তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ! ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছ থেকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে বাংলাদেশের পক্ষে ব্যাট হাতে ইনিংসের উদ্ভোদন করতে আসেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস! ইনিংসের প্রথম ওভারেই ব্যাক্তিগত শূন্য রানে আলজারি জোসেফের প্রথম শিকার হয়ে লিটন দাস সাজঘরে ফিরলে বাংলাদেশের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে।
লিটনের পর ক্রিজে আসেন নাজমুল হুসাইন শান্ত। তামিমের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৩৭ রানের পার্টনারশিপ গড়লেও ব্যাক্তিগত ২০ রানে কাইল মায়ারসের বলে সাজঘরে ফিরেন নাজমুল হুসাইন শান্ত।শান্তের পর ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান! তৃতীয় উইকেট জুটিতে তামিম-সাকিব মিলে গড়েন ৯৩ রানের পার্টনারশিপ! ব্যাক্তিগত ৬৪ রানে আলজারি জোসেফের দ্বিতীয় শিকার হয়ে তামিম ইকবাল সাজঘরে ফিরলে বাংলাদেশের তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে।
তামিমের পর ক্রিজে আসেন মুশফিকুর রহিম! চতুর্থ উইকেট জুটিতে সাকিব-মুশফিক গড়েন ৪৮ রানের পার্টনারশিপ। ব্যাক্তিগত ৫১ রানে রেইমন রেইফারের প্রথম শিকার হয়ে সাকিব আল হাসান সাজঘরে ফিরলে বাংলাদেশ তাদের চতুর্থ উইকেটটি হারায়।সাকিবের পর ক্রিজে আসেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ! মুশফিক-রিয়াদ মিলে গড়েন ৭০ রানের দুর্দান্ত পার্টনারশিপ! ব্যাক্তিগত ৬৪ রানে রেইমন রেইফারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে মুশফিকুর রহিম সাজঘরে ফিরলে তাদের পার্টনারশিপের ইতি ঘটে।
মুশফিকের পর ক্রিজে আসেন সৌম্যেন্দ্রনাথ সরকার। শেষ দিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সাথে ইনিংস শেষ করে যেতে চাইলেও সৌম্য সরকার রান আউটের ফাদে পড়ে সাজঘরে ফিরেন ব্যাক্তিগত ৭ রানে।এরপর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে নিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বাংলাদেশের ইনিংসের সমাপ্তি করে আসেন।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে ব্যাট হাতে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৬৪(৪৩)* রান, মুশফিকুর রহিম ৬৪(৫৫) রান, তামিম ইকবাল ৬৪(৮০) রান ও সাকিব আল হাসান ৫১(৮১) রান করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আলজারি জোসেফ ও রেইমন রেইফার ২টি করে উইকেট এবং কাইল মায়ারস ১টি উইকেট নেন।
২৯৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ব্যাট হাতে ইনিংসের সূচনা করতে ক্রিজে আসেন কেজরন ওটলি ও সুনিল এম্ভ্রিস! দলীয় ৭ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ১ রানে কেজরন ওটলিকে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে ইনিংসে নিজের প্রথম উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজুর রহমান।
ওটলির পর ক্রিজে আসেন এনক্রোমাহ বন্নার!এব্রিস-বন্নার দ্বিতীয় জুটিতে ২৩ রান যোগ করতে না করতেই আবারো ক্যারিবিয়ান শিবিরে আঘাত আনেন মুস্তাফিজুর রহমান! ফিরিয়ে দেন আরেক ওপেনার সুনিল এম্ব্রিস্কে! এম্ব্রিসের পর ক্রিজে আসেন কাইল মায়ারস! নামের পাশে ১১ রান যোগ করেই মেহেদি হাসান মিরাজের বলে সাজঘরে ফিরেন কাইল মায়ারস।
মায়ারসের পর ক্রিজে আসেন জেসন মোহাম্মদ! চতুর্থ উইকেট জুটিতে বন্নার-জেসন যোগ করেন ৩২ রান! তাদের পার্টনারশিপের বাধা হয়ে দাড়ান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন! ব্যাক্তিগত ১৭ রানে জেসন মোহাম্মদকে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে ইনিংসে নিজের প্রথম উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
জেসনের পর ক্রিজে আসেন রোভম্যান পাওয়েল! পাওয়েল ক্রিজে আসার পরপরই নিজের উইকেট হারান এনক্রোমাহ বন্নার! ব্যাক্তিগত ৩১ রানে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি! বন্নারের পর ক্রিজে আসেন জাহমার হ্যামিল্টন! ৬ষ্ট উইকেট জুটিতে পাওয়েল-হ্যামিল্টন ৩৪ রান যোগ করার পরপরই ব্যাক্তিগত ৫ রানে জাহমার হ্যামিল্টনকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে ম্যাচে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
হ্যামিল্টনের পর ক্রিজে আসেন রেইমন রেইফার! রেইফার-পাওয়েল তাদের জুটিতে গড়েন ৩৭ রান। ব্যাক্তিগত ৪৭ রানে রোভম্যান পাওয়েলকে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে তাদের পার্টনারশিপের ইতি ঘটান সৌম্য সরকার। পাওয়েলের পর ক্রিজে আসেন আলজারি জোসেফ! ক্রিজে এসে নামের পাশে ১১ রান যোগ করে রান আউটের ফাদে পড়ে সাজঘরে ফিরেন আলজারি জোসেফ। জোসেফের পর ক্রিজে আসেন আকিল হুসাইন! ক্রিজে এসে ব্যাক্তিগত ১ রানে সাইফউদ্দিনের তৃতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান আকিল হুসাইন।
আকিলের পর ক্রিজে আসেন কেওন হার্ডিং! হার্ডিং ক্রিজে আসার পরপরই রেইমন রেইফারকে ব্যাক্তিগত ২৭ রানে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অলআউট করতে সাহায্য করেন তাসকিন আহমেদ।
শেষ পর্যন্ত ৪২.৪ ওভারে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ! ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে রোভম্যান পাওয়েল ৪৭(৪৯) রান, এনক্রোমাহ বন্নার ৩১(৬৬) রান, রেইমন রেইফার ২৭(৪৬) রান ও জেসন মোহাম্মদ ১৭(৩৬) রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৩ উইকেট, মেহেদি হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমান ২টি করে উইকেট, সৌম্য সরকার ও তাসকিন আহমেদ ১টি করে উইকেট নেন।
এবার টেনেটুনে দেড়শো পেরিয়েছে উইন্ডিজরা.. তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ১২০ রানের জয়, দ্বিতীয়বার ক্যারিবিয়ানদের হোয়াইটওয়াশ!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ২৯৭/৬ ( তামিম ৬৪, মুশফিক ৬৪, মাহমুদউল্লাহ ৬৪*, সাকিব ৫১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৭৭/১০ ( পাওয়েল ৪৭, বনার ৩১) সাইফউদ্দিন ৩/৫১, মোস্তাফিজ ২/২৪, মিরাজ ২/১৮
ফলাফল: বাংলাদেশ ১২০ রানে জয়ী।
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম।
ম্যান অফ দ্যা সিরিজ: সাকিব আল হাসান।
অভিনন্দন বাংলাদেশ।