ঢাকা বিভাগের সাইফের ব্যাটে এসেছিলো টুর্নামেন্টের প্রথম শতক, দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুল অপু ঘূর্ণিতে এলো টুর্নামেন্টের প্রথম পাঁচ উইকেটশিকার ও ম্যাচে ১০ উইকেটশিকার।
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক নাদিফ চৌধুরী। দুই অপেনার ডাক আউট হলে মাহিদুল অংকনের সাথে সাইফ হাসান ম্যাচের হাল ধরেন। জুটিতে ৭৯ রান যোগ করে আউট হন অংকন। এরপর ক্রিজে এসে তাইবুর ও শুভাগত কেউই বেশীক্ষণ টিকেনি। তবে একপ্রান্তে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন সাইফ হাসান। অধিনায়ক নাদিফ চৌধুরীকে নিয়ে এগুতে থাকেন তিনি। সদ্য শেষ হওয়া আয়ারল্যান্ডের সাথে সিরিজের মতোই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ১১ চার,৫ ছয়ে সাইফ হাসান তুলে নেন টুর্নামেন্টের প্রথম শতক।
এরপর ফিফটির দেখা পান নাদিফ। দুজনের গড়েন ১৩৭ রানের বড় জুটি। ৮১ তম ওভারে আলাউদ্দিন বাবুর জোড়া আঘাতে দুই সেট ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরেন। এরপর নাজমুল অপু আউট হলেও আরাফাত সানি জুনিয়র ও সুমন ইসলাম নিরাপদে দিন শেষ করেন। আলাউদ্দিন বাবু নিয়েছেন ৪ উইকেট।
২৯৭-৮এ দ্বিতীয় দিন শুরু করে ঢাকা। নবম উইকেটে আরাফাত সানি জুনিয়র ও সুমন ইসলাম ৬৩ রানে জুটি গড়েন। সুমন আউট হবার কিছুক্ষণ পরই তাদের সবকটি উইকেটের পতন ঘটে। ইনিংস থামে ৩৬৫-১০ রানে।
ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪ ওভারেই ৩ উইকেট হারায় রংপুর। ২৬ ওভারে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৪১-৫ এ। পঞ্চম উইকেট জুটিতে নাসির মাহমুদুলকে সাথে নিয়ে ৮৪ রানের জুটি গড়েন। মাহমুদুল আউট হলেও একপ্রান্ত আগলে রাখেন নাসির। আকবরের সাথে ৩১ রানের জুটি শেষ হয় দ্রুতই। এরপর আলাউদ্দিনকে সাথে নিয়ে ১৭১ রানে পিছিয়ে থেকে দিনের খেলা শেষ করেন নাসির। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে হাজার রান করার প্রতিশ্রুতি দেয়া নাসির অপরাজিত থাকেন ৯৩ রানে।
আগেরদিন ঢাকার ৩৬৫ রানের জবাবে রংপুরের ১৯৪ সংগ্রহে শেষ হয়েছিলো খেলা। পরদিন শুরুতেই সেঞ্চুরি তুলে নেন নাসির হোসাইন। অন্য কেউই ভালো করতে না পারায় ২৩০ রানে থামে তাদের প্রথম ইনিংস। লিড পেয়ে ঢাকা ব্যাটিংয়ে নামে ভালো টার্গেট দেয়ার লক্ষ্যে, তবে দুই স্পিনার নাসির-সোহরাওয়ার্দীর ঝলকে মাত্র ১২৮ রানে অল আউট হয় ঢাকা। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৬টি ডিসমিসাল করে রংপুরের উইকেটরক্ষক আকবর আলী। ২৬৪ রানের টার্গেটে রংপুরের দুই ওপেনারই ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর ম্যাচে ফেরার লড়াইয়ে সোহরাওয়ার্দী -মাহমুদুল রক্ষণাত্মক খেলতে থাকে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলীয় ৩৫-২ রানে দিনের খেলা শেষ হয়। জয়ের জন্য শেষদিনে ২২৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামে রংপুর। তবে নাজমুল ইসলাম অপুর স্পিন ঘূর্ণিতে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। একপ্রান্ত আগলে রাখার চেষ্টায় থাকা নাঈম করেন ৬১। মাঝে আকবরকে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ গড়তে চেয়েছিলেন নাঈম, তবে আকবর ২৮ রানে আউট হবার কিছুক্ষণ পর নাঈমও ফিরেন। ১৮৩ রানে ইনিংস সমাপ্ত হয় রংপুরের৷ টুর্নামেন্টের প্রথম পাঁচ উইকেটশিকারের কীর্তি গড়েন নাজমুল অপু। দুই ইনিংস মিলিয়ে তার ঝুলিতে ১০ উইকেট!
প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট, মোট ১০ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার খেতাব অর্জন করেন নাজমুল অপু।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
ঢাকা (প্রথম ইনিংস): ৩৬৫-১০।
সাইফ-১২৭, নাদিফ-৬৯;আলাউদ্দিন বাবু- ৪৬/৪।
রংপুর (প্রথম ইনিংস): ২৩০-১০।
নাসির-১১৫; নাজমুল অপু- ৮৯/৪।
–
ঢাকা(দ্বিতীয় ইনিংস): ১২৮-১০।
জুনিয়র সানি- ৪০; নাসির- ২১/৪, শুভ- ২৬/৩।
রংপুর (দ্বিতীয় ইনিংস): ৩৫-২। নাঈম-৬১, আকবর-২৮;নাজমুল-৬৪/৬, তাইবুর-২১/২।
ফলাফলঃ ঢাকা ৮০ রানে জয়ী।