১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লেগ স্পিনের শিল্পী শেন ওয়ার্ন

প্রতিবেদক
Nayan
রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর , ২০২০ ১১:১৫


লেগ ব্রেক বা লেগ স্পিনকে বলা হয় ক্রিকেটের একটি শিল্প আর এই শিল্পের শিল্পী হলেন শেন ওয়ার্ন। সর্বকালের সেরা শব্দটি লিখতে গেলে বিতর্ক হলেও, শেন ওয়ার্নকে ক্রিকেট বিশ্লেষকরা সেরাদের তালিকায় প্রথমে রাখেন সবদিক বিবেচনা করে। উইজডেনের শতাব্দীর সেরা ৫ ক্রিকেটারের একজন শেন ওয়ার্ন।
১৯৬৯ সালের ১৩ ই সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরের ভিক্টোরিয়ার ফার্নট্রি গুল্লি এলাকায় কেইথ এবং ব্রিডজেটের ঘরে জন্মেছিলেন ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা স্পিনার শেন ওয়ার্ন।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে ইউনিভার্সিটি অফ মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে সুযোগ হয় খেলার। ছোট বেলায় শুধু যে ক্রিকেটে তার প্রতিভা ছিল তা নয়, তিনি সেন্ট কিল্ডা ফুটবল ক্লাবের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলেন।
১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট একাডেমীতে ভর্তি হন। ১৯৯১ সালে ইংলিশ ক্রিকেট দল অ্যাকরিংটন ক্রিকেট ক্লাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। তাদের হয়ে প্রথম মৌসুমে ১৫.৪ বোলিং গড়ে ৭৩ উইকেট শিকার করেছিলেন মাত্র ১৫.৪ বোলিং গড়ে। এর মাঝে অভিষেক হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে। অভিষেকটা ছিল সাদামাটা, প্রথম ম্যাচে ১০২ রান দিয়ে নেন মাত্র ১ উইকেট। এর কয়েকমাস পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া “বি” দলের হয়ে সুযোগ হয় আর সে ম্যাচেই বাজিমাত। ৫২ রানে ৭ উইকেট নিয়ে সবার নজরে আসেন প্রথম বারের মত।

এরপর অস্ট্রেলিয়া “এ” দলে সুযোগ হয় ভারতের বিপক্ষে এবং সে ম্যাচেও ৭ উইকেট নেন। তারপর সরাসরি জাতীয় দলে অভিষেক হয় ১৯৯২ সালে ভারতের বিপক্ষে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে ৪৫ ওভারে ১৫০ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট প্রথম ইনিংসে। পরের ম্যাচে কোন উইকেট পাওয়া হয় নাই। ফলাফল দল থেকে বাদ।
এরপর আবার শ্রীলংকা সফরে দলে সুযোগ হয় কিন্তু কলম্বো টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১০৭ রান দিয়ে উইকেট শূন্য। এবার তার বোলিং গড় দাঁড়ায় ৩৩৫। এই ৩৩৫ গড়ের বোলারের কাছে হারতে হয় শ্রীলংকাকে। সেই ম্যাচের ৪র্থ ইনিংসে শ্রীলংকার জেতার জন্য দরকার ছিল ৩১ রান। সেখানে ১১/৩ উইকেট নিয়ে দলকে জয় এনে দেন। শেন ওয়ার্নের এই পারফরমেন্সের পর সেদিন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা বলেন, “৩০০ বোলিং গড়ের বোলারের কাছে আমরা হেরে গেলাম”।
তবে এরপর পরের টেস্টে আবারও ব্যর্থ আবারও দল থেকে বাদ।
এবার নিজের লেগ স্পিনকে আরও শানিত করলেন। তারপর ফিরে আসেন ৯২ এর ডিসেম্বরে। এবার তার আসল চেহারায় ফিরে আসেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দলে সুযোগ পেয়ে ২য় ইনিংসে ৫২/৭ উইকেট নিয়ে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন।
১৯৯৩ সালের জুন মাসে প্রথম বারের মত অ্যাশেজ সিরিজে দলে সুযোগ হয়। প্রথম ম্যাচেই ৮ উইকেট যা ছিল তার জীবনের অন্যতম সেরা ম্যাচ। ২য় ম্যাচে ১০ উইকেট। সিরিজে ৩৪ উইকেট।


১৯৯৩ সালে ঘটে “বল অব দ্য সেঞ্চুরির” ঘটনা অ্যাশেজে। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ২৮৯ রানে অলআউট। ইংল্যান্ডের গ্রাহাম গুচ এবং আথারটন ভাল সূচনা এনে দিয়ে আথারটন আউট। ক্রিজে আসেন মাইক গ্যাটিং, যিনি স্পিনের বিপক্ষে সব সময় ভাল খেলতেন। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডার বল তুলে দেন লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্নের হাতে। এর আগে ৯ টেস্ট খেলা শেন ওয়ার্নের স্পিনকে ভয় পাওয়ার কিছুই ছিল না মাইক গ্যাটিংয়ের কারন তিনি স্পিনে সেরা ব্যাটসম্যান। ৪ রানে ব্যাট করছিলেন মাইক গ্যাটিং। ওয়ার্ন কয়েক পা দৌড়ে অ্যাশেজে নিজের প্রথম বল ছুঁড়লেন। বল পিচ করল লেগ স্ট্যাম্পের অনেক খানি বাহিরে। গ্যাটিং চিন্তা করলেন বল যদি না ঘুরে তাহলে লেগ ষ্ট্যাম্পের পাশ দিয়ে কিপার এর হাতে যাবে। আর ঘুরলে তার প্যাডে আসবে, অন্যথায় ব্যাটে। কিন্তু বল মাটিতে পিচ করার সাথে সাথে ঘটল আশ্চর্য সেই ঘটনা। মাইক গ্যাটিং কিছু বুঝে উঠার আগে বল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি লাফিয়ে উঠে এবং চোখের পলকে বল লেগ ষ্ট্যাম্পের বাহিরের বল অফ স্ট্যাম্পের মাথায় আঘাত হানল। গ্যাটিং স্তব্ধ হয়ে হয়ে পিচের দিকে তাকিয়ে রইলেন এদিকে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল স্টেডিয়ামের সকল দর্শক, ইংরেজ বা অস্ট্রেলিয়ার ড্রেসিংরুমে থাকা খেলোয়াড়রাও যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারতেছিল না। আর সেই বলটিকে ইতিহাসের বল অব দ্য সেঞ্চুরি বলা হয়।


১৯৯৩ সালে ১৬ ম্যাচে ৭২ উইকেট নেন। টেস্ট ক্রিকেটে এক পঞ্জিকাবর্ষে স্পিনার হিসাবে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের তৎকালীন বিশ্ব রেকর্ড ছিল। এর মাঝে ওয়ানডেতে নিজের জাত চিনাতে শুরু করেন নিজের খেলা ৩য় ও ৪র্থ ম্যাচে ৪ টি করে উইকেট নেন। প্রথম ১০ ম্যাচে ২৪ উইকেট। এভাবে শুরু হয় শেন ওয়ার্নের রাজত্ব।
১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করেন বড় তারকা হওয়ার পথে আছেন তিনি। বিশ্বকাপে ১২ উইকেট নেন। সেমিফাইনালে ৩৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে দলকে পৌঁছে দেন ফাইনালে।
১৯৯৯ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ৪ উইকেট নিয়ে দলকে ফাইনালে তুলেন ,হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা। ১০-৪-২৯-৪ ছিল তার বোলিং ফিগার। এবং ফাইনাল ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে শিরোপা এনে দেন। এবং ম্যান অফ ফাইনাল নির্বাচিত হন।

মাঠে যেমন সেরা শেন ওয়ার্ন তেমন মাঠের বাহিরে বিতর্কিত থাকতেন শেন। ৯৯ বিশ্বকাপের আগে হয়েছিলেন ২ ম্যাচ নিষিদ্ধ। ২০০১ সালে বিতর্ক, অফ ফর্ম, ইনজুরি কারনে টেস্ট থেকে আবার হারিয়ে যান শেন। দল থেকেও বাদ পড়েন। ২০০১ সালে নিজের প্রিয় অ্যাশেজ সিরিজে ৩১ উইকেট নিয়ে আবারো ছন্দে ফিরে আসেন তিনি।
মাঠে নেমে ভাল করলে ও বার বার বিতর্ক যেন তাকে পিছু ছাড়ে না। বোলিংয়ে স্পিন বিষে ঘায়েল করেন ব্যাটসম্যানকে কিন্তু বিতর্কিত হয়ে থাকেন সব সময় মাঠের বাহিরে।
শরীরে নিষিদ্ধ ড্রাগ নিয়ে আবার নিষিদ্ধ হলেন। একবারতো বাজিকরদের দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য ফাঁস করে দিয়েছিলেন ক্যারিয়ার শুরুতে। ২০০০ সালে ইংল্যান্ডের এক নার্সকে অরুচিকর ম্যাসেজ পাঠিয়ে বেশ বিতর্কিত হন। একবার ধূমপান করার সময় কয়েকজন তার ছবি তুললে সেখানে মারামারি করেন। ২০০৩ সালে জানুয়ারিতে অলিখিত ভাবে নিজের জীবনের শেষ ওয়ানডে খেলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।

২০০৩ বিশ্বকাপের আগে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে ক্রিকেট থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। ২০০৩ বিশ্বকাপে খেলতে পারেন নাই আগের বিশ্বকাপে দলকে জিতানো শেন।
২০০৪ সালে ফিরে আসেন ক্রিকেটে। ফিরে আসা নয়, যেন রাজকীয় ভাবে রাজত্ব করতে এলেন । ফিরতি ম্যাচে দুই ইনিংসে ১০ উইকেট। সেই সিরিজেই ক্যারিয়ারের ৫০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
২০০৫ সালে হয়ে উঠেন আরও ভয়ানক। তার স্পিনের নীল বিষে ঘায়েল করেন ইংল্যান্ডের সব ব্যাটসম্যানদের। অ্যাশেজ সিরিজে এবার শুধু বোলার নয় ব্যাটসম্যান হয়েও অবদান রাখেন ২৪৯ রান করেন অ্যাশেজ সিরিজে এবং সিরিজে ৪০ উইকেট নেন।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফিরে এসে ২০০৪ ও ২০০৫ সালে ২৭ টেস্টে ১৬৬ উইকেট। এর মাঝে ২০০৫ সালে ছিল ৯৬ উইকেট যা এক পঞ্জিকা বর্ষে সর্বোচ্চ উইকেট টেস্টে।
২০০৫ সালে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদায় নেন। যদিও ম্যাচটি ছিল এশিয়া একাদশ ও বিশ্ব একাদশের ম্যাচ। সেই ম্যাচে ২৭ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নেন। ওয়ানডে ক্রিকেট সব সময় নিয়মিত ছিলেন না। এবং ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ম্যাচ ও বেশি নয়। তবে তার অবদান আছে দলকে দুইটি বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলে। একটিতে চ্যাম্পিয়ন করায়। ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৯৪ ম্যাচে ১০১৮ রান করেন ১৩ গড়ে যেখানে আছে একটি অর্ধশত রানের ইনিংস। আর বোলিংয়ে ১৯৪ ম্যাচে ২৯৩ উইকেট নেন। সর্বোচ্চ ৩৩ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট, গড় ২৫। ১২ বার ইনিংসে ৪ উইকেট নেন। একবার ৫ উইকেট। তার খেলা ১৯৪ ম্যাচের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া জয় লাভ করে ১২৪ ম্যাচ যেখানে শেন নিয়েছিল ২১৪ উইকেট। ওয়ানডে ক্রিকেটে ১২ বার ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়।

লঙ্কান অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে একবার বলেছিলেন, ‘ওয়ার্ন ছিলেন স্টেডি লেগস্পিনার। ট্যাকটিক্যাল লড়াইয়ে যেতেন ব্যাটসম্যানের সঙ্গে। আমাকে মারতে পার কি না দেখো বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়তেন। মারতে গেলে আউটও হতে হতো।
২০০৬-০৭ অ্যাশেজ সিরিজে গ্লেন ম্যাকগ্রা, জাস্টিন লাঙ্গারদের সাথে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন, নিজের প্রিয় অ্যাশেজ সিরিজে। নিজের শেষ টেস্টের আগের টেস্ট মেলবোর্নে অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসকে আউট করে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম বোলার হিসাবে ৭০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন ওয়ার্ন।
নিজের জীবনের শেষ টেস্টে মন্টি পানেসারকে আউট করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২য় বোলার হিসেবে ১০০০ উইকেট লাভ করেন। ওই টেস্টের ২য় ইনিংসে ১ উইকেট নেন মাত্র। অধিনায়ক অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফকে নিজের শেষ শিকারে পরিণত করেন।
দল থেকে বাদ পড়া, নিষিদ্ধ হওয়া এইভাবে ক্যারিয়ার শেষ করেন শেন ওয়ার্ন ১৪৫ টি টেস্ট খেলে। উইকেট নেন ৭০৮ উইকেট। ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগার ৭১/৮ । ম্যাচে সর্বোচ্চ ১২৮/১২ , বোলিং গড় ২৫। ৪ উইকেট নেন ৪৮ বার। ৩৭ বার ইনিংসে ৫ উইকেট নেন। ম্যাচে ১০ উইকেট নেন ১০ বার।
তার খেলা ১৪৫ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জয় লাভ করে ৯২ ম্যাচ আর এই ৯২ ম্যাচে ৫১০ উইকেট । ইতিহাসের একমাত্র বোলার হিসেবে নিজ দলের জয় পাওয়া ম্যাচগুলোতে ৫০০ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
এশিয়ার মাটিতে ২৫ ম্যাচে ১২৭ উইকেট ।বাংলাদেশের বিপক্ষে ২ ম্যাচে ১১ উইকেট লাভ করে গড় ২৭। স্পিন বা পেস বোলাররা যেখানে শুধু মাত্র নিজের দেশে সব সময় উইকেটের বন্যা বয়ে দেয়!! সেখানে শেন ওয়ার্ন ব্যতিক্রম। নিজের দেশের বাহিরে ৭৬ ম্যাচে ৩৮৯ উইকেট নেন এই বোলার যেখানে গড় ২৪। অ্যাশেজ সিরিজে ৩৬ ম্যাচে ২৩ গড়ে ১৯৫ উইকেট নেন।
টেস্ট ক্রিকেটে বোলিং এর পাশাপাশি রাখতেন ব্যাটিং এ অবদান । ১৪৫ ম্যাচে ১৯৯ ইনিংসে ৩১৫৪ রান করেন, গড় ১৭ । ইনিংসে সর্বোচ্চ ৯৯ । ১২ অর্ধশত রানের ইনিংস আছে তার। একমাত্র ক্রিকেটার হিসাবে টেস্ট ক্রিকেটে ৭০০ উইকেট এবং ৩,০০০ রান করেছেন তিনি।
প্রথমশ্রেণীর ক্রিকেটে বোলিংয়ে ৩০১ ম্যাচে ১৩১৯ উইকেট শিকার করেন ২৬ গড়ে। ব্যাটেও ছিলেন অনেক সফল । প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ৬৯১৯ রান করেন যার গড় ১৯ এবং ২৬ টি অর্ধশত রানের সাথে আছে ২ টি সেঞ্চুরি।
শুধু মাত্র টেস্ট ও ওয়ানডে নয় আধুনিক যুগের টি-২০ ক্রিকেটে ও দারুণ সফল ছিলেন শেন। অবসর নেয়ার পর ২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম আসরে অনভিজ্ঞ একটা দল রাজস্থানকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন তিনি শেন।
অধিনায়ক হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সফল ছিলেন শেন। ওয়ানডেতে ১১ ম্যাচে অধিনায়ক ছিলেন যেখানে মাত্র একটি ম্যাচে পরাজিত হয় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ক্যারিয়ার জুড়ে নানান বিতর্ক জন্ম দেয়ার কারনে হয়ত অধিনায়ক এর মুকুট তার মাথায় তেমন ছিল না।

অ্যালান বোর্ডার এর মতেঃ স্যার ডন ব্রাডম্যানের পরেই ওয়ার্নকে রাখতে হবে। কারণ, ‘লেগ স্পিন শিল্পে তিনি মুক্ত প্রবাহ’ এনেছিলেন। যেমনটা ব্যাটিংয়ে এনেছিলেন ডন।

তার কিছু রেকর্ডঃ

** ৯৯ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়।
** প্রথম বোলার হিসেবে ৬০০ এবং ৭০০ উইকেট শিকার করেন টেস্টে।
** ১৯৯৪ সালে উইজডেনের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন।
** টেস্ট ক্রিকেটে এক বছরে সবচেয়ে বেশি ৯৬ উইকেট শিকার করেন ।
** টেস্টে এক বছরে ৫০ বা তার অধিক উইকেট ৭ বার।
** টেস্ট ইতিহাসে জেতা ম্যাচে এক মাত্র বোলার ৫০০ উইকেট নিয়েছেন।
** নন-এশিয়ান হিসেবে এশিয়ায় এক মাত্র বোলার হিসেবে ১০০ উইকেট নিয়েছেন।
** উইজডেনের শতাব্দীর সেরা ৫ ক্রিকেটারের একজন শেন ওয়ার্ন। বাকীরা হলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান, গ্যারি সোবার্স, স্যার জ্যাক হবস, ভিভ রিচার্ডস।

প্রতিভা এবং বিপন্নতার মিশেলে অকৃত্রিম থেকেছেন পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে। লেগ স্পিনার আবদুর কাদিরের পর তেমন আর কোন লেগ স্পিনার আসতেছিল না আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে, সেখান থেকে লেগ স্পিনকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য
ক্রিকেট বিশ্ব আজীবন মনে রাখবে এই রহস্যময় মানবকে।

,

মতামত জানান :