১৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

১১১ এবং ডেভিড সাহেব……

প্রতিবেদক
Mehrab Elahi
মঙ্গলবার, ২৩ জুন , ২০২০ ৮:২৬

ভাইস এডমিরাল সাহেব সেবার গিয়েছিলেন কর্সিকায় যুদ্ধ করতে। কিন্তু তার দূর্ভাগ্য তিনি তার এক চোখ হারিয়েছিলেন সেই যুদ্ধে। যোদ্ধা মানুষ বুঝেনইতো থেমে থাকার পাত্র নন তারা, তিনি এইবার গেলেন স্পেনের সান্তাক্রুজ শহর দখল করতে। ওমা একি এবারো তার সাথে ভাগ্য বেইমানি করলো! যুদ্ধতো হারলোই সাথে হারালো এক হাত ৷ চোখও গেলো, হাতও গেলো। এইবার তো তাকে থামতে হবে। কিন্তু না তিনি সবাইকে চমকে দিয়ে গেলেন ট্রাফালগারের যুদ্ধে, এইবার কিছু আর হারালেন না তবে তিনি নিজেই হারিয়ে গেলেন।

Vice Admiral HORATIO NELSON
Image credit; pinterest



সবকিছুই ঠিকঠাক ছিলো ভাইস এডমিরাল নেলসন সাহেব মারা যাওয়ার বেশ কয়েক বছর পর্যন্ত। কিন্তু এর পরেই বাঁধলো আসল বিপত্তি। বেচারাতো যুদ্ধে এক হাত আর চোখ হারিয়েছেই দেশের মানুষ গুজব হিসেবে তার এক পা’কেও বেমালুম গায়েব করে দিয়েছে। আর এরপর থেকে তিনি এক পা, এক হাত আর এক চোখের মানুষ হয়ে গেলেন কল্পনায়। আর তার দেশে শুরু হওয়া খেলাতেই শুরু হয়ে গেল এক কুসংস্কার, আর সেটা হলো দ্য গ্রেট “ নেলসন নাম্বার ১১১”

১১১; বিষয়টাকে অনেকে একটু বেশিই ভয় পেতো। দলের রান বা নিজের রান যখন ১১১ তখন, একটু সতর্ক থাকো। ১১১ এর দূর্ভাগ্য কাটাতে কেউ হয়তো এক পা মাটি থেকে তুলে রাখতো কিছুক্ষনের জন্য বা ছোট্ট একটা লাফ দিতো। এই বিষয়টাকে এখন অনেকে না মানলেও একজন ব্যাক্তি এটিকে রীতিমতো শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন। আর তিনি হলেন ডেডিড সাহেব।

ডেভিড সাহেব কে চিনেন না আপনি? ওই যে যার নাকের ডগায় একটা কালো চশমা ছিলো আর ছিলো অভিজাত একটা ভুঁড়ি। আম্পায়ারিং করতেন, পুরো নাম ডেভিড শেফার্ড। ওনার দাঁড়ানোর ধরণ ছিলো যথেষ্ট আকর্ষণীয়, একদম যেন পন্টিংয়ের হুক বা শচিনের ড্রাইভের মতো অথবা জন্টি রোডসের অতিমানবীয় ফিল্ডিংয়ের মতো। সামনের দিকে একটু ঝুঁকে দাঁড়াতেন আর কোনো দল বা প্লেয়ারের ১১১ রান হলেই এক পা তুলতেন বা একটা ছোট্ট লাফ দিতেন।

ক্রিকেটে খেলেছেন তিনি ২৮২টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ সাথে ১৮৩টি লিস্ট-এ ম্যাচ। তবে ক্রিকেট তাকে চিনে একজন সৎ আম্পায়ার হিসেবে। আর এইজন্যই তিনি বেশ গর্ব করে বলতেন,

“ আম্পায়ার হিসেবে যত সিদ্ধান্ত দিয়েছি, সবগুলোতেই আমি সৎ ছিলাম। ”

আর এর উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০০১ এ ওল্ড ট্রাফোর্ডে সাকলাইন মুশতাকের তিনটি নো বল তিনি খেয়াল করেন নি। ম্যাচ শেষে জানার বেশ ভেঙে পড়েছিলেন তিনি এবং অবসরের সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন। তবে তা আর নেন নি। তবে যতদিন ডেভিড সাহেব তার আম্পায়ারিং জীবনে ছিলেন ততদিন সেই নেলসন নাম্বারকে সাথে নিয়েই ছিলেন। আচ্ছা, ডেভিড সাহেব ওপারে কি আপনার সাথে ভাইস এডমিরালের দেখা হয়েছিলো? দেখা হওয়ার পরেও কি আপনি ছোট্ট সেই লাফটা দিয়েছিলেন নাকি এক পা তুলেছিলেন ?

, , ,

মতামত জানান :