মানুষ স্বপ্ন দেখে, স্বপ্নকে তাড়া করে; পরিশ্রম আর সাধনায় স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে, অতঃপর জয়োল্লাসে মাতে। বারামুন্ডিস নামে পরিচিত পাপুয়ানিউগিনিও স্বপ্ন দেখেছিলো বিশ্বকাপ খেলার। দিনশেষে তারাও পেরেছেন স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে। লক্ষ্য এবার সেরা ১২ তে পৌঁছানোর….

(Photo by Kai Schwoerer-ICC/ICC via Getty Images)
১৯৭৩ সালে আইসিসির সদস্যপদ লাভ করলেও কখনোই বিশ্বকাপ খেলা হয়নি পাপুয়া নিউগিনির। অথচ পূর্ব এশিয়া -প্যাসিফিক অঞ্চলের শক্তিশালী দলের তকমা পাওয়ার পাশাপাশি আঞ্চলিক প্রতিযোগীতায় রাজত্ব চালাচ্ছেন তাঁরাই! অবশেষে আঞ্চলিক গন্ডি পেরিয়েছেন, মর্যাদা লাভ করেছেন বিশ্বকাপ খেলার। সেটিও প্রায় ৪৮ বছর পর।
কিন্তু পাপুয়া নিউগিনির পুরোনো ইতিহাস তাদের পক্ষেই কথা বলে! অথচ তারা নিজ হাতে স্বপ্নকে দূরে ঠেলে দিয়ে ফিরেছিলেন দেশে। ১৯৯৪ আইসিসি ট্রফির প্লেট ফাইনালে পৌঁছালেও ফ্লাইট ইস্যুতে ফিরেছিলো দেশে। এরপর ১৯৯৬ সালে এসিসি ট্রফির সেমিফাইনালে বাংলাদেশের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হলেও ২০০১ সালের প্যাসিফিকা কাপে তৃতীয় ও ২০০২ সালে প্রথমবারের মতো প্যাসিফিকা কাপে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করে দলটি।
সময়ের সাথে সাথে ক্রিকেটে উন্নতি করতে থাকে বারামুন্ডিসরা। কিন্তু বারবার’ই খুব কাছে গিয়ে স্বপ্নকে ছুঁতে না পারাও আক্ষেপে নিমজ্জিত হতে হয়েছিলো তাদের। ২০১১ ও ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ারে তীরে এসে তরী ডুবিয়ে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন ভঙ্গ করেন তারা।
বিশ্বকাপ না খেলার আক্ষেপ থাকলেও ২০১৪ সালে বিশাল সুখবর পায় দলটি। পেয়ে যান ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি স্ট্যাটাস। ২০১৪ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেট খেলতে নেমে হংকংকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শুভ সূচনার পাশাপাশি ২০১৫ সালে নিজেদের প্রঘম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে ২ উইকেটে হারিয়ে উদযাপনে মাতে দলটি। আহ; এ যেনো স্বপ্নের মতো শুরু।
এরপর আর পেছনে ফিরতে হয়নি বারামুন্ডিসদের। সময়ের সাথে সাথে মেলে ধরতে থাকেন নিজেদের। এরপর সুযোগ এসেছিলো ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার। বাছাইপর্বে বেশকিছু বাঁধা পেরিয়ে বারামুন্ডিসরা ঠিকই জায়গা করে নিয়েছে আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। বিশ্বকাপের যে কোনো ফরম্যাটে এবারই প্রথমবার প্রতিনিধিত্ব করবে আসাদের পাপুয়ানিউগিনি। বিশ্বকাপের মূল পর্ব খেলতে হলে উতরে যেতে হবে বাছাই পর্ব।

মূল পর্বে পৌঁছাতে হলে টপকাতে হবে বিশাল বাঁধা। কেননা তাদের গ্রুপে আছে বাংলাদেশ, স্কটল্যান্ড ও স্বাগতিক ওমান। কঠিন বাঁধা পেরিয়ে শেষ ১২ তে জায়গা করে নিতে পারবে কি পাপুয়ানিউগিনি? সেটি সময়ই বলে দিবে।
শেষ ১২ তে জায়গা নিশ্চিত হোক কিংবা না হোক; বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন তো ঠিকই পূরণ হয়েছে আসাদ’দের।