আহহ অবিশ্বাস! কি অসাধারণ ব্যাটিং শৈলী! এ যেনো শিল্পীর তুলিতে আঁকা ক্রিকেটের অনন্য মোনালিসা! হ্যা, সাগরিকায় আজ ইফতেখার-সাকিব মিলে যে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং শৈলী প্রদর্শন করেছেন কোন উপমাতেই তা বর্ণনা করা সম্ভব না। চার-ছয়ের বন্যায় যে ঝড় আজ সাগরিকায় খেলে গেছে সাকিব-ইফতেখারের ব্যাটিংয়ে ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য এ যেনো পুরো পয়সা উসুল ম্যাচ।
চট্টগ্রামের জহুর আহম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের মুখোমুখি হয় সাকিবের ফরচুন বরিশাল। উড়তে থাকা বরিশালকে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান রংপুর অধিনায়ক শোয়েব মালিক। ওপেনিংয়ে স্ট্রাগল করা মিরাজের বিপরীতে এটাকিং খেলার চেষ্টা করছিলেন এনামুল বিজয়। তবে হারিস রউফের গতির কাছে পরাস্ত বিজয় ফিরেছেন মাত্র ১৩ রানে। চট্টগ্রামের উইকেটে গতির ঝড় তোলা হারিস প্রথম ওভারেই ২ উইকেট নিয়ে চাপে পেলে দেয় বরিশালকে। বিজয়, জাদরানের বিদায়ের পর মিরাজ, মাহমুদউল্লাহও ফিরেছেন মাত্র ৪৬ রানে। অপরপ্রান্তে নির্বাক সাকিব দেখছিলেন সব হতাশ হয়ে।
চলতি আসরের প্রথমবারের মতো ৪৬ রানে টপঅর্ডারের ৪ উইকেট হারানো দলটা আর কতই বা করতে পারবে..? সাকিব কি পারবে আরো একবার দায়িত্ব নিয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে..? মাঘের কনকনে শীতে সাগর পাড়ের মানুষ যখন এই চিন্তায় ঘামছে ঠিক তখনই বরিশাল অধিনায়ক আর ইফতেখারের রৌদ্র মূর্তি। এবার সাগরিকা ভিজলো চার/ছয়ের বৃষ্টিতে।
সাকিব-ইফতেখারের ৮৬ বলে ১৯২ রানের টর্নেডো পার্টনারশিপে অসহায়ত্ব ছাড়া কোন কিছুই করার ছিলো না রংপুর বোলারদের। খাদের কিনারা থেকে দলকে তুলে নিয়ে বরিশালকে এ দুজন বসিয়েছেন পাহাড়ের চূড়ায়। যেকোন উইকেটে বিপিএলের সর্বোচ্চ পার্টনারশিপে সাকিবের উইলো থেকে আসে ৪৩ বলে ৮৯ রান, যাতে রয়েছে ৬ টি দৃষ্টি নন্দন ছয় ও ৯টি চারের মার। পাকিস্তান ব্যাটার ইফতেখার সেঞ্চুরি করতে খরচ করেন মাত্র ৪৫ বল, তার ইনিংসটি সাজানো ছিলো ৯টি বিশাল ছয় ও ৬টি চারে।
ফলে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে বরিশাল পায় বিপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ২৩৮ রান।
পাহাড়সম টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে রংপুর পাওয়ার প্লেতেই হারিয়েছে ৩ উইকেট। এরপর নাইম শেখের ৩১, মোহাম্মদ নওয়াজের ৩৩ ও শামীম হোসন পাটোয়ারীর অপরাজিত ৪৪ রানে ভর করে ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান করে রংপুর রাইডার্স। মিরাজ নেন ৩ উইকেট, ২ টি করে উইকেট লাভ করেন ওয়াসিম ও কামরুল রাব্বী।
ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন সেঞ্চুরিয়ান ইফতেখার আহম্মেদ।