বিপিএলে সিলেটের নাম আসলেই চোখে ভাসে পয়েন্ট টেবিলের তলানির দিকে থাকা একটা দল। সর্বশেষ তিন আসরে তিনটি ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির অধীনে খেলা সিলেট এবার গড়েছে শক্তিশালী দল। বিপিএলের সবচেয়ে সফল অধিনয়াক তো বটেই রঙিন পোশাকে বাংলাদেশের সেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার পাশাপাশি দলে ভিড়িয়েছে দেশী বিদেশি এক ঝাঁক তারকা ক্রিকেটারদের। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে আটঘাট বেধে মাঠে নামা সিলেটের মধ্যে ইতোমধ্যেই দেখা মিলেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচ জয়ে ইঙ্গিত নতুন কিছুর ইঙ্গিত দিয়ে রাখলো সিলেট স্টাইকার্স।
বিপিএলে টানা দুই দিন ম্যাচ থাকার পর গতকাল বিরতি দিয়ে আজ আবার মাঠে ফিরেছে ব্যাটে বলের লড়াই। দিনের প্রথম ম্যাচ সিলেট স্টাইকার্সের মুখোমুখি হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। টসে জিতে কুমিল্লাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান সিলেট কাপ্তান মাশরাফি। কুমিল্লার ওপেনিংয়ে ব্যর্থ লিটন দাস ফিরেছেন ম্যাচের প্রথম ওভারেই। দলীয় ৯ ও ব্যক্তিগত ৮ রানেই কাটা পড়েন থিসারা পেরেরার বলে। ডেভিড মালান ও সৈকত আলীর ব্যাটিংয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করলেও ১২ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলে ফিরেন সৈকত আলী। মাত্র ৯ রানের ব্যবধানে অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও ফিরেছেন সাজঘরে।
মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ে নেমে শক্তহাতে দলের হাল ধরেন জাকের আলী অনিক। ভেডিভ মালানকে সাথে নিয়ে গড়েন ৫৩ রানের পার্টনারশিপ। ৩৭ রান করে ডেভিড মালান ফিরে গেলে কুমিল্লাকে একাই টানেন জাকের। ৪৩ বলে ৩ ছয় ও ২ ছয়ে তুলে নেন এবারের আসরের প্রথম অর্ধশতক। মোসাদ্দেক, নাবীরা দুই অঙ্কের কোটা ছুঁতে ব্যর্থ হলে কুমিল্লার ইনিংস থামে ১৪৯ রানে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে সিলেটের ওপেনিংয়ে ব্যর্থ মোহাম্মদ হারিস। আগের দুই ম্যাচেই ৪০ পেরুনো শান্ত আজ থেমেছেন ১৯ রানে। ওপেনাররা ব্যর্থ হলেও আবারো দৃশ্যপটে গত ম্যাচের জয়ের নায়ক তৌহিদ হৃদয় ও জাকির হাসান। জাকির হাসান অবশ্য ২০ রানের বেশি করতে পারেন নি, তবে এ ম্যাচেও দেখিয়েছেন তার হিটিং পাওয়ার। অন্যদিকে তৌহিদ হৃদয় খেলেছেন দুর্দান্ত সব পাওয়ার শট। অন্যান্য বারের তুলনায় স্পষ্ট উন্নতির চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী এ ব্যাটারের মাঝে। দেখা মিলেছে দক্ষ পাওয়ার হিটিংয়ের এবিলিটি, পাশাপাশি শট লিমিটেশনের দুর্বলতা কমে গিয়ে যেনো দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্য ফুটে উঠেছে।
দলীয় ১২৭ রানে টানা দ্বিতীয় অর্ধশতক করে ৫৬ রানে তৌহিদ ফিরলে বাকি পথটুকু নিরাপদে সামলে নেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। ২৮ রানে অপরাজিত থেকে আকবর আলীকে সাথে করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন মুশফিক। ফলে তৃতীয় ম্যাচে ৫ উইকেটের জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে এখন মাশরাফির দল।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৪৯/৬(২০ ওভার)
লিটন ৮, মালান ৩৭, সৈকত ২০, ইমরুল ২, জাকের ৫৭, মোসাদ্দেক ৫, নবি ৮, আবু হায়দার ৭
থিসারা ২৬/২, আমির ২২/২, মাশরাফি ৩২/১।
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১৫০/৫(১৭.৪ ওভার)
শান্ত ১৯, হারিস ৯, হৃদয় ৫৬, জাকির ২০, মুশফিক ২৮, থিসারা ৮, আকবর ৬
নাবী ২৮-২, কুশদিল শাহ ২৯/২, আবু হায়দার ২৯/১।
টানা দ্বিতীয়বার ম্যান অব দ্যা ম্যাচ তৌহিদ হৃদয়।