১৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিশ্বকাপ খেলা ‘জাপান ক্রিকেট’ কোথায় দাঁড়িয়ে?

প্রতিবেদক
Arfin Rupok
মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট , ২০২১ ১১:২৬

১৯৮৯ সালে দল গঠনের পর ২০০৫ সালের জুন মাসে এসে আইসিসির সহযোগী সদস্য পদ লাভ করা জাপান ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপও খেলেছে। অংশ নিয়েছিলো ১৯৯৬ এসিসি ট্রফি ও বিশ্ব ক্রিকেট লীগেও। পুরুষ দলের পাশাপাশি গঠন করেছে মহিলা দলও। ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দিতে আয়োজন করেছিলো প্রিমিয়ার লীগ। তবে কি অন্য দেশগুলোর মতো জাপান ক্রিকেটও নিজেদের প্রমাণে মরিয়া? হয়তো তাই।

বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়া! ছবি: ইন্টারনেট।

ঊনিশের হাত ধরে বিশে বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করা জাপান ক্রিকেট এখন কোথায় দাঁড়িয়ে? যেখানে ক্রিকেট ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের নানান প্রান্তে, সেখানে জাপান ক্রিকেট নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছে কতোটা? এইসব জানাতেই আজকের আয়োজন।

বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন পূরন!
(ছবি: জাপান ক্রিকেট)

জাপান ক্রিকেটের শুরুটা ব্রিটিশদের হাত ধরে হলেও ১৯৮০ দশকের আগে খেলাটি সংগঠিত ছিল না। অবশেষে ১৯৮৯ সালে আইসিসির অনুমোদিত সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করা জাপান ক্রিকেট সামনে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুঁজে পায়। সামনে এগিয়ে যাওয়ার মিশনে জাপান ক্রিকেট অংশ নেন ১৯৯৬ সালের এসিসি ট্রফিতে, যদিও শুরুটা সুখকর ছিলোনা তাদের জন্য। এরপর দুই আসরে অংশ নেওয়া জাপান ২০০০ সালে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলকে বিদায় বলে আইসিসির ইস্ট এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিজেদের যুক্ত করেন। পরবর্তী সময়ে তারা এশিয়া এইটস টুর্নামেন্টে অংশ নেয়, এবং সেখানে রানার্সআপ হয়ে দেশে ফিরে আসে।

এভাবেই প্রায় দুই বছর কেটে যায়, জাপানও নিজেদের সাফল্যকে তাড়া করে এগিয়ে যেতে থাকে। সেই লক্ষ্যে ২০০৪ সালে ইস্ট এশিয়া ক্রিকেট চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্ট আয়োজন করে জাপান, যেখানে প্লেঅফে ইন্দোনেশিয়াকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান লাভ করে তারা। মূলত এই টুর্নামেন্টটি ছিলো ২০০৭ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের অংশ! এরপর ২০০৫ সালে আইসিসির সহযোগী সদস্য পদ লাভ করা জাপান ২০০৫ আইসিসি ইএপি ক্রিকেট কাপে অংশগ্রহণ করেন এবং কুক দ্বীপপুঞ্জকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

ইএপি কাপে চ্যাম্পিয়ন তকমা পাওয়া জাপান ২০০৭ সালে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০০৭ আইসিসি ইএপি ক্রিকেট ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে জার্সিতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ক্রিকেট লীগের পঞ্চম বিভাগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও ১২ দলের মাঝে ১০ম স্থানে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করে জাপান! এভাবেই চলতে থাকে তাদের পথচলা। এরমাঝে ১৯৯৬ সালে ব্রুনাইয়ের বিপক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে নিজেদের প্রথম ম্যাচটিও খেলেছিলো তারা।

জাপান; ক্রিকেটে নিজেদের শক্তিমত্তা প্রমাণে মরিয়া। ক্রিকেট নামক নেশায় মত্ত জাপান ক্রিকেটকে লালন করছেন দেশে, পূরণ করেছে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন। হোক না সেটি অনূর্ধ্ব-১৯ দল; তাতে কি? জাপানের পতাকা বিশ্বমঞ্চে উড়েছে তো। ছোটদের হাত ধরে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়া জাপানের পথটা সহজ ছিলোনা মোটেও। বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে খেলতে নামা জাপান নিজেদের প্রমাণ করেছিলেন বেশ, প্রথম তিন খেলায় জয়লাভ করা জাপান অংশগ্রহণ করেছিলো ব্রিটিশ মুলুকে ওয়ানডে যুবাদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে। বিশ্বকাপের মূল পর্বে ভারত-শ্রীলঙ্কার মতো দলের বিপক্ষে খেলা জাপান জয়ের দেখা না পেলেও ক্রিকেটে মেলে ধরার প্রয়াস দেখিয়েছেন নিশ্চিতই!

অ-১৯ বিশ্বকাপ!
(ছবি: জাপান ক্রিকেট)

জাপানে শুধু পুরুষরাই ক্রিকেট খেলেনি, মেয়েরাও খেলেছে। পুরুষদের আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও খেলেছিলো জাপান নারী ক্রিকেট দল। ২০০৩ সালে নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত আইডব্লিউসিসি ট্রফির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পথচলা শুরু হয় তাদের। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে জাপান নারী দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচের সংখ্যা চারটি হলেও জয়ের ঘর শূন্য! ওয়ানডে ফরম্যাটে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ২০০৩ সালে খেললেও টি-২০ ক্রিকেটে ২০১৯ সালে অংশ নিয়েছিলো জাপান নারী দল। সবমিলিয়ে ৯ ম্যাচ খেলা জাপান জয়ের মুখ দেখেছে ৪ ম্যাচে।

জাপান নারী ক্রিকেট দল।
(ছবি: জাপান ক্রিকেট)

এবার ফিরে আসি পুরুষদের ক্রিকেটে। ২০২০ বিশ্বকাপের মূল পর্বের লক্ষ্যে খেলতে নামা জাপান কোয়ালিফায়ার রাউন্ড থেকে বিদায় নিলেও ক্রিকেট থেকে পিছুপা হননি। দেশের উঠতি ক্রিকেটারদের নিয়ে আয়োজন করেছিলো জাপান প্রিমিয়ার লীগ। পাঁচ দলের এই টুর্নামেন্ট বেশ সফলতার সাথেই শেষ করে দেশটি।

জাপান প্রিমিয়ার লীগ!
(ছবি: জাপান ক্রিকেট)

সবমিলিয়ে জাপান ক্রিকেট এগিয়ে চলছে স্বপ্নকে তাড়া করে। পরিশ্রম আর সাধনায় একদিন জাপানও খেলবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ক্রিকেট ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বের নানান প্রান্তে। সূর্যোদয়ের দেশ জাপানেও একদিন ক্রিকেটের বড় কোনো সাফল্য অর্জিত হবে এটাই চাওয়া।

জাপানের নতুন প্রজন্ম!
(ছবি: জাপান ক্রিকেট দলের ইনস্টাগ্রাম আইডি)

,

মতামত জানান :