সিরিজের চতুর্থ ম্যাচ খেলতে আগামিকাল মিরপুরে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে এগিয়ে থাকলেও তৃতীয় ম্যাচে কিউইদের জয় সিরিজে প্রান ফিরিয়ে এনেছে। চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে রয়েছে সিরিজ জয়ের সুযোগ, কিউদের সিরিজে সমতা ফেরানোর লড়াই। তাই সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচ হতে যাচ্ছে চতুর্থ টি২০।
অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকেই ভালো ক্রিকেট খেলছে রিয়াদ বাহিনী। মিরপুরের স্লো পিচে অল্প রানের পুজিতেও বেশ কয়েকটি ম্যাচে জয় ছিনিয়ে এনেছে তারা। সর্বশেষ আট ম্যাচে হার মাত্র দুটিতে। দলের সবাই তাই টেষ্টা করবে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবং সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে। অন্যদিকে অনভিজ্ঞ কিউই দল নিয়েও টম লাথামের দল সর্বশেষ দুই ম্যাচে ভালোই চোখ রাঙ্গিয়েছে টাইগারদের। দ্বিতীয় ম্যাচে অল্প রানের ব্যবধানে হেরে গেলেও তৃতীয় ম্যাচে কিউইদের বোলিং তোপে মুখ থুবড়ে পড়ে টাইগারদের ব্যাটিং লাইন আপ। সর্বশেষ দুই ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তাই কিউরা চেষ্টা করবে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনতে।
বাংলাদেশ দলের প্রথম তিন ম্যাচের একাদশে কোন পরিবর্তন ছিলো না। দলের হয়ে ওপেনিং করেছিলো লিটন ও নাইম। ওয়ান ডাউনে প্রথম ম্যাচে সাকিব খেললেও পরের দুই ম্যাচে শেখ মেহেদী ও মুশফিককে নামানো হয়েছিলো। মিডলে রিয়াদ সোহান আমিফেরা খেলে ছিলো। বল হাতে ছিলো সাইফ মুস্তাফিজ নাসুম। বিশ্বকাপের আগে আর মাত্র দুইটি ম্যাচ আছে বাংলাদেশের, তাই বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন আসবে এবং বিশ্বকাপের আগে স্কোয়াডের সবাইকে পরখ করে নিতে চাইবে টিম ম্যানেজমেন্ট। চতুর্থ ম্যাচে দলে তাসকিনকে দেখা যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে ফলাফল আসতে হলে ভালো খেলতে হবে মুশফিকুর রহীম ও সাকিব আল হাসানকে, দলের অন্যদের থেকে তাদের ব্যাটিং এর উপর বাংলাদেশ বেশি নির্ভরশীল, ওদের ব্যর্থতাই চতুর্থ ম্যাচের ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণ।
কিউইদের জয় ছাড়া কোন বিকল্প নেই, কিউরা তাদের সেই লক্ষে পৌছাতে মরিয়া। তাদের খেলার ধরণেও সেটার ছাপ স্পষ্ট। মিরপুরের পিচে ওরা ঠিক ক্রিকেটই খেলে যাচ্ছে। স্লো পিচে বড় শট খেলার প্রবনতা বাদ দিয়ে মাঠের ফাকা অংশে গুলোকে কাজে লাগিয়ে বাউন্ডারি ও সিঙ্গেলস নির্ভর ব্যাটিং করে যাচ্ছে তারা। তবে আরো ভালো ক্রিকেট খেলতে হলে দলের সবাইকে ভালো ভাবে ব্যাটিং করতে হবে। তৃতীয় ম্যাচেও এক পর্যায়ে তাদের ব্যাটি নড়বড়ে অবস্থায় পৌছে গিয়ে ছিলো। তবে শেষ দিকে দ্রুত কিছু রান তুলে নেয়ার কারণে বিপদ হয়নি। তাই নিউজিল্যান্ডে অবশ্যই চেষ্টা করবে তৃতীয় ম্যাচের ভুল শুধরে এবং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনতে।
আলোচনায় থাকছে যারা :
তামিমের অনুপস্থিতিতে দলের ওপেনিং এর গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্ব রয়েছে লিটন দাসের কাধে। সিরিজে তিন ম্যাচের দুইটিতে ভালো শুরু করার পরেও লিটন ইনিংস লম্বা করতে ব্যর্থ হয়ছে। তবে আশা করা যায় লিটন তার উইকেটের গুরুত্ব উপলব্ধি করে আরো দ্বায়িত্বশীল হবে এবং ভালো ইনিংস খেলবে।
এ্যাজাজ পাটিলের ইকোনমিক বোলিং নিউজিল্যান্ডকে সিরিজে প্রথম জয় এনে দিতে সহায়তা করেছে। বাংলাদেশের স্পিনারদের মতো পাটেলও পিচের পুরোটা সুবিধা লুফে নিয়েছে। সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ ভালো করলে পাটিলের সামনে সুযোগ রয়েছে নিউজিল্যান্ডের টি২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডের অতিরিক্ত সদস্য হবার।
টিম নিউজ:
বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মিডল অর্ডারে শামিমকে সুযোগ দেয়া হতে পারে। সেই সাথে সুযোগ পেতে পারে তাসকিন আহাম্মেদ।
কিউরা সিরিজের প্রথম জয় পেয়ে উচ্ছসিত, সম্ভবত কিউরা দলে পরির্তন আনবে না।
সম্ভাব্য একাদশ :
বাংলাদেশ – মোহাম্মদ নাইম, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নুরুল হাসান সোহান, আফিফ/শামিম পাটোয়ারী , মেহেদী, সাইফুদ্দিন/তাসকিন , মোস্তাফিজ, নাসুম/ তাসকিন আহাম্মেদ ।
নিউজিল্যান্ড – হেনরি নিকলস, উইল ইয়ং, রচিন রবিন্দ্রো, টম লাথাম, টম ব্লান্ডেল, কোল ম্যাকঞ্চি, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, ডগ ব্রেসওয়েল, জ্যাকব ডফি, টিকনার/ বেন সেরস , আজাজ প্যাটেল
পিচ রিপোর্ট ও আবহাওয়া :
সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে রানের দেখা পাওয়া গিয়েছে। পিচে স্পিন থাকলেও ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করলে রান করা অসম্ভব নয়। তবে বরাবরের মতোই পিচে স্পিনারা সুবিধা পাবে। চতুর্থ ম্যাচে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।