩৩২ রান

▪সবচেয়ে বেশি রানে ইংল্যান্ডের মাটিতে পরাজয়:
সিরিজে ৩য় টেস্টে ইংল্যান্ডের কাছে ২৬৯ রানে হেরে সিরিজ জয় থেকে বঞ্চিত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ টেস্ট ২৬৯ রানের হার ছিল ইংল্যান্ডের মাটিতে ইংল্যান্ডের কাছে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় হার। ১৬ বছর আগে ২৫৬ রানের হারকে পিছনে ফেলেছে এটি।

 

মন্তব্য করুন

এই বিভাগের আরো খবর