ভারতীয় ইনিংসের ১৯.৫ তম বলে মিরাজের অফ স্পিনে ডিফেন্স করতে গিয়ে শর্ট লেগ অঞ্চলে মুমিনুলের হাতে দরা পড়েন বিরাট কোহলি। এতেই উদযাপনে মাতেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। তবে উদযাপনটা পছন্দ হয় নি কোহলির, ফলে কিছু একটা বলে এগিয়ে আসছিলেন ফিল্ডারদের দিকে। মাঠে থাকা দুই আম্পায়ার ও বাংলাদেশ অধিনয়াক সাকিব এসে মাঠের বাহিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান বিরাটকে।
হ্যা, ভারতের বিপক্ষে মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট জমে উঠেছে তৃতীয় দিনে। পুঁজি অল্প হলেও জিততে হলে ভারতীয় ব্যাটারদের সামনে যে বড়সর পরীক্ষা অপেক্ষা করছে ৫ম দিনের সকালে তা বলাই যায়। শেষ বিকালে কোহলিকে বোকা বানানো ডেলিভারিতে যেনো সেই ইঙ্গিতই দিয়ে রাখলেন মিরাজ।
তৃতীয় দিনের সকালে ৭ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ৮০ রানে পিছিয়ে থাকা দিন শুরু করা বাংলাদেশকে শুরুতেই ভড়কে দেন রবিচন্দ্র অশ্বীন। শান্তকে ফিরিয়ে সূচনা করেন উইকেট যাত্রার। শান্তর বিদায়ের পর আগের দিনে দুর্দান্ত খেলা মুমিনুলও ফিরেছেন মাত্র ১৩ রানের ব্যবধানে৷ একপাশে দাঁড়িয়ে জাকির খুঁজে পাচ্ছিলেন না সঙ্গীর দেখা, যাকে নিয়ে পাড়ি দিবেন সকালটা। অধিনয়াক সাকিব আর সিনিয়র মুশফিকে আরো একবার আশাহত হতে হলো সমর্থকদের।
টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় খেই হারানো ব্যাটিং লাইনআপের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন জাকির-লিটন। তবে সেই জুটিও স্থায়ী হলোনা দীর্ঘক্ষণ। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক ছোঁয়া জাকির ধরে রাখতে পারলেন না উইকেট। ফলে ৬৯ বলে ৩২ রানেই থামে লিটন-জাকির পার্টনারশিপ।
জাকিরের বিদায়ের পর লিটন দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন সোহানকে নিয়ে, ততক্ষণে ০ রানে সাজঘরে মিরাজ। ২৯ বলে ৩১ রান করে বিদায় নেন সোহান। অপরদিকে লিটন তুলেন নেন সিরিজের প্রথম অর্ধশতক। তবে ৫০ এর ঘরে পৌঁছাতে বিরাট কোহলির কাছে ৬ বার জীবন পেয়েছেন লিটন।
ব্যক্তিগত ৭৩ ও দলীয় ২১৯ রানে বিদায় নেন লিটন। বাংলাদেশের লিড তখন মাত্র ১৩২ রান। লিটন আউট হওয়ার আগে তাসকিনের সাথে গড়েন ৫০ রানের পার্টনারশিপ। লিটন আউট হওয়ার পর বড় লিডের স্বপ্ন শেষ হলেও লড়াই চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাসকিন।
তবে শেষ পর্যন্ত ২৩১ রানে, ১৪৪ রানের লিড নিয়ে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
শেষ বিকালে ২৩ ওভার ব্যাটিং করার সুযোগ পায় ভারত। ৪ উইকেট নিয়ে বিকালটা নিজেদের মতো সাজিয়ে রাখলো বাংলাদেশের স্পিনাররা। বিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পুজারা, সুবমান গিল ও লোকেশ রাহুলের উইকেট নিয়ে চতুর্থ দিনে একটু এগিয়ে থেকেই শুরু করবে বাংলাদেশ।
সময় গড়ানোর সাথে সাথে ভয়ংকর হয়ে উঠে মিরপুরের পিচ। ইতোমধ্যেই ৩ দিনে ৩৪ উইকেট যেনো সেই কথাটা মনে করিয়ে দিলো আরেকবার। পিচে আনইবেন বাউন্সের পাশাপাশি, কোনো বল স্পিন করছে, কোনোটা করছে না। ফুট মার্কে পড়লে কখনও কখনও শার্প টার্ন করছে। তাই চতুর্থ দিনের সকালটা দু দলের জন্যই ভাইটাল হতে যাচ্ছে।
জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ৬ উইকেট, ভারতের প্রয়োজন ১০০ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২২৭
ভারত ১ম ইনিংস: ৩১৪
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২৩১/১০ (৭০.২ ওভার)
শান্ত ৫, জাকির ৫১, মুমিনুল ৫, সাকিব ১৩, মুশফিক ৯, লিটন ৭৩, মিরাজ ০, সোহান ৩১, তাসকিন ৩১*, তাইজুল ১, খালেদ ৪
আকসার ৬৮/৩, সিরাজ ৪১/২, অশ্বিন ৬৬/২
বাংলাদেশের লিড ১৪৪ রান।
ভারত দ্বিতীয় ইনিংস ৪৫/৪(২৩.০ ওভার)
গিল ৭, রাহুল ২, পূজারা ৬, কোহলি ১, প্যাটেল ২৬, উনাদকাট ৩
মিরাজ ১২/৩, সাকিব ২১/১।