ঢাল নেই, তলোয়ার নেই তাতে কি! যুদ্ধের মাঠে যারা বুক চিতিয়ে প্রাণপন লড়াই করে যায় তারাই তো সত্যিকারের বীর যোদ্ধা। সিকান্দার রাজা, ব্লেসিং মুজারাবানি, ইভান্সরা যেনো সেই সত্যিকারের বীর যোদ্ধা। নামে-ভারে, ঐশ্বর্যে পিছিয়ে থেকেও পাকিস্তান কে যেভাবে হারিয়ে দিলো জিম্বাবুয়ে এ যেনো নতুন রূপকথার জন্ম হলো। জিম্বাবুয়ের আগামী দিনের তারকারা গর্ব করে বলতে পারবে আমাদের একজন সিকান্দার রাজা ছিলো।
বিশ্বকাপ সুপার টুয়েলভে আজ ছিলে খেলার মেলা, সারাদিনে অনুষ্ঠিত হওয়া ৩টি ম্যাচের তৃতীয় ম্যাচে যেনো বিশ্বকাপ পেলো আলাদা রঙ। শেষ ওভারের নাটকীয়তায় জিম্বাবুয়ের কাছে ১ রানে হেরে সেমির পথে হোঁচট খেলো পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার পার্থ স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভাইন। পাকিস্তানের সমৃদ্ধ পেস বোলারদের সমীহ করার বদলে আক্রমণাত্বক ভাবে খেলতে শুরু করে ওপেনার মাদেভেরে ও আরভাইন। দলীয় ৪২ রানে হারিসের বলে ওয়াসিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে আরভাইন ব্যক্তিগত ১৯ রানে ফিরে গেলে জিম্বাবুয়ে শিবিরে প্রথম উইকেটের পতন হয়। স্কোর বোর্ডে মাত্র ১ রান যোগ করেই ফিরে যান আরেক ওপেনার মাধেভেরে (১৭)।
এরপর পাকিস্তানি বোলারদের সামনে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে জিম্বাবুয়ের। মিডল অর্ডারে মিল্টন সোম্বা ৮, সিকান্দার রাজা ৯ ও লোয়ার অর্ডারে রায়ান বার্ল ১০ রানে ফিরে গেলে হাল ধরতে পারেন নি কেউ। শন উইলিয়ামসের ইনিংস সর্বোচ্চ ৩১, ও শেষ দিকে ব্রান্ড ইভান্সের ১৯ রানের সুবাধে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৩০ রানের সংগ্রহ পায় জিম্বাবুয়ে।
১৩০ রানের মাঝারি সংগ্রহে পাকিস্তানের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের বিরুদ্ধে জয় লাভ করতে হলে তো অসাধ্য কেই সাধন করতে হতো জিম্বাবুয়েকে। প্রতিপক্ষ বোলারদের যেখানে নাকানি চুবানি খাইয়ে ম্যাচ জিতে নেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানরা তারাই যেনো আজ দেখলেন মুদ্রার উল্টো পিঠ। পাওয়ার প্লে তেই মোহাম্মদ রিজওয়ান (১৪) ও বাবর আজম (৪) এর উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা পাকিস্তান ধুকেছে পুরো ম্যাচ জুড়েই। সান মাসুদ ও সাদাব খান জয়ের স্বপ্ন দেখালেও সেই পথে কাটা হয়ে দাঁড়ান জিম্বাবুয়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা। সান মাসুদকে ৪৪ রানে ও সাদাব খানকে ১৭ রানে ফিরিয়ে সৃষ্টি করেছেন জয়ের পথ।
সিকান্দার রাজাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে শেষ ওভারে ১১ রানের সমীকরণে নিয়ে গেছেন মুজারাবানি ও ব্রান্ড ইভান্স। শেষ ওভারে মোহাম্মদ নওয়াজ ও মোহাম্মদ ওয়াসিমের সামনে ১১ রান ডুিফেন্ড করার অসাধ্য টাই সাধন করেছেন ব্রান্ড ইভান্স। প্রথম ৩ বলে ৮ রান দিয়ে যে স্বপ্নের শেষ হতে চলেছিলো ৩ বলে ৩ রানের সমীকরণ থেকে অধিনায়কের আস্তার প্রতিদান স্বরূপ ১ রানের জয় তুলে দিয়ে লিখেছেন নতুন ইতিহাস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে ১৩০/৮ ( ২০ ওভার)
শন উইলিমাস ৩১, ব্রাড ইভান্স ১৯, ক্রেইগ আরভাইন ১৯।
মোহাম্মদ ওয়াসিম ২৪/৪, সাদাব খান ২৩/৩, হারিস রউফ ১২/১
পাকিস্তান ১২৯/৮ ( ২০ ওভার)
সান মাসুদ ৪৪, মোহাম্মদ নওয়াজ ২২, মোহাম্মদ রিজওয়ান ১৪
সিকান্দার রাজা ২৫/৩, ব্রাড ইভান্স ২৫/২, ব্লেসিং মুজারাবানি ১৮/১
ফলাফল: জিম্বাবুয়ে ১ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্যা ম্যাচ: সিকান্দার রাজা।