গতকালকের ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমেই ব্যাট টু ব্যাক চারে ঝড়ো আভাস দিচ্ছিলেন সাকিব, পরক্ষণেই মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ ধাঁধানো ডেলিভারিতে সাজঘরে ফিরেন বরিশালের অধিনায়ক। তবে আজকের ম্যাচে আর ভুল করেন নি মি.অলরাউন্ডার। সাগরিকায় চওড়া হয়ে হেসেছে তার ব্যাট। কুমিল্লার বোলারদের বারবার সীমানা করেছেন দুর্দান্ত সব শটে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়েন টানা তৃতীয় ম্যাচ।
চট্টগ্রামের জহুর আহম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে বরিশালের মুখোমুখি হয় কুমিল্লা। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে আসা বরিশালের ওপেনার মিরাজ ফিরে যান দলীয় ২৬ রানে। মিরাজ ফিরলেও এনামুল ও সিলভা মিলে পাওয়ার প্লেতে বরিশালকে এদিনও ৫০ এর কোটায় নিয়ে যান। তবে দলীয় ৫০ ই কাটা পড়েন সিলভা ( ব্যক্তিগত সংগ্রহ ২১)। সিলভার পর এনামুল ফিরে গেলে পরের গল্পটা শুধুই সাকিবের।
আফগান ব্যাটার ইব্রাহিম জাদরানকে সাথে নিয়ে ৫০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন বরিশাল অধিনায়ক। ইব্রাহিম জাদরান ২৭ করে আউট হলেও সাকিব ছিলেন বিধ্বংসী রূপে। চলতি বিপিএলের ২য় অর্ধশতক ও ক্যারিয়ারের ২৮ তম ফিফটির দেখা পেয়েছেন মাত্র ৩১ বলে। শেষ পর্যন্ত সাকিব অপরাজিত থাকেন ৪৫ বলে ৮১ রানের চোখ জুড়ানো ইনিংস খেলে। আজকে ইনিংসটি বিপিএলে তার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস, সর্বোচ্চ ৮৬ রান করেন খুলনা রয়েল বেঙ্গলের হয়ে ২০১২ সালে।
সাকিবের ৮ চার ও ৪ ছয়ের ৮১ রানের ইনিংসের উপর ভর করে বরিশাল পায় ১৭৭ রানের সংগ্রহ।
১৭৮ রানের টার্গেটে খেলতে নামা কুমিল্লার ম্যাচ শুরু করেন পাকিস্তানের তারকা ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। গতকাল রাতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ করে আজ বাংলাদেশে পৌঁছেন রিজওয়ান। ম্যাচ শুরুর ঘন্টাখানেক আগে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম পৌঁছেই কুমিল্লার হয়ে মাঠে নামেন রিজওয়ান। রিজওয়ান-লিটনের ওপেনিং জুটি শুরুতেই চোখ রাঙাচ্ছিলো বরিশালকে। মাত্র ৫ ওভারেই ৪০ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা, তবে দলীয় ৪২ রানে ব্যক্তিগত ১৮ রানে বরিশালের প্রথম শিকারে পরিণত হন রিজওয়ান। এরপর লিটন-ইমরুল রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা চালিয়ে যান। সাবলীল খেলতে থাকা লিটনকে এক অসাধারণ ডিরেক্ট থ্রো তে রান আউটের শিকার বানান করিম জানাত। লিটন ফিরে যান ২৬ বলে ৩২ রান করে।
লিটনের বিদায়ের পর ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন ইমরুল কায়েস, তবে তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি চ্যাডউইক ওয়াল্টন। ১৫ বলে ২৮ রান করে ফিরে যান ইমরুলও। আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে জাকের আলীও ফিরে যান ০ রানে। মাত্র ১৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া কুমিল্লাকে নতুন করে জয়ের স্বপ্ন দেখায় কুশদিল শাহ ও মোসাদ্দেক হোসেন। তাদের ৩০ বলে ৫৪ রানের পার্টনারশিপে নতুন করে আশায় বুক বাঁধে কুমিল্লা। তবে ১৯ বলে ২৭ করে মোসাদ্দেক আউট হলে আবারো ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ভিক্টোরিয়ানরা। শেষ পর্যন্ত ১২ রান দূরে থাকতে ১৬৫ রানে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষ হয় কুমিল্লার। কুশদিল শাহ অপরাজিত থাকেন ৪৩* রানে।
এ নিয়ে টানা ৩ জয়ে ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ২ নাম্বারে অবস্থান করছে সাকিবের বরিশাল। সমান ৩ হারে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে কুমিল্লা। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত জয়হীন কুমিল্লা।
ম্যাচ সেরা সাকিব আল হাসান