ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় একটি খেলা। এটি সাধারণত সেসব দেশেই জনপ্রিয় যেসব দেশ ক্রিকেট খেলে। প্রধানত ভারতীয় উপমহাদেশ, ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা তে অনেক বেশি জনপ্রিয়। এর বাইরে জ্যামাইকান দ্বীপগুলোতেও অনেক জনপ্রিয় এই গোল বলের খেলাটি! যেসব দেশ ক্রিকেট ভালো খেলতে পারেনা, সেসব দেশে এখনো ক্রিকেট ততটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি!
–
আশার কথা ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আইসিসি) জনপ্রিয়তা বাড়াতে কাজ করতেছে বর্তমানে! যদিও তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য-ই। তার উপর মরার উপর খরার খা হয়ে দাড়াচ্ছে বিশ্বকাপের মতো ইভেন্টে দল কমানো! জনপ্রিয়তা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হতে পারে অলেম্পিক, কমনওয়েলথ এর মতো বহুজাতিক ও বৈশ্বিক স্পোর্টস ইভেন্টে অংশগ্রহণ! এক্ষেত্রে বিপুল সংখ্যক দর্শক ক্রিকেট সম্পর্কে জানবে, জনপ্রিয়তা বাড়বে!
–
২০২৪ অলেম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে চলছে আলাপ-আলোচনা! ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এমন আশার বানীও শোনা যাচ্ছে! যদি এটা হয়, ক্রিকেটের বহুজাতিক স্পোর্টস ইভেন্টে এটাই প্রথম অংশগ্রহণ এমনটা নয়! এর আগেও কিছু ইভেন্টের সঙ্গী ছিল ক্রিকেট! এরকম কিছু বৈশ্বিক ও বহুজাতিক স্পোর্টস ইভেন্টে ক্রিকেটের পথচলা নিয়ে কিছু জানাতে চাই পাঠকদের!
আজকে চলুন জেনে নিই অলিম্পিকে ক্রিকেটের পথচলা সম্পর্কে!
–
১৮৯৬ সাল সামার অলিম্পিক! অনুষ্ঠিত হয়েছিল এথেন্সে! এটাই প্রথম অলিম্পিক গেমস যেখানে প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল ক্রিকেট। দুর্ভাগ্যবশত অপর্যাপ্ত দল থাকায় সে মৌসুমে ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। যদি সেটা সম্ভব হতো তবে সেই অলিম্পিকে ক্রিকেট-ই একমাত্র দলীয় খেলা হিসেবে অংশগ্রহণ করতো! দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি!
–
যাহোক আরো চার বছর পরে, ১৯০০ সালে, পপরবর্তী অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয় ফ্রান্সের প্যারিসে। যেখানে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট অংশগ্রহণ করে। যেখানে গ্রেট ব্রিটেনের সাথে প্রতিযোগিতা করে স্বাগতিক ফ্রান্স। এখানে উল্লেখ্য ফ্রান্স দলটি ইংরেজদের দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। অপরপক্ষে ব্রিটেন দলকে প্রতিনিধিত্ব করে ডেভন ও সামারেস্ট ওয়ান্ডারস ক্রিকেট ক্লাব। জাতীয়ভাবে কোনো দলের খেলোয়ার বাছাই করা হয়নি। আরো কয়েকটি ইংলিশ ক্লাব বিভিন্ন দলের হয়ে অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।
–
অলিম্পিকের একমাত্র ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল দুই দিনের ম্যাচ হিসেবে। প্রতি দলে ছিল ১২ জন খেলোয়াড়! ইংল্যান্ড ম্যাচটি জিতে নেয় ১৫৮ রানে। যেখানে ফ্রান্স আর ৫ মিনিট ব্যাট করতে পারলে ম্যাচটি ড্র হয়ে যেত! দুর্ভাগ্য-ই বলা চলে! ম্যাচটি ফার্স্ট ক্লাস স্বীকৃত না হওয়ায় পুরো স্কোরকার্ড খুজে পাইনি। শোনা যায় ইংল্যান্ডের জন সিমস নিজ হাতে লিখেছিলেন স্কোরকার্ড , নাহয় ক্রিকেট ম্যাচের এই ইতিহাস হয়তো হারিয়েই যেত ইতিহাসের-ই গর্ভে! তারজন্য সিমস একটা ধন্যবাদ পেতেই পারেন! তারপর ১৯০৪ ওলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত দুর্ভাগ্যবশত অন্তর্ভুক্ত হয়নি! যার কারণে সেটাই(১৯০০) ছিল প্রথম ও শেষবারের মতো ক্রিকেট ম্যাচ যা অলিম্পিকে ছিল!
–
যদিও এখন আবার ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত করার আলাপ-আলোচনা চলতেছে। ২০১৭ সালে ওমেন্স ওয়াল্ড কাপের পর আলোচনা টা বেড়েছে! যদি অন্তর্ভুক্ত হয় তবে গুঞ্জন মোতাবেক অংশগ্রহণ করতে পারে ৮ টি দল। (মহিলা ও পুরুষ উভয় ক্রিকেটে)। অনুষ্ঠিত হতে পারে টি২০ ফর্মেটে , যেখানে গ্রুপ হবে দুইটি। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ইয়ান মরগান কিছুদিন আগে অলিম্পিকে টি১০ টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিল। আশা করি শেষ পর্যন্ত আবার অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হবে!
–
