৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সকালে নতুন বল নেওয়ার আগে তোমাদের সব রান করে নিও ___সৌরভ গাঙ্গুলি

প্রতিবেদক
ডেস্ক নিউজ
মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর , ২০২০ ৪:৫৪

১০ই নভেম্বর ২০০০!

বাংলাদেশ বনাম ভারত (টেস্ট)

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম টেস্ট আর প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত। সদ্য লিডারশীপ পাওয়া সৌরভ গাঙ্গুলি অথবা শচিন, দ্রাবিড়’দের অনুভূতি যেমন তেমন তবে বাংলাদেশের জন্য বলা যায় তখন ক্রিকেট উৎসব, কানায় কানায় পূর্ণ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে তখন বাংলাদেশ বাংলাদেশ প্রতিধ্বনি।

টেস্ট ক্রিকেটে ২০ বছর পার করেছে বাংলাদেশ, এরমাঝে অনেক চড়াই উৎড়াই পেরিয়েছে লাল সবুজ পতাকাধারীরা কিন্তু যেদিন এই সাদা পোষাকের যাত্রা শুরু হয়েছিলো সেদিনের কথা কি আর ভুলা যায়? টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ভারতের বিপক্ষে সেই প্রথম টেস্টের কথা যেমন ভুলতে পারেনি দুর্জয়, বাশার, আমিনুল ইসলাম’রা। তেমনি ভুলতে পারেনি তখনকার ভারতীয় দলের প্লেয়ার সাবা কারিম, সুনীল যোশীরা। এতদিন পরে এসেও সেই ম্যাচের স্মৃতিটা এখনো সতেজ এবনং প্রাণবন্ত। ক্রিকেট ম্যাগাজিন ক্রিকেট মান্থলিতে সেই ম্যাচের স্মৃতিচারণ করেছেন সেই ম্যাচে প্রতিনিধিত্বকারী প্লেয়ার’রা।

প্রথম টেস্ট ম্যাচের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আমিনুল ইসলাম বলেন,,

“সময়টা অনেক রোমাঞ্চকর ছিলো, এই ফরম্যাটে আমাদের জ্ঞান খুব কম ছিলো। আমরা ওয়ানডে ক্রিকেট সম্পর্কে জানতাম এবং সেক্ষেত্রে একাদশ মানেই দুজন পেসার, তিন জন স্পিনার, একজন উইকেটরক্ষক এবং পাঁচজন ব্যাটসম্যান। টেস্ট ম্যাচের কিছুদিন আগে আমরা ঢাকা আসি, আফ্রিকা সফরটা আমাদের জন্য খুব বাজে ছিলো যেখানে নাইরোবিতে আমরা আইসিসি নক আউট টুর্নামেন্ট থেকে দ্রুত বাদ পড়ে যাই।

__
বাংলাদেশের জন্য যেহেতু প্রথম সেহেতু হারানোর ছিলো না কিছুই, উৎসবের আমেজে যেভাবে শুরু করার কথা সেভাবেই হয়েছিলো কিন্তু প্রতিপক্ষ ভারতের কি অবস্থা ছিলো তখন? তখনকার দলীয় স্পিনারের ভুমিকায় থাকা সুনীল যোশী বলেন,,

“আমি এটা বলবো না যে আমরা সেই টেস্ট ম্যাচ নিয়ে খুব বেশি সিরিয়াস ছিলাম, ঢাকা আসার আগে আমরা কলকাতায় ২ দিন অনুশীলন করেছিলাম সেখানে আমাদের পরিকল্পনা সাজিয়েছি তাছাড়া স্বাভাবিকভাবেই আমরা প্রস্তুত ছিলাম। একটা সময় শচীন বলে যে, আমাদেরকে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে, হ্যাঁ এটা ওদের প্রথম টেস্ট ম্যাচ কিন্তু আমাদেরকে ভালো খেলতে হবে ম্যাচটা জেতার জন্য। সৌরভ তখন নতুন অধিনায়কত্ব পায় এবং সেও খুব সিরিয়াস ছিলো। সে আমাদেরকে বলেছিলো মনোযোগী হতে কারন সে তার অধিনায়কত্বের অধ্যায় টা জয় দিয়ে শুরু করতে চায়।

__
দেশের ইতিহাসে প্রথম টেস্ট, সেই ম্যাচের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় টস জিতেই নিলেন ব্যাটিং। উত্তেজনায় ভরপুর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন,,

“এটা একটা অনুষ্ঠানের মত ছিলো। শুরুর আগে ছোটখাটো একটা অনুষ্ঠান হয় যেখানে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি কিছু সিনিয়র ক্রিকেটার ছিলো। আমি বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলাম এবং দেশের ক্রিকেট ২য় ধাপে পদার্পণ করেছিলো অসাধারণ একটা অনুভূতি ছিলো। আমি অতটা নার্ভাস ছিলাম না, তবে আমরা কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের সাথে পরিচিত ছিলাম না। আমরা তখন বছরে কয়েকটা ওয়ানডে ম্যাচ খেলতাম সে হিসেবে সামনে যাওয়ার জন্য আমাদের বড় পদক্ষেপ ছিলো ম্যাচটা।

আমাদের পরিকল্পনা ছিলো উভয় ইনিংসেই ভালো ব্যাট করা। যদিও আমরা অভিজ্ঞ ব্যাটিং লাইন আপের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলাম তারপর ও আমাদের বোলিং ডিপার্টমেন্ট নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, তাছাড়া আমরা আমাদের পরিচিত পরিবেশে খেলেছিলাম। এডি বার্লো আমাদের সাথে তার অনেক অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলো অসুস্থতার কারনে সে না থাকলেও তার প্রভাব ছিলো আমাদের দলে।

__
দুই দল মিলে ১৪ জন খেলোয়াড়ের অভিষেক হয় সেদিনের ম্যাচে, বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে প্রথম বল মোকাবেলা করা শাহরিয়ার হোসাইন প্রথম টেস্টের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন,,

“দেশের হয়ে টেস্টে প্রথম বল মোকাবেলা করা এটার যে কেমন অনুভূতি তা প্রকাশ করাটা কঠিন, এই অর্জনটা আমার থেকে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। আমি আমার সাদা জার্সি এবং টেস্ট ক্যাপ ফ্রেমবন্ধি করে রেখেছি যাতে করে আমার ছেলেমেয়েরা তা দেখতে পারে এবংকি আমি মরে যাওয়ার পরও যাতে তারা এটা দেখে এবং বুঝতে পারে তাদের বাবা কি করেছিলো।

__
বাংলাদেশের হয়ে প্রথম টেস্টে দারুণ এক ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন মি. ফিফটি খ্যাত হাবিবুল বাশার সুমন, প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে বাশার বলেন,,

“আমার কান থেকে তখন ধোঁয়া বের হচ্ছিলো, নিজের মধ্যে অনেক কিছু কাজ করছিলো। টেস্ট ক্রিকেট ভিন্ন বলের খেলা, তাই না? তাছাড়া তাদের বোলিং আক্রমণ ও খুব ভালো ছিলো, সবমিলিয়ে কিছুটা বিভ্রান্ত ছিলাম। আমরা তখন অনেক উপদেশ পেয়েছিলাম, বল ছেড়ে দিবা, রক্ষণাত্মক খেলবা, ৬ ঘন্টা ব্যাট করে আসবা। আমি আসলে আমার স্বভাবত খেলা খেলেছিলাম, যত দিক থেকে যত উপদেশ আসতেছিলো আমি সব শুনতে চাইনি। আমি মনে করি আমার কানের কাছে আমাদের কোচ এডি বার্লো থাকলে আমি সেঞ্চুরি করে ফেলতাম। তবে সেদিন ৭১ রানে আউট হওয়ায় আমি আফসুস করিনি, অভিষেকে সেঞ্চুরি করতে পারলে অবশ্যই ভালো লাগতো তবে ক্যারিয়ারে এরপর অনেকবার সেঞ্চুরি মিস হয়েছে যেগুলোর জন্য আফসুস হয়। আমি সেই ইনিংস খেলে দারুণ খুশি হয়েছিলাম, নিজেকে আশ্বস্ত করতে পেরেছি যে আমি এই লেভেলে খেলতে পারবো এবং এটাই আমার পরের ৪৯ টেস্টের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।

__
৪৪ রানের মাথায় ২ উইকেট যাওয়ার পর ক্রিজে আসে বাশার, খেলেন ৭১ রানের কার্যকরী ইনিংস। বাশারের ইনিংস বর্ণনা করতে গিয়ে সেঞ্চুরি পাওয়া আমিনুল ইসলাম বলেন,,

“বাশার যেভাবে ব্যাটিং করছিলো তাতে মনে হয়েছিলো সে ঢাকা প্রিমিয়ারলীগ খেলছে। সে শ্রীনাথ, আগারকার মুরালি কার্তিক’দের সামনে খুব সাবলীলভাবে ব্যাটিং করেছে। আমি তাকে দেখে আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলাম তবে আমি চিন্তিত ছিলাম ও যেভাবে শট খেলছিলো যেকোন সময় সে আউট হতে পারে। তার সাবলীল ইনিংসটাই শেষ পর্যন্ত আমাদেরকে ৪০০ রান পর্যন্ত যাওয়ার কাজটা সহজ করে দেয়।

প্রথম দিন শেষে যখন আমি আর রফিক হোটেলে ফিরে যাই তখন গাঙ্গুলির সাথে লিফটে দেখা হলে সে খোঁচা মেরে বলে, সকালে নতুন বল নেওয়ার আগে আমাদের সব রান করে নেওয়া উচিত, তারা ধরেই নিয়েছিলো আমরা দ্রুত অল আউট হয়ে যাবো।

__
আমিনুল ইসলামের ১৪৫ এবং হাবিবুল বাশার সুমনের ৭১ রানে ভর করে ৪০০ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ভারতের সফল বোলার সুনীল যশী, ৪৫.৩ ওভারে ১৪২ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। বাংলাদেশের ইনিংস সম্পর্কে বলতে গিয়ে ভারতীয় উইকেটরক্ষক সাবা কারিম বলেন,,

“তারা প্রথম ইনিংসে যে রান সংগ্রহ করেছিলো তা একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিলো, জহির ভালো প্রভাব বিস্তার করেছিলো, কাঁধের ইঞ্জুরির কারনে আনিল কুম্বলে ছিলো না তবে আমাদের যোশী এবং মুরালি কার্তিক থাকার কারনে ভালো আক্রমণ করা গেছে। তারা যে ৪০০ রান করেছে সেখানে অনেক ভালো প্রচেষ্টা ছিলো, কিন্তু আমাদের ব্যাটিং লাইন আপ অনেক লম্বা এবং অভিজ্ঞ সম্পন্ন ছিলো। সে হিসেবে আমরা জানতাম যে আমরা ম্যাচে ফিরতে পারবো।

__
নিজেদের সংগ্রহ যখন ৪০০ রান তখন প্রতিপক্ষ দল নিয়ে কি চিন্তা করেছিলো ক্যাপ্টেন দুর্জয়? তারমতে,,

“৪০০ রান করার পর আমরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠলাম, এটা আমাদের প্রত্যাশাকেও অতিক্রম করেছে। আমরা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামকে ভালোভাবে চিনতাম এবং উইকেট কেমন আচরণ করবে সে সম্পর্কেও ভালো ধারণা ছিলো।

__
স্বাগতিক দল ৪০০ রান করার পরও ভারতীয় দলের সফল বোলার সুনীল যোশী, বাংলাদেশ নিয়ে বামহাতি এই অর্থোডক্স বোলারের প্ল্যান কি ছিলো সেটা বর্ণনা করে যোশী বলেন,,

“সৌরভ আমাকে বলেছিলো উভয় ইনিংসেই আমাকে অনেক ওভার করতে হবে, এক প্রান্ত থেকে বল করে যাও। এভাবেই প্লেয়ার এবং অধিনায়কের সম্পর্ক শুরু হয়েছিলো, সে আমার উপর আস্থা রেখেছিলো। সে অনেক রিপোর্টারকেও বলেছে যে আমি এত চাপ নিতে পারবো সে আশা করেনি।

বোলিংয়ে সফল যোশী হাল ধরেছিলো ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রেও, অধিনায়ক গাঙ্গুলির সাথে ১২১ রানের অনবদ্য জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যায় সুবিধাজনক অবস্থানে। মাত্র ৮ রানের জন্য মেইডেন সেঞ্চুরি মিস করা যোশী বলেন,,

“৯২ রানে আউট হওয়া আমার জন্য দুর্ভাগ্যজনক ছিলো, আল শাহরিয়ার রোকন ভালো ক্যাচ ধরেছিলো। আমি যখন বাংলাদেশে কোচ হিসেবে যাই তখন ওর সাথে দেখা করেছি এবং ওই ক্যাচ ধরার জন্য বকাঝকা করেছি, কারন সেটা না নিলে আমি সেঞ্চুরি করে ফেলতাম। হতে পারতো পাঁচ উইকেট এবং সেঞ্চুরি করার কীর্তি। সে শুধুমাত্র হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো আর বল আটকে গেছে, আমি ৯০ এর ঘরে কিছুক্ষণ আটকে ছিলাম এবংকি স্ট্রাইক ও পাচ্ছিলাম না। আমি অজিত আগারকারকে বলেছি, এদিকে আসো আমাকে স্ট্রাইক দাও। বল অনেক ঘুরতেছিলো তখন সেজন্য সে আমাকে বলে, না যোশী এত সহজ হবে না, চিন্তা করো না দেখা যাক কি হয়।

__
বাংলাদেশের হয়ে সেদিনের ব্যাটিং স্টার যদি হয়ে থাকে আমিনুল ইসলাম অন্যদিকে বোলিং বিবেচনায় এগিয়ে থাকবে অধিনায়ক দুর্জয়। ১৩২ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট নিয়ে দুর্জয় তখন সপ্তম বোলার হিসেবে অভিষেকে ৫ উইকেট নেওয়ার গৌরব অর্জন করে নেয়। জায়গা করে নেয় বিলি মিডউইন্টার, টম ক্যান্ডেল, আলফ্রেড শাও, আলবার্ট রোজইনেজ, মোহাম্মদ নিসার এবং জন ট্রাইকোসদের সাথে। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে দুর্জয় বলেন,,

“দ্বিধাহীন ভাবে এটা আমার সেরা পারফরমেন্স ছিলো পাশাপাশি আমি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলাম সেক্ষেত্রে ক্রিকেটে এটাই আমার সেরা দিন ছিলো। মানুষ যখন আমাকে সেই ম্যাচের ভিডিও পাঠায় আমি মাঝে মধ্যে ওই ম্যাচের ভিডিও ক্লিফ দেখি, তাছাড়া আমার বড় ছেলেও আমাকে দেখায় মাঝেমাঝে।

__
প্রথম ইনিংসে প্রতিপক্ষের ৪০০ রান! সদ্য অধিনায়কত্ব পাওয়া সৌরভের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিলো তখন? কি প্ল্যান নিয়ে আলাপ হয়েছিলো প্যাভিলিয়নে? উইকেটরক্ষক সাবা কারিমের মতে,,

“সৌরভ খুব শান্ত ছিলো, তার মধ্যে কোন আতঙ্ক দেখিনি এবংকি অন্য সিনিয়র প্লেয়ারদের মধ্যেও তেমন কিছু ছিলো না। মাঠে কিছু জিনিস কাজ করেছে কিছু করেনি তবে লিড পাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো কারন আমরা ম্যাচে পিছিয়ে পরতে চাইনি। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এটা ধরে রাখতে চেয়েছিলাম, ততক্ষনে উইকেট ও খারাপ হতে শুরু করেছে এবং স্পিনাররা সুবিধা পেতে শুরু করেছিলো। আমরা ওদেরকে যত দ্রুত সম্ভব অল আউট করতে চেয়েছিলাম।

__
প্রথম ইনিংসে যেখানে ৪০০ রানের পাহাড় দ্বিতীয় ইনিংসে সেখানে উলটো চিত্র! ৪৬.৩ ওভারে মাত্র ৯১ রানে অল আউট হয় দুর্জয়ের বাংলাদেশে। প্রথম ইনিংসে যারা এত সাবলীল ব্যাটিং করে বাউন্ডারি ছাড়া করেছে জহির খান, অজিত আগারকারদের ২য় ইনিংসে এসে কিসের চাপে ভেঙ্গে পড়েছে তারা? অধিনায়কের ভাষ্যমতে,,

“আসলে না ছিলো মানুষিক অস্থিরতা না ছিলো ক্লান্তি, আমরা অত্যাধিক বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম যে আমরা প্রথম ইনিংসে যা করেছি দ্বিতীয় ইনিংসেও সহজে সেটা করতে পারবো। টেস্ট ম্যাচের পরিবেশটাকে আমরা উপভোগ করেছিলাম, কিন্তু আমরা দ্বিতীয় ইনিংসের মত কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। টেস্ট ম্যাচের গতিপথ আধা ঘন্টাতেই পরিবর্তন হতে পারে এবং আমাদের সাথে এটাই হয়েছিলো।

__
দুই ইনিংস মিলিয়ে ভারতীয় স্পিনার সুনীল যোশীর ঝুঁলিতে ৮ উইকেট, পিচ কি তাহলে বোলিং সহায়ক ছিলো? না, প্রথম ইনিংসেই যখন দলীয় রান ৪০০ রান পর্যন্ত যায় তখন এমন কিছু বলার অবকাশ নেই। সুনীল যোশী বলেন,,

“আমরা আশা করেছিলাম এটা স্পিন ফ্রেন্ডলি পিচ হবে কিন্তু না বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের পিচ এমন ছিলো না। খেলাটা যদি মিরপুরে হতো তাহলে দুই অথবা তিন দিনে খেলা শেষ হতে পারতো। এখানে ধীর গতির টার্ন ছিলো, এজন্যই আমাকে প্রথম ইনিংসে ৪৫.৩ ওভারের ম্যারাথন স্পেল করতে হয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে পিচে আরও বেশি টার্ন পাওয়া শুরু হয়, আমি একটি বল করার পর বল লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে পিচড করে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে দিয়ে কেটে গিয়ে অতিরিক্ত চার হয়ে যায়, স্লিপে থাকা রাহুল এবং উইকেট কিপার সাবা কারিম বিভ্রান্ত হয়ে যায়।

__
চতুর্থ দিনের চা বিরতির পর ভারত তাদের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় এবং ৯ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ভারতীয় উইকেটরক্ষক সাবা কারিম বলেন,,

“আমরা বাংলাদেশের সাথে কিছু সংখ্যক ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলাম, আমরা জানতাম তাদের সামর্থ্য আছে। তারা একেবারে নতুন কোন দল ছিলো না, আমাদের বিশ্বাস ছিলো যে তারা ভালো লড়াই করবে যেহেতু আমরা বাংলাদেশের মাটিতেই খেলছি। তারপর কিন্তু সেটাই হলো, তারা প্রথম ইনিংসে আমাদের সাথে সমানে সমানে লড়াই করেছে এবং অবশেষে আমরা সহজে জয় পাই।

__
টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের পায়ের তলার মাটি খুঁজে পেতে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে, টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পাঁচ বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশ। প্রথম ৪০০ রানের পর দ্বিতীয়বার ৪০০ রান করতেও অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় চার বছর। এক দশকেই ১০০ রানের নিচে অল আউট হয়েছে সাতবার, ২০০৪ সালে ইন্ডিয়ার বিপক্ষে আশরাফুল ১৫৮* রানের ইনিংস খেলার আগ পর্যন্ত আমিনুল ইসলামের ১৪৫ রানই ছিলো সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।

সোর্সঃ The Cricket Monthly

মতামত জানান :