৬৪ টেস্ট ম্যাচের ক্যারিয়ারে ফ্রাংক উলি খেলেছিলেন মোটমাট ১৪ জন অধিনায়কের অধীনে, শিবনারায়ন চন্দরপল খেলেছিলেন মোট ১৩ জনের অধীনে। এছাড়া মুশতাক আহমেদ, স্যার জ্যাক হবস ও ইনজামাম উল হক খেলেছেন সব মিলিয়ে ১২ জন ক্যাপ্টেনের অধীনে।
ক্যাপ্টেন-ক্যাপ্টেনের এই সংখ্যার খেলায় চলুন আরো চমকপ্রদ কিছু তথ্য জেনে নিই, ১০০ র বেশী টেস্ট খেলেছেন, কিন্তু মাত্র ২ জন অধিনায়কের আন্ডারে, সেই একমাত্র খেলোয়াড় হলেন মার্ক টেলর। তার ক্যারিয়ারের প্রথম ৫৪ টেস্ট খেলেছেন এলান বোর্ডারের আন্ডারে আর পরের ৫০ টেস্ট খেলেছেন স্টিভ ওয়াহর অধিনায়কত্বে!
এবার আসি মার্ভ হিউজের ক্যারিয়ারে, মোট ৫৩ টি টেস্ট খেলা হিউজের কাছে ক্যাপ্টেন শব্দটা জিজ্ঞেস করলে সে উত্তরে একটা নামই বলবে- এলান বোর্ডার। কিংবা জিওফ মার্শের ৫০ টেস্টের ক্ষেত্রেও একই, কারণ এরা দুজনই এলান বোর্ডার ছাড়া এই পুরো ক্যারিয়ারে অন্য কারো ক্যাপ্টেন্সিতে খেলেনইনি- কি মুশকিল!

৩৬০ ডিগ্রী ঘুরে জর্জ হ্যাডলির কাছে যাই, আশ্চর্যজনকভাবে জর্জ হ্যাডলি তার ক্যারিয়ারে খেলা ২২টা টেস্ট ম্যাচে ক্যাপ্টেন হিসেবে পেয়েছেন মোট ০৯ জনকে! আবার শহীদ আফ্রিদীও ২৭ টা টেস্ট খেলেছেন মোট ০৯ জন ক্যাপ্টেনের অধীনে – কি নিদারুণ বৈপরীত্যের দুটো উদাহরণ।
এবার আসি ক্যাপ্টেনদের লিস্টে- ব্রায়ান লারা তার অধিনায়কত্ব করা ৪৭ টেস্টে মোট ৫৬ জন প্লেয়ারকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন গ্রায়েম স্মিথের ১০৯ টেস্টে মোট প্লেয়ার খেলেছেন ৫৬ জন। ইংলিস ম্যান ডেভিড গাওয়ার মাত্র ৩২ টেস্টে অধিনায়কত্ব করতে গিয়ে খেলিয়েছেন ৫৩ জন আলাদা প্লেয়ারকে!
উপরের স্ট্যাটসটা অনিল কুম্বলে হয়ত বিশ্বাসই করতে চাইবেন না, কারণ তার ক্যাপ্টেন্সি করা ১৪ টেস্টে কোনো প্লেয়ারের ডেব্যু হয়নি, সেইম স্কোয়াড নিয়েই ১৪ টেস্টে অধিনায়কত্ব করেছেন কুম্বলে এবং এটাই সর্বোচ্চ। এছাড়া ইন্ডিয়ার আরেক সাবেক অধিনায়ক বিষেণ সিং বেদীর ২২ টেস্টের অধিনায়কত্বে অভিষেক হয়েছিলো মাত্র ২ জনের, বাকীরা সব একই মেম্বাররা ছিলেন।
স্টিভ ওয়াহর সর্বজয়ী দলে মোট অভিষেক হয় মাত্র ৬ জন খেলোয়াড়ের, ৫৭ টি টেস্টে ক্যাপ্টেন্সি করা স্টিভের আমলে টেস্টে অভিষেক হয় এডাম গিলক্রিস্ট, স্কট মুলার, ব্রেট লী, মার্টিন লাভ, ব্র্যাড উইলিয়ামস ও নাথান ব্র্যাকেনের। রিকি পন্টিং এর অধিনায়কত্ব করা ৭৭ টেস্টে মোট ডেব্যু হয় ২৯ জনের।
দক্ষিণ আফ্রিকার হার্বার্ট উইল্ফ্রেড টেইলরের অধিনায়কত্ব করা ১৮ টেস্টে মোট অভিষেক হয় ৩৩ জন প্লেয়ারের, যেটা কিনা সর্বোচ্চ৷ গড়ে প্রতি ম্যাচে ২ জন করে খেলোয়াড় এর অভিষেক হয় টেইলরের অধীনে৷ ৫০ এর অধিক ম্যাচে ক্যাপ্টেন্সি করাদের মাঝে সবচেয়ে বেশী অভিষেক হয় অর্জুনা রানাতুঙ্গার আমলে, ৫৬ টি টেস্টে মোট ৩১ জন খেলোয়াড়ের অভিষেক হয়।
এবার দেখি ক্যাপ্টেন না হতে পারা ক্যাপ্টেনদেরকে, কখনোই ক্যাপ্টেন্সি না করে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলাদের তালিকায় যদি চোখ বুলাই, তাহলে দেখবো ইংলিশ পেস কিং জেমস এন্ডারসনকে। ক্যারিয়ারে এখনো পর্যন্ত খেলা ১৫২ টেস্টে এক ম্যাচ কিংবা এক সেশনের জন্যও কখনো ক্যাপ্টেন্সি করেননি। তেমনি অজী কিংবদন্তী শেন ওয়ার্ন খেলেছেন ১৪৫ টেস্ট, কখনোই ক্যাপ্টেন্সি করেননি। স্টিভ ওয়াহ আর পন্টিং এর ক্যাপ্টেন্সির কারণে অনেকেই তাকে বলে থাকে ক্যাপ্টেন না হওয়া ইতিহাসের সেরা ক্যাপ্টেন, তার ডোমেস্টিক ক্যাপ্টেন্সি রেকর্ড ওরকমই বলে৷ জেমস এন্ডারসনের বোলিং পার্টনার স্টুয়ার্ট ব্রড ১৩৮ টি টেস্ট খেললেও ক্যাপ্টেন্সি করেননি কোনোটাতেই, যদিও সীমিত ওভারের ৩০টি ম্যাচে ব্রড ক্যাপ্টেন্সি করেছেন বাট টেস্টে না। এছাড়া ভারতের ভিভিএস লক্ষ্মণ ও লংকান গ্রেট মুরালিধরন যথাক্রমে ১৩৪ ও ১৩৩ টেস্ট খেলেন কিন্তু এক ম্যাচের জন্যও ক্যাপ্টেন হননি।
এবার আরেকটা মজার ব্যাপারে আসি, চরম সৌভাগ্যবানদের তালিকা দেখি। ক্যারিয়ারে খেলেছেন মাত্র ১৩ টেস্ট, এবং তার সবগুলোতেই ক্যাপ্টেন হিসেবে ছিলেন সাউথ আফ্রিকান পার্সি শেরওয়েল! কেপলার ওয়েসেলস অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন ২৪ টি টেস্ট ও দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলেছেন ১৬ টি টেস্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলা ১৬ টি ম্যাচেই ওয়েসেলস ক্যাপ্টেন ছিলেন!
সো ক্যাপ্টেন সম্পর্কিত এই মজার পরিসংখ্যান শেষে আমরা একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, বেশীরভাগ সফল ক্যাপ্টেনরা অলমোস্ট সেইম টিম নিয়েই খেলতেন, বেশী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন না। আর ক্যাপ্টেন হওয়া ছাড়াও অনেক লম্বা ক্যারিয়ার গড়া যায় সেটাও প্রমাণিত। দেখা যাক আমাদের নেক্সট ওডিআই ক্যাপ্টেনের পরিসংখ্যান কি গিয়ে দাড়ায় বছরখানেক পরে।
#স্টে_ক্রিকেটখোর।
Translated From : https://www.espncricinfo.com/story/_/id/29472177/who-played-most-captains-their-test-career