কুমিল্লা চ্যাম্পিয়ন হবার মধ্য দিয়ে বন্ধ হয়েছে বিপিএলের দামামা। মিরপুর থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট; বদলিয়েছে কন্ডিশন। তবুও দিনের খেলায় রানের জন্য লড়াই করতে হয়েছে সব পরিবেশেই। রাতের ম্যাচের গল্পটাও তাই, বেড়েছে রান, বোলারদের দিতে হয়েছে কঠিন পরীক্ষা।
চেনা পরিবেশেও অচেনা বাংলাদেশের ব্যাটার কিংবা বোলাররা! পাইপ লাইন যেনো ফুটো হয়ে গেছে বেশ আগেই। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ঐ চেনা মুখগুলোই নতুন করে আসছে উপরে, তারুণ্যের জোয়ার নেই বাইশ গজে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎও যেনো ঘোর অন্ধকারের আভাস দিচ্ছে! ফ্লাডলাইটের আলোয়া দ্রুতি ছড়ানো আফিফ, জয়রা দিনের আলোয় পিছিয়ে বেশ! চেনা কন্ডিশনেও এমন অসহায়ত্ব বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভালো কিছুর আভাস দিচ্ছে না নিশ্চয়ই। বল হাতে মৃত্যুঞ্জয় নজরে এলেও সুযোগ পেয়েছেন মাত্র কয়েকটা ম্যাচ! ক’দিন আগে ঘরোয়াতে ২০ ওভারের ম্যাচে দ্রুততম সেঞ্চুরি হাঁকানো ইমনের জায়গা হয়না একাদশে। লেগ স্পিনার খুঁজে পায়না বিসিবি, প্রেক্ষাপট এবার একটু ভিন্ন, একাদশে জায়গা না পাওয়া লেগীরা নিজেদের প্রমাণ করবে কি নিজেদের বাড়ির ছাঁদে? যাকগে এইসব গল্প বলা যাবে আরেকদিন। আজকের গল্পটা দিনের ম্যাচে “ব্যাটারদের পরীক্ষা” ও রাতের ম্যাচে “বোলারদের সফলতা” নিয়ে! যেখানে থাকবে দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স।
শুরুটা করা যাক দিনের আলোয় ব্যাটারদের চাপকে জয় করার গল্প দিয়ে-
নাম(ম্যাচ) রান স্ট্রাইকরেট
ফ্লেচার(৬) ২৩৫ ১৩৫.০০
জ্যাকস(৫) ২৩১ ১৩৯.৩৫
মাহমুদউল্লাহ(৫) ২০৮ ১১৬.২০
মুশফিকুর(৫) ১৩৯ ১২৫.২২
ডু প্লেসিস(৪) ১৩১ ১২৪.৭৬
তামিম(৫) ১২৮ ১২০.৭৫
ওয়ালটন(২) ১২৪ ১৮৫.০৭
লিটন(৪) ১০৭ ১৫০.৭০
শামীম(৫) ৯৯ ১২৬.৯২
মিথুন(৩) ৯৫ ১৩০.১৩
সাকিব(৪) ৯৫ ১২১.৭৯
তালিকায় সেরা দশ, যেখানে চার বিদেশির সাথে ৭ দেশী! যেখানে তরুণ মুখ মাত্র একটি। বাকি মুখগুলো সিনিয়র তকমা পেয়েছে বেশ আগেই। লিস্ট বড় করলে বেশকিছু দেশি তরুণ ক্রিকেটারের নাম আসবে, উঠে আসবে প্রতিভাবান তকমা পাওয়া কিছু ক্রিকেটার। যাদের নিয়ে ক্রিকেট পাড়ায় উত্তাপ তাদের কয়েকজনের পারফরম্যান্সও দেখে নেওয়া যাক!
নাম(ম্যাচ) রান স্ট্রাইকরেট
আফিফ(৬) ৯১ ১০৯.৬৩
ইয়াসির(৪) ৮৬ ১৩২.৩০
এনামুল(৪) ৮৪ ৯৩.৩৩
মোসাদ্দেক(৩ ৭২ ১২৪.১৩
সৌম্য(৬) ৬৮ ১০৪.৬১
ইমরুল(৫) ৪৫ ১১২.৫০
এই তালিকায় কিছু মুখ আসতে পারতো! কিন্তু পরিসংখ্যান বলে দিনের আলোয় মুনিম শাহরিয়ার খেলেছেন মাত্র একটি ম্যাচ, যেখানে ২৫ বলে খেলেছিলেন ৪৫ রানের ইনিংস। জয়, তৌহিদরা কিছু রান করলেও স্ট্রাইকরেট ছিলো ৯০ এর ঘরে।
উপরের পরিসংখ্যান বলে সেরা পাঁচ রান সংগ্রাহকের ৩ জনই বিদেশি। বাকি দুই মুখ রিয়াদ-মুশি! সবসময় যেখানে পিচের দোহাই দেওয়া হয় সেখানে সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে আসা জ্যাকস, ফ্লেচাররা অচেনা কন্ডিশনে এতোটা সফল কি করে? দোষ কি আসলে পিচের, না কি দেশি ক্রিকেটারদের টেকনিক ও মানসিকতার? দিনরাত মিরপুরে উঁকি দেওয়া ক্রিকেটাররা কেনই বা মিরপুরে অচেনা? উত্তর কি মিলবে? হয়তো না!
ব্যাটারদের গল্প শেষ। দিন পেরিয়ে রাতের গল্পে ফেরা যাক। মিরপুর থেকে চট্টগ্রাম – সিলেট; সবখানেই রাতের ম্যাচে দেখা গিয়েছিলো রানের ফুলঝুরি। ব্যাটারদের সুসময়ে কতোটা সফল ছিলো বোলাররা? এইসব জানার আগে দেখে নেওয়া যাক রাতের ম্যাচের সেরা ১০ উইকেট শিকারী বোলারদর-
নাম উইকেট ইকোনমিক
ব্রাভো ১৪ ৭.৯১
সাকিব ১১ ৫.৬৭
মোস্তাফিজ ১১ ৬.৬৮
শরিফুল ৯ ৮.৮৪
শহিদুল ৯ ৮.৯২
মৃত্যুঞ্জয় ৯ ১০.৫৩
মুজিব উর ৮ ৫.৭০
তানভীর ৮ ৭.৮১
শফিকুর ৭ ৮.০৩
মেহেদী রানা ৭ ৮.৬৮
বোলারদের মাঝে নতুন মুখ তানভীর ও মৃত্যুঞ্জয়! তানভীর বৈচিত্র্যময় বোলিংয়ে নজর কেড়েছেন, মৃত্যুঞ্জয় করেছেন বাজিমাৎ। তবে মৃত্যুঞ্জয় রান খরচ করেছেন অনেক বেশী। এই তালিকায় আসেনি নাহিদুল কিংবা নাসুম!
পুরো আসরে রাতের ম্যাচে নাসুমের উইকেট ৬ টি, রান খরচ করেছেন ৬.৫৯ ইকোনমিকে! এদিক দিয়ে মিরাজের অবস্থাও বাজে, ওভার প্রতি খরচ করেছেন ৯.৬৩ রান। শেখ মাহাদী ১৭ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র একটা উইকেট শিকার করলেও রনা খরচ করেছেন ৬.০৫ করে।
ইনজুরির আগে মাত্র দুই ম্যাচ খেলা তাসকিন রান দিয়েছেন ১১.৫৭ ইকোনমিকে, উইকেট সংখ্যা ১।
দিনশেষে বিপিএল আয়োজন করে কতোটা সফল বিসিবি সেটির উত্তর মেলানো কঠিন হয়ে পড়েছে!