শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শ্রীলঙ্কার সাথে ২ উইকেটে হেরে। এশিয়া কাপের এবারের আসর থেকে বিদায় নিলো বাংলাদেশ দল। দুবাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৮৩ রানের বিশাল পুঁজি গড়েও পরাজয় এড়াতে পারেনি টাইগাররা। ১৮৩ বা এর বেশি রান করেও এ নিয়ে দ্বিতীয়বার হারল বাংলাদেশ এবং দুটিই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
টসে হেরে একাদশে তিন পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। নাইম শেখ, আনামুল হক বিজয় আর সাইফুদ্দিনের বদলে সাব্বির, মিরাজ ও টি-টোয়েন্টি তে প্রথমবারের মত অভিষেক হয় পেসার ইবাদত হোসেনের।
দীর্ঘদিন ধরে ওপেনিং কাঙ্ক্ষিত সফল না পাওয়া বাংলাদেশ এইদিন ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচ ওপেন করা মেহেদী হাসান মিরাজ ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওপেন না করা সাব্বির রহমান ওপেন করতে আসেন। প্রায় ৩ বছর দলে সুযোগ পাওয়া সাব্বির এইদিন টিকলেন মাত্র ৬ বল। ৬ বলে ৫ রান করে সাব্বির ফিরে গেলেও ওপেনিং মিরাজ নিজের জাত চেনালেন। পাওয়ার প্লেতে সাকিব কে দর্শক বানিয়ে একের পর চার ছক্কায় নিজের দায়িত্ব টা ঠিকঠাক করলেন। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তুললেন ৫৫ রান।
২৬ বলে ৩৮ রান করা মিরাজ আউট হওয়ার পর আরো একবার ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হলেন মুশফিকুর রহিম। পরপর ২ ওভারে ২ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে চাপে ফেললো শ্রীলঙ্কা। এরপর সাকিবও টিকলেননা বেশিখন। তিকশানাকে আবার জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্প হারালেন সাকিব। ২২ বলে ২৪ রান করে সাকিব ফেরলে বাংলাদেশ আরো বেশি চাপে পড়ে।
তবে সে চাপ সামাল দেন আফিফ ও মাহমুদউল্লাহ। দুইজনের ৫৭ জুটিতে ঘুরে দাড়ালো বাংলাদেশ। ২২ বলে ৩৯ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে আফিফ ফেরার পর ৪ বলের ব্যবধানে মাহমুদউল্লাহ ফিরলেন ২২ বলে ২৭ রান করে। এরপর মোসাদ্দেক ও তাসকিনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১৮৩ রানের বিশাল পুঁজি দাড় করায়। মোসাদ্দেক ৯ বলে ২৪ ও তাসকিন ৬ বলে ১১ করে অপরাজিত থাকে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের এটিই সর্বোচ্চ স্কোর। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ১৮০ পার করে বাংলাদেশ।
১৮৪ রানের লক্ষ্য খেলতে নেমে দুই ওপেনার কুশল মেন্ডিস ও পাতুম নিসাঙ্কার ৫.৩ ওভারে ৪৫ রান তুলে। এরপর টি-টোয়েন্টি অভিষেকে ১ম ওভার করতে এসেই বাংলাদেশ কে ব্রেকথ্রু এনে দেন ইবাদত হোসেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি তে প্রথম ওভারে এসেই শ্রীলঙ্কার ২ উইকেট তুলে নেন প্রথমবার এশিয়া কাপ খেলতে আসা পেসার ইবাদত। ১ম ওভারে ২ উইকেট নেওয়ার পর ২য় ওভারে দানুশকা গুনাতিলাকা কে তুলে নিয়ে ৩য় বার স্যালুট জানান ইবাদত। এরপর তাসকিনও শিকার করেন ভানুকা রাজাপক্ষেকে।
তবে একপ্রান্তে আগলে রেখে জয়ের পথটা ধরে রেখেছিলেন কুশল মেন্ডিস। চার বার জীবন পাওয়া কুশল মেন্ডিস এরপর শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক শানাকাকে নিয়ে গড়লেন ৫৪ রানের জুটি। চার বার জীবন পাওয়ার পর ৩৭ বলে করে ৬০ রান মোস্তাফিজ কে আপারকাট করতে গিয়ে থার্ডম্যানে তাসকিনের হাতে ধরা দেন।
যদিও তখনো গলার কাটা হয়ে দাড়িয়ে ছিল শানাকা। ১৮তম ওভারে সেই শানাকা কে তুলে নিয়ে ম্যাচ জয়ের আভাস পাচ্ছিলো বাংলাদেশ।
১২ বলে প্রয়োজন ২৫ রান। এরপর ইবাদত বোলিং এসেই ১৭ রান দিয়ে বাংলাদেশ কে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিলেন। ৬ বলে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ৮ রান আর মাহাদি হাসানের ২ বলে ১,৪ ও নো বল সহ দুই রান নিয়ে ২ উইকেটের জয় পেলো শ্রীলঙ্কা।
এই জয়ে এশিয়া কাপের শেষ চারে পৌঁছে গেছে শ্রীলঙ্কা। অপরদিকে আফগানিস্তানের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও ম্যাচ হেরে এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিতে হলো বাংলাদেশকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ- ১৮৩/৭ (২০ ওভার) (আফিফ ৩৯, মিরাজ ৩৮, মাহমুদউল্লাহ ২৭; চামিকা ২/৩২)।
শ্রীলঙ্কা- ১৮৪/৮ (১৯.২ ওভার) (মেন্ডিস ৬০, শানাকা ৪৫, নিসানকা ২০; এবাদত ৩/৫১, তাসকিন ২/২৪)।
ফলাফল শ্রীলঙ্কা ২ উইকেটে জয়ী।
