২০০৬ থেকে ২০২০; ক্রিকেটের বাইশ গজের সেই পুচকে বালক আজ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। শুধু কি তাই? না, সেই ছোট্ট সাকিব এখন দশকসেরা ক্রিকেটারের একজন। ক্রিকেটের ২২ গজে নানান চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ নিজেকে নিয়েছেন সেরাদের কাতারে। এই ১৪ বছরেই নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য এক উচ্চতায়। যেখানে তিনি এখন ক্রিকেটবোদ্ধাদের মধ্যমণি!
মাগুরার ফরসাল এখন লাল-সবুজের পতাকা বহন করছে বিশ্বের সামনে। বাবার কথার তোয়াক্কা না করা ছেলেটি এতোটাই জেদি ছিলো যে! সে এখন নিজেকে বিশ্বসেরা প্রমাণ করেছেন। ক্রিকেটে তিনি এখন রেকর্ড বয়, তাকে বলা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টারবয়। বাংলাদেশের জার্সিতে পেয়েছেন অনেক কিছুই, দারুণ পারফর্ম করেও ছুঁয়ে দেখা হয়নি স্বপ্নের ট্রফি! তাতে কি? ২০২৩ বিশ্বকাপে দেশকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে হয়তো সেই শূন্যস্থানটিও পূরণ করবেন তিনি। আমি জানি সাকিব পারবেন; সাকিবকে পারতেই হবে। তাকে যে ঐ একটি শূন্যস্থান পূরণ করতেই হবে। নিজের জন্য না হলেও দেশের জন্য সেটা করতে নিজের ১০০% দিয়েই লড়াই করবেন সাকিব আল হাসান!
একজন সাকিবকে নিয়ে লিখতে গেলে লিখতে হবে অনেক কিছুই। তবুও শেষ করা যাবেনা নবাবের সাফল্যের গল্প গুলো। এই সাকিব সে যে নিজের সেরাটা দিতে মুখিয়ে থাকে সবসময়। এই সাকিব সে, যে সমালোচনার জবাব দেন ক্রিকেট মাঠে। এই সাকিব সে যে লাল-সবুজের জার্সিকে চিনিয়েছেন বিশ্বের সামনে। আজকের গল্পে এতোকিছু নিয়ে আলোচনা করার সময় হবেনা। আজকের আয়োজনটা যে নবাবের রঙ্গিন পোশাকের ১৪ পেরিয়ে ১৫ বছরের জানা অজানা নানান গল্প নিয়ে।
বিশ্ব ক্রিকেটে রঙ্গিন পোশাকে সাকিবের আগমন বিশ্বক্রিকেটে বাংলাদেশ তখনো নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। বাংলাদেশ দলটা অবশ্য তখন রফিক, নাফীস, খালেদ মাসুদ, আশরাফুল, রাজ্জাকদের হাত ধরেই এগিয়ে যাচ্ছিলো। সেই সময় বিশ্বক্রিকেটে আগমন ঘটে সাকিব আল হাসানের। স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেদিন বল হাতে ইকোনমিক বোলার সাকিব পকেটে পুড়েছিলেন চিগুম্বুরার উইকেট! ব্যাট হাতে ছিলেন অপরাজিত; ততক্ষণে বাংলাদেশ জিতেছে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। সেদিনের অপরাজিত সাকিব ১৪ বছরে এসেও অপরাজিত! কিন্তু সেদিনের সেই সাকিব এখন পরিণত সাকিব।
লাল-সবুজের জার্সি গায়ে চাপড়ানোর পর পেরিয়েছে ১৪ বছর। এই ১৪ বছরে কখনো হেসেছেন আবার কখনো নিরবে কেঁদেছেন। কিন্তু ভেঙ্গে পড়েননি। উঠে দাঁড়িয়েছেন, নিজেকে নিয়ে কাজ করেছেন, দিনশেষে সফলতা পেয়েছেন। হ্যাঁ, এই সাকিব যে হেরে যাবার পাত্র নয়, যদি হেরে যাবারই ছিলো তাহলে এতো সমালোচনা পেরিয়ে পারতেন না সেরাদের কাতারে উঠে আসতে! সাকিব বারবার ফিরেছেন, ফিরেছেন নতুন শক্তিতে। এই সাকিব এখন কোটি ভক্তদের ভালোবাসার নাম।
এখন ১৪ বছরে সাকিবের পারফরম্যান্স গুলো একটু দেখে নেওয়া যাক:
২০০৬ থেকে ২০২০; সাকিব লাল-সবুজের জার্সিতে ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন ২০৬ টি। যেখানে ৩৭.৮৬ গড়ে রান করেছেন ৬৩২৩ এবং বল হাতে শিকার করেছেন ২৬০ উইকেট। আর এতেই সেরা অলরাউন্ডারদের টক্কর দিয়ে যাচ্ছেন মিস্টার ৭৫।
- সাল ২০০৬, বিশ্ব ক্রিকেটে আগমনের বছর ১৪ টি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয় সাকিবের। সেখানে ৪৫.১৩ গড়ে সর্বোচ্চ ৬৭* রানে ৩৬১ রান করেন সাকিব। সেই সাথে বল হাতে স্পিন ঘূর্ণিতে শিকার করেন ১৫ উইকেট। নিজের অভিষেক বছরেই বিশ্বকে জানান দেন তিনি রাজত্ব করতে এসেছেন ২২ গজে! সেই পথচলায় এগিয়ে যাওয়া সাকিব আস্তে আস্তে হয়েছেন হাজারো তরুণের অনুপ্রেরণা নাম।
- সাল ২০০৭, প্রথম বছরের ১৩ ম্যাচকে এবার ছাড়িয়ে গেলেন সাকিব! খেললেন এক বছরে ২৩ টি ওয়ানডে ম্যাচ। ৩১.৯৫ গড়ে নামের পাশে যুক্ত করেছিলেন ৬০৭ রান! এছাড়াও ঝুলিতে পুড়েছিলেন ২০ উইকেট।
- সাল ২০০৮, এবার ব্যাট হাতে কিছুটা ছন্দপতন সাকিবের। রান পেলেও এভারেজ যেনো দিন দিন কমতে থাকছিলো। পুরো বছরে ১৯ ম্যাচে ২৪ গড়ে করলেন ৪০৮ রান! অবশ্য এবার বোলিংয়ে উন্নতি করেছিলেন সাকিব। কেনোনা ৩ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে আগের দুই বছরের পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে এবার ২২ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব।
- সাল ২০০৯, আগের বছরের বাজে পারফরম্যান্স যেনো সাকিবকে রাগিয়ে দিয়েছিল। তা না হলে হুট করে এমন পারফরম্যান্সের কথা তো না! ২০০৮ এ ২৪ গড়ে রান করা সাকিব এবার ৫১.৬২ গড়ে মাত্র ১৯ ম্যাচেই করেছিলেন ৬৭১ রান! আবার বোলিংয়েও নিয়েছিলেন ২৬ উইকেট। ক্রিকেট পাড়ায় তখন সাকিবকে নিয়ে আলোচনাও কম হয়নি!!
- সাল ২০১০, এই বছরটি সাকিবকে দিয়েছে অনেক কিছু। বিশ্বের সামনে সাকিব এবার অন্য এক সাকিবে পরিণত হয়েছিলো। ব্যাটিং কিংবা বোলিং; দুই বিভাগেই ধারণ করেছিলেন রূঢ়মূর্তি। পুরো সিজনে ২৭ ম্যাচে করলেন ৭৮৭ রান এবং বল হাতে শিকার করেছিলেন ৪৬ উইকেট। আর এতেই নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন সেরাদের কাতারে।
মজার বিষয় হলো এই পাঁচ বছরের মধ্যে শুরুর বছর তথা ২০০৬ সাল বাদ দিলে বাকি ৪ বছরই সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন সাকিব আল হাসান।
- সাল ২০১১, এবার ব্যাট হাতে কিছুটা ছন্দপতন সাকিবের। যদিও সেবার ব্যাট হাতে ২২ গজে কম যাননি সাকিব। পুরো সিজনে ৩৩.১৮ গড়ে করেছিলেন ৫৬৪ রান। যেই সাকিব বিগত বছর বল হাতে রেকর্ড করেছিলেন সেই সাকিব সেবার বল হাতে নিয়েছিলেন ২৫ উইকেট।
- সাল ২০১২, ‘১১ তে ছন্দপতন ঘটা সাকিব আবার ঘুরে দাঁড়ালেন। শুধু ঘুরে দাঁড়ানোই নয়। এই বছর মাত্র ৪ ম্যাচেই ছাড়িয়ে গেলেন বিগত বছরের ব্যাটিং গড়। এই ৪ ম্যাচে ৫৯.২৫ গড়ে করেন ২৩৭ রান। এবং বল হাতে স্পিন ঘূর্ণিতে নেন ৬ উইকেট।
- সাল ২০১৩-১৪, এই দুই বছর যেনো সাকিবের জন্য ছিলো ভয়ংকর এক বছর। এই দুই বছরে সাকিব সাক্ষী হয়ে আছে নানান ঘটনার। সেই সাথে ব্যাট হাতে নিজেকে হারিয়েও খুঁজেছিলেন তিনি। এই ২ বছর ব্যাট হাতে ২৯০ রান করা সাকিব বল হাতে নিয়েছিলেন ২২ উইকেট।
- সাল ২০১৫, আগেই বলেছি সমালোচনা যেনো সাকিবকে জাগিয়ে তোলে! এবারও তাই। বিগত ২ বছরের বাজে পারফরম্যান্স ভুলে গিয়ে নিজেকে নিয়ে কাজ করা সাকিব ৪২.১০ গড়ে করেন ৪২১ রান এবং শিকারে পরিণত করেন ২৪ সৈন্যকে।
- সাল ২০১৬-১৮, এই বছরগুলো সাকিবকে দিয়েছে অনেক কিছু। আবার সমালোচনাও কম হয়নি। কিন্তু এইসব তোয়াক্কা না করে নিজেকে প্রমাণ করেছেন সেরা রূপে আবার কখনো প্রতিপক্ষের যমদূত হয়ে হাজির হয়েছেন ২২ গজে। এই ৩ বছরে সাকিব যথাক্রমে রান করেছেন ২৫২, ৪৩০ এবং ৪৯৭।পাশাপাশি বল হাতে যথাক্রমে ১৪, ৬, ২১ উইকেট পকেটে পুড়েছেন। আর এতেই নিজেকে নিয়েছেন বিশ্বসেরাদের কাতারে। আবার পিছনে ফেলেছেন অনেক সেরা তারকাদের।
- সাল ২০১৯, এই বছরটি সাকিবকে দিয়েছে অনেক কিছু আবার কেড়ে নিয়েছেন জীবন থেকে মহামূল্যবান ১ টি বছর। ফিক্সিং ইস্যু গোপন করায় পেয়েছেন ১ বছরের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু এর আগেই নিজেকে নিয়েছেন অনন্য এক উচ্চতায়। বিশ্বকাপ মঞ্চে ব্যাট হাতে সাকিব ধারণ করেছিলেন রূঢ়মূর্তি। এখানেই শেষ নয় পুরো বছরে ৯৩.২৫ গড়ে করেন ৭৪৬ রান। এবং উইকেট নেন ১৪ টি। যেখানে বিশ্বকাপে সংগ্রহ করেন ৬০৬ রান!! শুধু তাই নয়, এই বছর বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১১০০+ রান এবং ৩০+ উইকেট শিকার করেন।
এই ছিল ১৪ বছরে সাকিবের পারফরম্যান্স। এবার জানবো এই ১৪ বছরে সাকিবের ঘরের এবং বাহিরের মাঠের পারফরম্যান্স। কোথায় সফল সাকিব? উত্তরটা পরিসংখ্যান দেখেই জেনে নেওয়া যাক!
হোম সিরিজ: দেশের মাটিতে ৯৯ টি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। এই ৯৯ ম্যাচে ৩৬.৫৪ গড়ে করেছেন ২৭৭৭ রান এবং বল হাতে শিকার করেছেন ১৪৯ উইকেট।
অ্যাওয়ে সিরিজ: বিদশের মাটিতে সাকিব খেলেছেন ১০৭ ম্যাচ। যেখানে ৩৮.৯৭ গড়ে করেছেন ৩৫৪৬ রান। এবং বল হাতে শিকার করেছেন ১১১ উইকেট।
পরিসংখ্যান বলে সাকিব দেশের থেকে বিদেশের মাটিতে বেশী খেলেছে। ম্যাচের দিক দিয়ে এগিয়ে থাকা সাকিব পারফরম্যান্সেও এগিয়ে বিদেশের মাটিতে। অবশ্য বোলার সাকিব দেশের মাটিতেই বেশী সফল।
এইসব বাদ দিলে আসবে, এই ১৪ বছরে সাকিব খেলেছে কয়টি দলের বিপক্ষে! আর সেখানে কোন দলের বিপক্ষে কেমন পারফরম্যান্স করেছেন সাকিব? এইসবের উত্তর জানতে গেলে একটু নজরে নেওয়া যাক বিভিন্ন দেশের বিপক্ষে সাকিবের পারফরম্যান্সগুলো:
পরিসংখ্যান বলে এই ১৪ বছরে সাকিব খেলেছে ১৬ টি দলের বিপক্ষে। এবার জানবো এই ১৬ দেশের বিপক্ষে সাকিবের পারফরম্যান্স:
- আফগানিস্তান: ৭ ম্যাচে ২২৮ রান এবং ১৮ উইকেট।
- অস্ট্রেলিয়া: ৯ ম্যাচে ২১৭ রান এবং ৫ উইকেট।
- বারমুডা: ২ ম্যাচে ৬৮ রান এবং ৩ উইকেট।
- কানাডা: ১ ম্যাচে ১৩৪ রান এবং ২ উইকেট।
- ইংল্যান্ড: ১৪ ম্যাচে ৩৯৯ রান এবং ১৪ উইকেট।
- ভারত: ১৮ ম্যাচে ৫৯১ রান এবং ১৯ উইকেট।
- আয়ারল্যান্ড: ১০ ম্যাচে ১৭৫ রান এবং ১২ উইকেট।
- কেনিয়া: ৩ ম্যাচে ৫৮ রান এবং ৩ উইকেট।
- নেদারল্যান্ডস: ২ ম্যাচে ১৬ রান এবং ৩ উইকেট।
- নিউজিল্যান্ড: ২২ ম্যাচে ৬৩৯ রান এবং ৩৭ উইকেট।
- পাকিস্তান: ১৬ ম্যাচে ৫৫৩ রান এবং ২১ উইকেট।
- স্কটল্যান্ড: ৩ ম্যাচে ১১৬ রান এবং ৩ উইকেট।
- দ. আফ্রিকা: ১৪ ম্যাচে ৩৯৭ রান এবং ১৩ উইকেট।
- শ্রীলঙ্কা: ২২ ম্যাচে ৬০৭ রান এবং ১৫ উইকেট।
- ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৮ ম্যাচে ৭২১ রান এবং ১৮ উইকেট।
- জিম্বাবুয়ে: ৪৫ ম্যাচে ১৪০৪ রান এবং ৭৪ উইকেট।
পরিসংখ্যান বলে সবচেয়ে বেশী ম্যাচ খেলেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এবং রান এবং উইকেটও বেশী এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। কিন্তু বড় বড় দলগুলোর বিপক্ষেও সাকিব ভালো খেলেছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আচ্ছা, সাকিব কোন পজিশনে বেশী সফল? ওয়ান ডাউন না কি মিডল অর্ডারে? অবশ্য পরিসংখ্যান বলে সাকিব সবচেয়ে বেশী ম্যাচ খেলেছে মিডল অর্ডারে তথা ৫ নাম্বারে। কিন্তু গড়ের দিক দিয়ে কিংবা সফলতা বেশী পেয়েছেন টপ অর্ডারে। এবার দেখে নেওয়া যাক সাকিবের ব্যাটিং পজিশন এবং পারফর্ম:
৩ নাম্বারে অভিষেকের পর থেকে এখন অব্দি ৩ নাম্বারে ম্যাচ খেলেছেন ২৩ টি। এই ২৩ ম্যাচে ৫৮.৮৫ গড়ে করেছেন ১১৭৭ রান। যার ফলে তাকে বাংলাদেশের সেরা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের তকমা দিয়েছে অনেকেই। ৩ নাম্বার বাদ দিলে সাকিব ৪, ৫, ৬ এবং ৭ নাম্বারেও ব্যাটিং করেছেন দলের প্রয়োজনে। এই কয়েকটি পজিশনের মধ্যে ৫ নাম্বারে ১২৫ ম্যাচে ব্যাট করে সাকিব সংগ্রহ করেছেন ৩৮৫২ রান। এছাড়াও ৪ নাম্বারেও সফল সাকিব। কেনোনা এই পজিশনে ৩০ ম্যাচে করেছেন ৯৬৯ রান! সবমিলিয়ে বলা যায় যেকোনো পজিশনে মানিয়ে নিয়ে খেলার ক্ষমতা রয়েছে সাকিবের।
এইসব বাদ দিলে আসবে বিগত ১৪ বছরে কোন মাঠে কেমন পারফরম্যান্স করেছেন সাকিব? এবার নজর দিলে দেখা যায় মিরপুরে ৮০ ম্যাচে সাকিব সংগ্রহ করেছেন ২৪৭২ রান এবং বল হাতে শিকার করেছেন ১১৩ উইকেট। মজার বিষয় হলো সাকিব এখন পর্যন্ত ৫৬ টি মাঠে খেলেছেন। যেখানে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন ৭ টি মাঠে।
অধিনায়ক সাকিব
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৫০ ম্যাচে। যেখানে ২৩ টি জয়ের সাথে হেরেছেন ২৬ ম্যাচ। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত। এই ৫০ ম্যাচে টসে জিতেছে ২০ বার! অধিনায়ক হিসেবে সাকিব রান করেছেন ৩৫.৯৮ গড়ে ১৫৪৭ রান! এবং বল হাতে শিকার করেছেন ৬৮ উইকেট।
বিশ্বকাপে সাকিব
এখন পর্যন্ত সাকিব খেলেছেন ৪ টি বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে সাকিব একজন সফল অলরাউন্ডার। ব্যাটে বলে নিজেকে নিয়েছেন সেরাদের কাতারে। ২৯ ম্যাচে ৪৫.৮৪ গড়ে করেছেন ১১৪৬ রান। যা দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান। আবার বল হাতে শিকার করেছেন ৩৪ উইকেট। যেটিও দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ। শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপ ইতিহাসে একমাত্র অলরাউন্ডার হিসেবে ১১০০+ রান এবং ৩০+ উইকেট শিকারী বোলার সাকিব। এছাড়াও বিশ্বকাপে সাকিব ম্যাচ সেরা হয়েছেন ৩ ম্যাচে। এক বিশ্বকাপে ৬০৬ রান এবং ১১ উইকেট শিকার করে নিজেকে নিয়েছেন সবার উপরে। বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসেবে সাকিব খেলেছেন ৭ ম্যাচে। যেখানে ৩ ম্যাচে জয়লাভ করেছেন তিনি।
এছাড়াও দেশের পক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরি সাকিবের দখলে। দেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিকও তিনি। আবার রানের দিক দিয়ে তামিম, মুশির পরেই সাকিবের অবস্থান। অলরাউন্ডার হিসেবে সাকিব শুধু দেশসেরাই নয়, সাকিব নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার।
এবার অলরাউন্ডার সাকিবের কিছু সাফল্যের গল্প দেখে নেওয়া যাক:
ওয়ানডে ক্রিকেটে ৫০০০+ রান এবং ২০০+ উইকেটের তালিকায় সাকিব আছেন ৪ নাম্বারে। যদিও অল্প ম্যাচে খেলেই এই মাইলফলকে পৌঁছে পিছনে ফেলেছেন সেরাদের।
- ওয়ানডে ক্রিকেটে ব্যাট হাতে ৫০০০+ রান, বল হাতে ২৫০+ উইকেট এবং ফিল্ডার হিসেবে ৫০ টি ক্যাচ রয়েছে সাকিবের।
- একই ম্যাচে ফিফটি+ ৪ উইকেট রয়েছে অনেকের। সেই তালিকায় ৩ ম্যাচে এমন রেকর্ডের দেখা পেয়েছেন সাকিব।
- একই ম্যাচে ১০০ এবং ৫ উইকেট নেওয়া ২য় অলরাউন্ডার সাকিব।
- ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম ৬০০০ রান এবং ২৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করা ক্রিকেটারের নাম সাকিব আল হাসান!
এই ১৪ বছরে সাকিব নিজেকে নিয়েছেন অনন্য এক উচ্চতায়। ভেঙ্গেছেন অনেক রেকর্ড, গড়েছেন নতুন কিছু সাফল্যের গল্প। সাকিব এখন শুধু সাকিব নেই, তিনি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার!! সাকিব ফিরবে, গড়বে নতুন রেকর্ড। নিজেকে নিয়ে যাবে সেরাদের সেরার কাতারে। শুভ কামনা রইলো আগামীর জন্য।