১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

“আইডলদের আইডল, বাংলাদেশ ক্রিকেটের কিংবদন্তী মোঃ রফিক”

প্রতিবেদক
Nayan
শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর , ২০২০ ৯:১২

“ও খুব ভালো আর্ম বল করতে পারে, ওকে তোমরা সবসময় সোজা ব্যাটে খেলবে।” – শচীন টেন্ডুলকার।
‘রফিক ভাই ছিলেন আমাদের বাঁ-হাতি স্পিনারদের আইডল” নিজের ৫০ তম টেস্ট ম্যাচের পর বলেছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

বাংলাদেশের তরুণ এবং আগামী দিনের ক্রিকেটারদের ক্রিকেটে আদর্শ কে? যদি জিজ্ঞেস করেন! তাহলে দেখা যায় পেস বোলার হতে চাওয়া ছেলেটা উত্তর দিবে- মাশরাফি! অথবা মোস্তাফিজ!
আবার স্পিনার বা স্পিন অলরাউন্ডার হতে চাওয়া ছেলেটা উত্তর দিবে সাকিব অথবা বামহাতি স্পিনার রাজ্জাক কিংবা নতুনদের মাঝে মেহেদী মিরাজ। যাদের দেখে নতুনরা স্বপ্ন বুনে ক্রিকেটার হওয়ার, যাদের মাঝে অনুপ্রেরণা খুঁজে পায় তারা হলেন সাকিব ও মাশরাফি। কিন্তু এই সাকিব, মাশরাফির অনুপ্রেরণা বা আইডল কে ছিলেন? বাংলাদেশের বেশির ভাগ ক্রিকেটারের আদর্শ একজন ছিলেন, যিনি “আইডলদের আইডল ” মেইড ইন জিঞ্জিরা খ্যাত “মোহাম্মদ রফিক”।

লেফট আর্ম অর্থোডক্স স্পিনারদের অন্যতম সেরা অস্ত্র আর্ম বল। আর মোঃ রফিকের সব চেয়ে বড় অস্ত্রই ছিল এই আর্ম বল। সেই সাথে বলে ছিল অসাধারণ ফ্লাইট দেয়ার ক্ষমতা।

বুড়িগঙ্গার উপারে বাড়ি কিন্তু ক্রিকেট খেলতে হলে যে , আসতে হবে এপারে। নদী পার হয়ে খেলতে চলে আসতেন ঢাকায়। আবার নদীর ওপারে জিঞ্জিরার বস্তিতে চলত তার ক্রিকেট খেলা।

১৯৮৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাংলাদেশ স্পোর্টিং ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন। ক্যারিয়ার শুরুতে ছিলেন একজন বামহাতি মিডিয়াম পেস বোলার। তৎকালীন সতীর্থ ওয়াসিম হায়দার তাকে পরামর্শ দেন স্পিন করার জন্য, তারপর হয়ে গেলেন স্পিনার।

জেনে রাখা ভালো একটা সময় ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটে ছক্কা নামক শব্দটি ছিল সোনার হরিণ, এই দেশের ৯০ দশকের খেলা পাগল মানুষ গুলো জানবে ও বুঝবে একজন রফিক মানেই তাদের বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম। যখন সবাই আউট হয়ে যাবে তবু খেলা দেখবে আর অপেক্ষা করবে শেষ দিকে একজন রফিকের ব্যাটিংয়ের জন্য। যে আমাদের স্কোর বোর্ডে কিছু দ্রুত রান তুলে দিবে। যার অবসর নেয়ার ১ যুগ পরও টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের এখনও ২য় সর্বোচ্চ ৩৪ টি ছক্কার রেকর্ড মোঃ রফিকের।

ক্যারিয়ারের শুরুঃ
১৯৯৪ সালে সার্ক ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের হয়ে ভারতের “এ” দলের বিপক্ষে ২৫ রানে নেন ৩ উইকেট নিয়ে দলকে জয় এনে দেয়। তারপর ১৯৯৫ সালে সেই ভারতের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়ে। অভিষেক ম্যাচে ৩০ বলে ৪৮ রান করা শচীন টেন্ডুলকারকে বোল্ড আউট করেন অসাধারণ এক ডেলিভারিতে। এরপর ওয়ানডে ম্যাচে দুইবার এবং টেস্টে শচীনকে একবার আউট করা রফিক সম্পর্কে টেন্ডুলকার প্রায়ই ড্রেসিংরুমে বলতেন-
“ও খুব ভালো আর্ম বল করতে পারে, ওকে তোমরা সবসময় সোজা ব্যাটে খেলবে।”

UNITED KINGDOM – OCTOBER 30: Cricket : ICC Knockout trophy in Nairobi 5/10/2000 MOHAMMAD RAFIQ / BANGLADESH (Photo by David Munden/Popperfoto/Getty Images)

★ আজকের বাংলাদেশের ক্রিকেট এই পর্যায় আসার পিছনে সবচেয়ে অবদান ছিল ১৯৯৭ সালে আই সি সি ট্রফি জয়। আর আই সি ট্রফি জয়ের পিছনের নায়ক মোঃ রফিক। ওই টুর্নামেন্টে একাই নিয়েছিলেন ১৯ উইকেট। যা ছিল যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ উইকেট। সেমিফাইনাল ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে দলকে জিতান। ফাইনাল ম্যাচে কেনিয়ার বিপক্ষে ৪১/৩ উইকেট নেন। এরপর বৃষ্টি-আইনে টার্গেট ২৫ ওভারে ১৬৫ রানের টার্গেট ম্যাচে ওপেন করতে নেমে দলকে অসাধারণ সূচনা এনে দেন ১৫ বলে ২৬ রান করে। বাংলাদেশ জয় লাভ করে ২ উইকেটে।

আইসিসি ট্রফি জয়ের পর মোঃ রফিক অন্য সব ক্রিকেটার এর মত কিছু না নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের জন্মস্থান বুড়িগঙ্গার কাছে বাবু বাজারে একটা ব্রিজ করে দিতে বলেন। যাতে মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হয়। তার অনুরোধে সে ব্রিজটি হয়। নিজের পুরস্কারপ্রাপ্ত অর্থ নিজের এলাকায় স্কুল নির্মাণেও ব্যায় করেন। নিজে পড়াশুনা করতে পারেন নাই বলে বাচ্চাদের পড়াশুনার কাজে খরজ করেন তিনি সে অর্থ।

আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেট বাংলাদেশের প্রথম জয়ের নায়ক মোঃ রফিক। ১৯৯৭ সালে মে মাসে ভারতের হায়দ্রাবাদে কোকাকোলা কাপে ২য় ম্যাচে কেনিয়াকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে বাংলাদেশ। প্রথমে বোলিং করে ১০ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। ওপেনিং ব্যাটিং করতে নেমে ৮৭ বলে ৭৭ রানে ইনিংস খেলে ওয়ানডে ইতিহাসে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের নায়ক বনে যায় রফিক।

★ বাংলাদেশের ইতিহাসের স্মরণীয় জয় ৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে, ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে নেন ১০ ওভারে ২৮ রান দিয়ে ১ উইকেট। ২০০০ সালে অভিষেক টেস্ট ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ২২ রান করেন এবং ১১৭/৩ উইকেট নেন। আর প্রথম টেস্ট উইকেট ছিল রাহুল দ্রাবিড় ।
অভিষেক ম্যাচের পর নির্বাচক মণ্ডলীর ভূতুড়ে এক সিদ্ধান্তের জন্য নিয়মিত টেস্ট দলে খেলার সুযোগ হয় নাই মোঃ রফিকের। নির্বাচকদের মতে রফিক একজন স্পেশালিষ্ট একদিনের ম্যাচের বোলার। তবে নিয়মিতভাবে ফিরে আসেন ২০০৩ সালে এবং রাজকীয় ভাবে ফিরে আসেন দঃ-আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৭/৬ উইকেট দিয়ে। একই বছর পাকিস্তান সফরে টেস্টের ৩ ম্যাচে ১৮ উইকেট নেন রফিক।
সেই সিরিজের মুলতান টেস্টে আম্পায়ার অশোকা ডি সিলভা পাকিস্তান পক্ষ নিয়ে লজ্জাজনক এবং ইচ্ছাকৃত ভুল সিদ্ধান্তের পরও বাংলাদেশ প্রায় জয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে উমর গুলকে ম্যানকাডিং আউট করেননি মো. রফিক। খেলা শেষে বলেছিলেন – “এভাবে আউট করে জিতলে সবাই আমাদের চোর বলতো! আমরা চোরের মত জিততে চাইনি!” বিষয়টা স্পিরিট অফ ক্রিকেটের প্রতীক হলেও সেই ম্যাচে বাংলাদেশ এক উইকেটে হেরেছিল।
২০০৪ সালে ওয়ানডে ম্যাচ জয় যখন অধরা হয়ে যাচ্ছিল টানা ৪৭ ম্যাচ হারের পর জিম্বাবুয়ের সাথে জয় পায় বাংলাদেশ। সেদিনও স্টুয়ার্ট কার্লাইল যখন ৭১ রান করে একাই জয়ের বন্দরে নিয়ে যাচ্ছিলেন জিম্বাবুয়েকে তখন রফিকের বাঁহাতের ঘূর্ণি বোলিং স্টুয়ার্ট কার্লাইলকে আউট করেন। ১০ ওভারে ১ মেডেন ৩৩ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট। বাংলাদেশ জয় পায় ৮ রানে।
২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জয়পায় বাংলাদেশ। সে ম্যাচে শ্রীধরন শ্রীরাম যখন ৫৭ রান করে ভারতকে জয়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক প্রয়োজনের সময় আউট করেন তাকে। সে ম্যাচে রফিক দুই উইকেট নেন । বাংলাদেশ জয় পায় ১৫ রানে।
২০০৪ সালে সেন্ট লুসিয়া টেস্টে ৯ম ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে নেমে টেস্ট সেঞ্চুরি করেন ১১১ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেন। সেদিন শুধু সেঞ্চুরি নয় বাংলাদেশের ম্যাচ ড্র করতে সাহায্য করেন। আর বলা যায় প্রথমবারের মত ৫ দিন লড়াই করে কোন ম্যাচ ড্র করে বাংলাদেশ।

এখানে একটা গল্প পাঠকদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখা , ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের সময় রফিক তার ঐতিহাসিক ১১১ রানের ইনিংসের সেই ব্যাটটি নিলামে তুলেছিলেন এবং ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে রফিক প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে স্মারক নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

★২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যখন বাংলাদেশের জয়ের ম্যাচে, আশরাফুল আউট হয়ে যাওয়ার পর ১৭ বলে ২৩ লাগে । তখন রফিক ৭ বলে ৯ রান করেন অপরাজিত । বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয় লাভ করে। বোলিংয়ে ছিলেন দারুণ মিতব্যয়ী। সেদিন রফিকের বোলিং স্পেল ছিল ১০-০-৩১-০।
২০০৫ সালে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ে ছিল তার অসাধারণ নৈপুণ্য। প্রথম ব্যাট হাতে ৬৯ রান করেন তারপর জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে ৬৫/৫ উইকেট নেন। ২য় ইনিংসে ব্যাট হাতে ১৪ রান অপরাজিত। ২য় ইনিংসে এনামুল হক জুনিয়রের জন্য আর সুযোগ পান নাই উইকেট নেওয়ার। বাংলাদেশ জয় লাভ করে ২২৬ রানে।
২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বাংলাদেশ সফরে ওয়ানডে সিরিজে ৫ম ও শেষ ম্যাচে প্রথমে বোলিং করে ১০-১-৩৪-২ এরপর ব্যাটিং করতে নেমে ৬৬ বলে ৭২ রান করে দলকে ৮ উইকেটের জয় সাথে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ।

Australia’s Matthew Hayden clocks up the runs under the watchful eye of Bangladesh bowler Mohammed Rafique (Photo by Matthew Ashton – EMPICS/PA Images via Getty Images)

★ ২০০৬ সালে ফতুল্লা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৬৫ রানে ৫ উইকেট নেন। ২য় ইনিংসে ও ৯৮ রানে তুলে নেন ৪ উইকেট , আর সেই দলটি ছিল অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা দল। কপাল মন্দের কারণে সে ম্যাচে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে পরাজিত হয়। পরের টেস্টে শেন ওয়ার্ন ও ম্যাকগিলদের বিপক্ষে ৫৩ বলে ২ চার আর ৬ ছক্কায় ৬৫ রানের একটি ইনিংস খেলেন।
★২০০৭ সালে বিশ্বকাপে ভারতকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দেওয়া ম্যাচে যখন সৌরভ সৌরভ গাঙ্গুলী (৬৬) এবং যুবরাজ সিং(৪৭) ম্যাচ ভারতের পক্ষে নিচ্ছিলেন তখনই দুই জনকে আউট করেন রফিক। সেই ম্যাচের ভারতের ইনিংসের মাঝের ওভার গুলোতে ভারতকে বাঁদর-নাচ নাচিয়েছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। ম্যাচে তার বোলিং ফিগার ছিল ১০-২-৩৫-২।
২০০৭ সালে ভারতের বাংলাদেশ সফরে ২য় ওয়ানডে ম্যাচটি ছিল রফিকের ক্যারিয়ার অলিখিত শেষ ওয়ানডে ম্যাচ। শেষ ম্যাচে ৩ উইকেট নেন।

যদিও তার আন্তর্জাতিক শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি ছিল এশিয়া একাদশের হয়ে আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে আফ্রিকা একাদশের সাথে ৬৫/৪ উইকেট নিয়ে এশিয়া একাদশকে ১৩ রানের জয় এনে দেন। বিদায়ী ম্যাচটি স্মরণীয় করে রেখেছিলেন দেশের এই কিংবদন্তি। সে ম্যাচে রফিকের সতীর্থ কিংবদন্তি মাহেদ্র সিং ধোনী ১৩৯ রানের সুবাধে ম্যাচ সেরা হয়েছিল।
★২০০৮ সালে দঃ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে টেস্ট থেকে অবসর নেন, সে ম্যাচে রবিন পিটারসনকে আউট করে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ১০০ উইকেট লাভ করেন।

৩০+ বছর বয়সে নিজের দলের জন্য ১০০+ উইকেট অর্জন করেছেন এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা খুব বেশি নয়, রফিক সহ মাত্র ৫ জন । বাকিরা রায়ান হ্যারিস (অস্ট্রেলিয়া), ক্ল্যারি গ্রিমেট (অস্ট্রেলিয়া), দিলীপ যোশি (ভারত), ব্রুস ইয়ার্ডলি (অস্ট্রেলিয়া) ।
১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রতিটি ম্যাচেই রফিক ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিং নিজেকে উজাড় করে উজাড় করে দিয়েছিলেন এই দেশের জন্য।

রফিকের অবসর হয়ত অনেকটা দ্রুত সময়ে হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে । ২০২০ সালের বিডিক্রকটাইমের লাইভ আড্ডায় মোহাম্মদ রফিক জানিয়েছেন কেনো তার ক্যারিয়ার দীর্ঘ হয়নি। রফিক জানান, ‘আমার বিদায়টা ভালোভাবে হয়নি। নির্বাচকরা আমাকে বলতো অবসর নিতে। অনুশীলনে গেলে বলতো তুমি অবসর নাও। তোমার জন্য আমরা দল ঠিক করতে পারছি না। আমি বলতাম দেখো, আমি তো পারফর্ম করেই দলে আছি। তারপরেও খুব বিরক্ত করতো। তখন আমি চিন্তা করলাম যে মানুষের কথা না শুনে আমি নিজেই অবসর নিয়ে নিই। তখনই অবসর নিয়ে নিলাম।’

৩৩ টেস্টে ১০৫৯ রান করেন, গড় ১৮, সর্বোচ্চ রান ১১১। ৪ টি অর্ধশত রানের সাথে একটি সেঞ্চুরি। বোলিংয়ে ৩৩ ম্যাচের ৪৮ ইনিংসে ১০০ উইকেট। সর্বোচ্চ ৭৭/৬ উইকেট। ম্যাচ সেরা ১৬০/৯, ইনিংসে ৫ উইকেট ৭ বার।

ওয়ানডেতে ১২৫ ম্যাচে ১০৬ ইনিংসে ১১৯১ রান। সর্বোচ্চ ৭৭, গড় ১৩, অর্ধশত ২ টি। বোলিংয়ে ১২৫ ম্যাচে ১২৫ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ৪৭/৫। ৩ বার ইনিংসে ৪ উইকেট। একবার ৫ উইকেট।

একটি মাত্র টি২০ ম্যাচ খেলেন ৫ বলে ১৩ রান এবং ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ১ উইকেট। তাও বাংলাদেশের প্রথম টি২০ ম্যাচ ছিল। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচ দলের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশের প্রথম টি-২০ ম্যাচ খেলেন রফিক।

রফিকের কিছু রেকর্ডঃ

  • টেস্টে রফিকের প্রথম উইকেট রাহুল দ্রাবিড ২০০০ সালে ।
  • ২৫ তম উইকেট পাকিস্তানের ফারহান আদিল ২০০৩ সাল ।
  • ৫০ তম উইকেট জ্যাকব ওরাম ২০০৪ সাল।
  • ৭৫ তম উইকেট মাহেলা জয়াবর্ধনে ২০০৬ সাল।
  • ১০০ তম উইকেট রবিন পিটারসন ২০০৮ সাল।

আক্ষেপের একটা বিষয় রফিকের টেস্ট উইকেট হয়ত আরও বেশি হত যদি বর্তমান সময় টেস্ট খেলার সুযোগ থাকত। সে সময় বাংলাদেশ দল প্রায় ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে বা পরাজয় নিশ্চিত হত প্রতিপক্ষের এক ইনিংস পর। যেখানে ৪র্থ বা ৩য় ইনিংসে স্পিনাররা সব সময় স্পিনের নীল বিষাক্ত ছোবল দেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের জন্য সে সুযোগ খুব একটা হয় নাই রফিকের।

বাংলাদেশের অনেক বোলারই ভবিষ্যতে হয়তো ওয়ানডে বা টেস্টে ৩০০ বা ৪০০ উইকেট পাবে কিন্তু ইতিহাস দেখতে গেলে ১০০ উইকেটের শিকারের প্রথম বোলারের নাম আসবে রফিকের।
প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড আছে রফিকের। (১৯৯৯,২০০৩, ২০০৭)।

** প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ১০০ এবং ১০০০ রান টেস্ট এবং ওয়ানডে ম্যাচে।
** ২০০৫ সালে রফিক বাংলাদেশের বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে বর্ষসেরা বোলার নির্বাচিত হন।
** ওয়ানডে ও টেস্ট বোলিং র‌্যাংকিং সর্বোচ্চ অবস্থান ছিল ১৯।

বাংলাদেশের ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র ও জীবন্ত কিংবদন্তী মোঃ রফিকের আজ ৫১ তম জন্মদিন। ক্রিকেটখোর পরিবারের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালবাসা। উনার আগামী জীবন ভাল কাটুক সে প্রত্যাশায় আমরা ক্রিকেটখোর।

,

মতামত জানান :