প্রমীলা এশিয়া কাপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হারলো বাংলাদেশ। ডিএলএস মেথড এর জটিল হিসাবে বোলিংয়ে দারুণ পারফরম্যান্স দেখানো বাংলাদেশ হারে মাত্র ৩ রানে। পাঁচ ম্যাচে তৃতীয় হার দেখা বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার হিসেব হয়ে গেলো কঠিন!
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিং নেয় বাংলাদেশ। নাহিদা, লতা ও তৃষ্ণাকে বিশ্রাম দিয়ে সোহেলি, মোস্তারি ও জাহানারাকে নিয়ে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ওভারে দারুণ এক ইনসুইংগারে লঙ্কান অধিনায়ক আতাপাত্থুর বেল উড়িয়ে দেন জাহানারা আলম। মেঘলা আবহাওয়ায় এই উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চতুর্থ বাংলাদেশী নারী হিসেবে শত উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন জাহানারা। এরপর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লঙ্কানদের রান সংগ্রহ ধীরগতির রাখে বাংলাদেশ। হর্ষিতা মাধাভি ১৮ রান করে আউট হলে পরপর দুটো উইকেটের পতন ঘটে। রুমানা বোলিংয়ে এসেই উইকেট তুলে নেন। দ্বিতীয় উইকেটে ২৫ ও চতুর্থ উইকেটে ২৯ রান আসে শ্রীলঙ্কার। দলীয় তেরোতম ওভারে অর্ধশত পার করে তারা। আরও একবার ধারাবাহিকতার ছাপ রাখেন সানজিদা মেঘলা, ৪-০-১৩-১ ফিগার নিয়ে বোলিং কোটা শেষ করেন তিনি। একাদশে ফেরা সোবহানা মোস্তারি দারুণ দুটো ক্যাচ তালুবন্দী করেন। ইনিংসের এগারো বল বাকী থাকতে হানা দেয় বৃষ্টি। ভারী বৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হলে শেষদিকে নিলাক্ষি ডি সিলভার ২৮* রানে ভর করে ৮৩-৫ এ শেষ হয় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। প্রায় দেড়ঘন্টায় কয়েক দফায় বৃষ্টির পর ডিএলএল মেথডেতে বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৭ ওভারে ৪১ রানের।
ধীরগতির ও নিচু বাউন্সের পিচে ৪২ বলে ৪১ রানের লক্ষ্যমাত্রা একটু কঠিনই ছিল বটে। দ্বিতীয় ওভারে স্ট্যাম্পড হয়ে ফিরেন মুর্শিদা খাতুন। একই ওভারে চার মেরে শেষ করেন ক্যাপ্টেন জ্যোতি। পরবর্তী ওভারে স্ট্যাম্পড হয়ে সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার পিংকি৷ ৩ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ১৫ রান। দৌঁড়ে এক/দুই রান নিয়ে লক্ষ্যমাত্রার কাছে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ দল। শেষ ২ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৪ রানের। ৮ রান করে ফিরে যান রুমানা। এক বল পর ১২ রান করে আউট হন ক্যাপ্টেন জ্যোতি। শেষ দুই বলে আরও দুই উইকেট যায়। রানাভিরার দ্বিতীয় ওভারে রান আউট সহ চারটি উইকেটের পতন ঘটে! শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১১ রানের। ৭ ওভারের ম্যাচে সাত উইকেট হারানো বাংলাদেশ ম্যাচ হারে ৩ রানে!
ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন মেথড এর মারপ্যাঁচের পরও বাংলাদেশের হাতে ছিল ম্যাচটি। তবে বাংলাদেশের বাজে ব্যাটিং প্রদর্শনী ম্যাচ হারের জন্য দায়ী। যেখানে সিঙ্গেলস-ডাবল নিয়ে ম্যাচ জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছিল রুমানা-জ্যোতি, সেখানে পেনাল্টিমেট ওভারে অহেতুক চাপ নিয়ে মেরে খেলতে গিয়ে ম্যাচ হেরেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মেয়েরা।
ডিএলএস এর মারপ্যাঁচে পড়ে বাংলাদেশের জন্য কঠিন হয়ে গেলো সেমিফাইনালে খেলা। আগামীকাল আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচ ডু অর ডাই ম্যাচে স্বাগতিকদের হবে বড় পরীক্ষা।
শ্রীলঙ্কা ৮৩-৫(১৮.১)
নিলক্ষী ২৮*, হর্ষিতা ১৮, কাভিশা ১১;
রুমানা ১৪/২, মেঘলা ১৩/১, ফাহিমা ১৬/১, জাহানারা ১৭/১।
বাংলাদেশ ৩৭-৭(৭)
জ্যোতি ১২, রুমানা ৮; রানাভিরা ৭/৪ |