১৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লোহার জুতা পেরিয়ে জাতীয় দলের স্কোয়াডে

প্রতিবেদক
Marajul Islam
শুক্রবার, ৯ এপ্রিল , ২০২১ ৩:৪৯

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজের স্কোয়াডে প্রথমবারের মত জাতীয় দলের স্কোয়াডে সুযোগ পান মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। মূলত নেট বোলার হিসেবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে স্কোয়াডে থাকলেও যেই কোন তরুণ খেলোয়াড়ের জন্য প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা রোমাঞ্চকর। মুগ্ধর বেলায়তার ব্যতিক্রম নয়। একটা সময় পায়ে সমস্যার কারণে লোহার জুতো তাকে পড়ানো হতো,সেখান থেকে এখন তিনি জাতীয় দলের স্কোয়াডে।

সময়টা ৩০ জুন, ২০০০। শুক্রবারের এই দিনে মা পারভীন বেগমের কোল আলো করে জন্ম নেন একটি ছোট্ট শিশু। স্বাভাবিক জন্ম হলেও ৩ বছর বয়সে পা মুড়িয়ে যেতে শুরু করে রংপুরের মিঠাপুকুরে জন্ম নেয়া মুকিদুল ইসলামের। ডাক্তার পরিয়ে দেন লোহার জুতা। শর্ত ছিল এমন যে, দৌড়ালে বা জুতা খুললে বরণ করতে হবে পঙ্গুত্ব। ৫ বছরের পর লোহার জুতো খুললেও ছিলো দৌড়ানোর নিষিদ্ধ সতর্কতা।

পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াকালীন মুকিদুল ইসলামের কাছে সুযোগ আসে বিকেএসপিতে ভর্তি হবার। তার বাবার শত কষ্ট হলেও অনেক ধার দেনা করে ছেলেকে ভর্তি করান বিকেএসপিতে। বড় অঙ্কের ধারের বিনিময়ে ছেলেকে দেখতে চান দেশের সেরা আইকনদের সাথে। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠে আজকের এই অবস্থানে পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ।

একটা সময় অফস্পিন দিয়ে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন মুগ্ধ। ৬ ফুট ১ ইঞ্চি উচ্চতার মুগ্ধ নিজের উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে শুরু করেন পেস বোলিং। অনুর্ধ্ব-১৪ থেকে খেলেছেন অনুর্ধ্ব ১৯ পর্যন্ত। গতি দিয়ে সবার নজর কেড়েছেন তিনি। তবে এখন পর্যন্ত তার আফসোস হয়ে থাকবে ২০১৮ অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ইনজুরির কারণে খেলতে না পারা। তবে তারপর বিপিএলে নিজের জাত চিনান। বিপিএলের পর করোনা মহামারীর কারণে বেশী ম্যাচ খেলা হয় নি। তবে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ, বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট থেকে সর্বশেষ জাতীয় ক্রিকেট লীগে সব জায়গাই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। এখন পর্যন্ত ৭ টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ, ১০ টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ এবং ১৬ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন মুগ্ধ। সেখানে তার শিকার যথাক্রমে ২৬, ১৪ এবং ১৭ উইকেট। তার খেলা সর্বশেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে শিকার করেন ১২ উইকেট।

গতি দিয়েই নজর কাড়েন মুগ্ধ

মুকিদুলের প্রধান অস্ত্র হলো গতি, সাথে হালকা মুভমেন্ট। এটা ঠিক জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার মতো পারফর্মেন্স এখনো সে করতে পারে নি। ২১ সদস্যের স্কোয়াড দেওয়া না লাগলে হয়তো সে জাতীয় দলে ডাকও পেত না। জাতীয় দলে যেকোনো ভাবে ডাক পাওয়া হউক না কেন সবার স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলের ড্রেসিং রুম শেয়ার করা। মুগ্ধও পেলেন সেই সুযোগ, সামনে একদিন মাথায় তুলবেন জাতীয় দলের ক্যাপ।

মতামত জানান :