শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ল্যাথামের বীরত্বের গল্প হয়নি লেখা, নায়কীয়তার জন্ম দিয়েও নায়ক বনে গিয়েছিলেন ফিজ! খুব কাছে গিয়েও অধরা জয়ের দেখা পায়নি সফরকারীরা। ফলাফল পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-০ তে পিছিয়ে। তাই কিউইদের সামনে আগামীকালের ম্যাচটি হতে যাচ্ছে অলিখিত ফাইনাল। অপরদিকে দুই ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করতে মুখিয়ে রিয়াদ বাহিনী। কে হাসবে শেষ হাসি সেটি সময়ই বলে দিবে।
প্রথম ম্যাচে হতাশ করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে যেনো সব আলো নিজের দিকে নিয়ে নিয়েছিলো টম ল্যাথাম। দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে আবারো দলের ত্রাণকর্তায় পরিনত হলেও শেষ হাসি হাসতে পারেননি। তার অপরাজিত ৬৫ রানের ইনিংস শুধু এই সিরিজেই না, মিরপুরে হওয়া গত দুই সিরিজে ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ। একজন যোগ্য সঙ্গি পেলে হয়তো সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনতে পারতেন! কিন্তু সেটি আর সম্ভব হয়নি ফিজের দারুণ বোলিং নৈপুণ্যে।
এর আগে বাংলাদেশের দুই ওপেনার শুরুটা ভালোই করেছিলো, পিচের আচরণ অনুযায়ী ব্যাট করে দীর্ঘদিন পর উদ্বোধনী উইকেটে বড় জুটির দেখে মেলে। যদিও লিটনের বিদায়ের পর ওয়ান ডাউনে খেলতে নামা মুশফিক প্রথম বলে আউট হয়ে সবাইকে হতাশায় ফেলেন। কিন্তু নাইম – রিয়াদের জুটি আবারো ঘুরে দাড়াতে সাহায্য করে বাংলাদেশকে। এবং শেষে সোহান – রিয়াদের ছোট কিন্তু কার্যকরী জুটি বাংলাদেশ কে লড়াই করার মতো পুজি এনে দেয়।
বাংলাদেশী দুই পেসার মোস্তাফিজ ও সাইফ তাদের দ্বিতীয় ঠিক মতো পালন করেছে আরো একবার। মোস্তা-সাইফ জুটি শেষ তিন ওভারে ৩৬ রান ডিফেন্ড করে। অজি সিরিজের শুরুতে দলে না থাকা সাইফ দলে ফিরে এখন পর্যন্ত টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমান করেছে৷
সফরকারী নিউজিল্যান্ড এখন পর্যন্ত সিরিজে নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ। দলের সেরা ব্যাটসম্যান লাথাম প্রথম ম্যাচে নিচে ব্যাট করলেও পরের ম্যাচে তিনে ব্যাট করেছে এবং ফলও ফেয়েছে৷ দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকলেও তার পারফর্মেন্সে তার ছাপ পাওয়া যায়নি। মিরপুরের পিচে যেভাবে ব্যাট করতে হয় লাথামের থেকে অন্য সব কিউই ব্যাটসম্যানদের জেনে নেয়া উচিত। গত ম্যাচে যেভাবে উইল ইয়ং এবং ম্যাকেঞ্জি তাকে সাহায্য করেছে পরের ম্যাচে তেমন করতে পারলে সিরিজে কাম ব্যাক করতে পারবে কিউইরা।
অপরদিকে বাংলাদেশ দুই – শূন্যতে সিরিজে এগিয়ে আছে, আর একটি জয় তাদের সিরিজ জয় নিশ্চিত করে দিবে। তাই পরের ম্যাচে আবারো ভালো ক্রিকেট খেলতে চাইবে টিম টাইগার।
আলোচনায় থাকছে যারা:
নিজের শততম টি২০ ম্যাট খেলতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে কেউ শততম টি২০ ম্য্চ খেলবে, তাই সে নিজের সেরাটা দিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চাইবে। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই রিয়াদের পারফর্মেন্স আশাজাগানো, তাই তাকে স্পটলাইটে রাখা হবে।
নিজের অভিষেক ম্যাচে ব্যাট হাতে গোল্ডেন ডাক দিয়ে শুরু করলেও বল হাতে প্রথম থেকেই উজ্জল রবিন্দ্র। দলের প্রয়োজনের সময় ব্রেকথ্রু থেকে শুরু করে ইকনোমিক বোলিং তাকে অন্যদের থেকে আলাদা রেখে স্পট লাইটে রাখবে।
টিম নিউজ :
বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সিরিজের দুই ম্যাচে জিতে সিরিজে এগিয়ে আছে। দলের সব ক্রিকেটার নিজের পারফর্মেন্স ঠিক রাখায় তৃতীয় ম্যাচে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কম।
নিউজিল্যান্ড দুই ম্যাচ হেরে পিছিয়ে আছে, সম্ভবক দলে পরিবর্তন আসতে চলেছে। ফিন এ্যালেন এবং ম্যাট হেনরিকে সম্ভবত বিশ্রাম দেওয়া হবে এবং স্কট কুগেলেঞ্জি দলে সুযোগ পেতে পারে।
সম্ভাব্য একাদশ:
বাংলাদেশ – মোহাম্মদ নাইম, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নুরুল হাসান সোহান, আফিফ, মেহেদী, সাইফুদ্দিন , মোস্তাফিজ, নাসুম।
নিউজিল্যান্ড – হেনরি নিকলস, উইল ইয়ং, রচিন রবিন্দ্রো, টম লাথাম, টম ব্লান্ডেল, কোল ম্যাকঞ্চি, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, ডগ ব্রেসওয়েল, জ্যাকব ডফি, টিকনার/ বেন সেরস , আজাজ প্যাটেল।
পিচ ও আবহাওয়া :
অবশেষে দীর্ঘদিন পর মিরপুরে কোন দল ব্যাটিং করে ১৪০ রান করেছে। দ্বিতীয় ম্যাচের পিচ ছিলো শক্ত এবং কিছুটা ব্যাটিং বান্ধব। ধারণা করা যায় সিরিজের বাকি ম্যাচেও এমন পিচ পাওয়া যাবে। কবে তৃতীয় ম্যাচে বিপত্তি হতে পারে হালকা বৃষ্টি।
