রেকর্ডস, সাকিব ক্যান ইজিলি পুট হিস নেম অন

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশিত সময় : শুক্রবার, ২ অক্টোবর, ২০২০
  • শেয়ার করুন

  • Facebook
Shakib Al Hasan

সাকিব আল হাসান, বাংলাদেশ ক্রিকেটের এখন অব্দি সেরা ক্রিকেটার, ৩ ফরমেটের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, গত বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা পারফর্মার, উইজডেনের শতাব্দির সেরা ক্রিকেটারদের তালিকায় থাকা একজন, টেস্ট ক্রিকেটে সবথেকে দ্রুততম ৩০০০ রানের সাথে ১৫০ উইকেট নেয়া অলরাউন্ডার কিংবা একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম ৬০০০ রানের সাথে ২৫০ উইকেট নেয়া অলরাউন্ডার, বাঁহাতি কোনো বোলার হিসেবে সব ধরনের টি২০ ক্রিকেটে ৩০০ উইকেট নেয়া প্রথম বোলার কিংবা টি২০ তে ৪০০০ রানের সাথে ৩০০ উইকেট নেয়া ২য় অলরাউন্ডার। এভাবে বলতে থাকলে কোথায় গিয়ে শেষ হবে তা আন্দাজ করাও দুষ্কর। রেকর্ড ভাঙ্গা গড়ার খেলা সাকিব আল হাসান নিয়মিতই খেলেন, নিজের রেকর্ড নিজে ভাঙ্গেন, ভেঙ্গে গড়েন সাবেক গ্রেটদের রেকর্ডও। তবে আজকে পুরোনো রেকর্ড নয়, সাকিবের সামনে থাকা ১৫ টি সম্ভাব্য রেকর্ডের খোঁজ দেব ক্রিকেটখোরদের, সব ঠিক থাকলে যেগুলো সাকিবের হবেই হবে।

১. টেস্ট ক্রিকেটে ৪ হাজার রানের সাথে ১৫০ উইকেট নেয়া অলরাউন্ডারের তালিকায় ৫ম ক্রিকেটার হিসেবে যুক্ত হয়েছেন বেন স্টোকস। ২১০ টেস্ট উইকেটের মালিক সাকিবের শুধু প্রয়োজন আর ১৩৮ রান, তাহলেই গ্যারি সোবার্স, কপিল দেব, ইয়ান বোথাম, জ্যাক ক্যালিস আর স্টোকসদের সাথে যুক্ত হবে সাকিব আল হাসানের নাম।

২. আন্তর্জাতিক টি২০ তে বল হাতে আর মাত্র ৮ টি উইকেট নিলেই সাকিব গড়ে ফেলবেন নতুন এক রেকর্ড যা আগে কেউ পারেনি। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ১৫০০ বা তার অধীক রানের সাথে ১০০ আন্তর্জাতিক টি২০ উইকেটের মালিকানা হবে শুধু সাকিবের একার।

৩. আন্তর্জাতিক টি২০ তে ৮ টি উইকেট নিলে আগের রেকর্ডের সাথে আরও একটি রেকর্ড হয়ে যাবে সাকিব আল হাসানের। লাসিথ মালিঙ্গার পর ২য় বোলার হিসেবে টি২০ তে ১০০ টি আন্তর্জাতিক উইকেট নেয়ার সুযোগ আছে সাকিবের। যদিও ৯২ উইকেটের মালিক সাকিবের পেছন থেকে ৮৯ উইকেট নিয়ে চোখ রাঙানিটা রশিদ খান ভালোভাবেই দিচ্ছে।

৪. ওডিআইতে আর ৬৭৭ রানের সাথে ৪০ টি উইকেট নিলেই সাকিব আল হাসান হয়ে যাবেন ৭ হাজার রানের সাথে ৩০০ উইকেটধারী ৩য় অলরাউন্ডার। তার আগেই এখানে নাম লিখিয়েছে আফ্রিদি আর জায়সুরিয়া। বল হাতে ৪০ উইকেট পেতে সময়ও লাগবে খানিকটা, তবুও সাকিবের আশে পাশে এই মূহুর্তে এই রেকর্ডে ভাগ বসানোর মতো তেমন কেউই নেই।

৫. একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বল হাতে ৪০ উইকেট নিয়ে নিলেই ওডিআইতে ৩০০ বা তার অধীক উইকেট নেয়া বোলারের তালিকায় ১৪ তম নামটা হবে সাকিব আল হাসান। সমসাময়িক কেউ আর এই রেকর্ডে ভাগ বসানোর মতো অবস্থাতেই এই মুহূর্তে নেই। মাশরাফি বিন মুর্তজার প্রয়োজন ছিলো ৩০ উইকেট।

৬. একদিনের ক্রিকেটে শের-এ-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বল হাতে আর মাত্র ২ উইকেট পেলে ওয়াকার ইউনিসের রেকর্ড আর ১০ উইকেট পেলে ওয়াসিম আকরামের রেকর্ড টপকে নির্দিষ্ট একটি ভেন্যুতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হবেন সাকিব আল হাসান।

৭. ওডিআই ক্রিকেটে ৭০০০ রান ক্লাবে ঢুকতে সাকিবের দরকার আর ৬৭৭ রান। এই ৬৭৭ রান যদি সাকিব ২০ ইনিংসে করেন তাহলে দ্রুততম ৭০০০ রান ক্লাবে ঢুকার ক্ষেত্রে ছাড়িয়ে যাবেন কুমার সাঙ্গাকারা, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনদের। তামিমের ইকবালের সাথে ১৮ নাম্বার পজিশনে থাকতে হলে রানটা করতে হবে ১০ ইনিংসে।

৮. জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআইতে আর মাত্র ২ টি শতক করতে পারলেই একক কোনো দলের বিপক্ষে সর্বোচ্চ শতক করা খেলোয়ারদের তালিকার সেরা ২০ এ ঢুকে যাবেন সাকিব আল হাসান। সর্বোচ্চ ৯ সেঞ্চুরি ভিরাট আর টেন্ডুলকারের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাকিবের শতক ৩টি আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সংখ্যাটা ২।

৯. টেস্টে মোট ১৮ বার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে  তালিকার ২৪ নম্বরে আছেন সাকিব। সেরা ১০ এ প্রবেশ করতে প্রয়োজন আরও ৮ বার ৫ উইকেট নেয়া। আশ্বীন আর এন্ডারসন ছাড়া বাকি সবাই অবসরে যাওয়ায় সাকিবের সামনে সুযোগ যতটা সম্ভব নিজের নাম উপরের দিকে তোলা, যদিও এই ব্যাপারটা সহজ হবে না মোটেও।

১০. টেস্ট ক্রিকেটে ফিল্ডার হিসেবে আর ২৬ টি ক্যাচ নিলেই টেস্ট ক্রিকেটে ১০০০ রান আর ৫০ উইকেটের সাথে ৫০ টি ক্যাচ নেয়ার তালিকায় ২৮ নম্বর ক্রিকেটার হিসেবে ঢুকে যাবে সাকিব আল হাসানের নাম। সাকিবের টেস্টে ক্যাচ সংখ্যা ২৪ টি। আরও ২৬ টি সম্ভব কি না তা সময়ই বলে দেবে।

১১. মিরপুরের শের-এ-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাদা পোশাকে সাকিব আর ৩৩৮ রান করলে নির্দিষ্ট এক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ টেস্ট রান করার তালিকায় সেরা ১০ এ প্রবেশ করবেন সাকিব আল হাসান। সেরা ৫ এ যেতে দরকার ৭০৩ রান।

১২. টেস্ট ক্রিকেটে ২৫০ উইকেট হতে সাকিবের প্রয়োজন আরও ৪০ উইকেট। এই ৪০ উইকেট নিতে ১৫ ম্যাচ সময় নিলে সাকিব টপকে যাবেন জহির খান, মর্নে মরকেলের মতো প্লেয়ারদেরকে, থাকবেন স্টুয়ার্ড ব্রডের সাথে। কপিল দেবকে ধরতে কাজটা সারতে হবে ৯ ম্যাচেই। তার স্থান ২৯ নম্বরে।

১৩. ওডিআইতে একই ভেন্যুতে সর্বোচ্চ রানের মালিক তামিম ইকবাল। তার পেছনে উঠে আসতে সাকিবের প্রয়োজন হোম অব ক্রিকেটে আর আর মাত্র ৪২ রান করা।

১৪. শের-এ-বাংলাতে ওডিআইতে আর ৯ উইকেট নেয়ার সাথে রানের দিক থেকে তামিমকে টপকাতে পারলেই হয়ে যাবেন একই ভেন্যুতে ওডিআইতে এক সাথে সর্বোচ্চ রান আর উইকেটের মালিক। এই মুহূর্তে মিরপুরে তামিম ইকবালের রান ২৬১৯ আর সাকিব আল হাসানের ২৪৭২।

১৫. সামনে আছে কোনো নির্দিষ্ট গ্রাউন্ডে সর্বোচ্চ টি২০ উইকেট শিকারী হওয়ার সম্ভাবনাও। মিরপুরে ২৫ উইকেট নিয়ে সাকিব ২য় যেখানে একই মাঠে ২৭ উইকেট নিয়ে আল আমিন হোসাইন প্রথম আর ২০ উইকেট নিয়ে মুস্তাফিজুর রহমান ৪র্থ। ৩ বাংলাদেশীর মাঝে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২২ উইকেট নিয়ে ৩য় সোহেল তানভির আর দেরাদুনে ১৯ উইকেট নিয়ে ৫ম আফগান রশিদ খান।

উপরে উল্লেখ করা ১৫ টি সম্ভাব্য রেকর্ডের সবই বৈশ্বিক রেকর্ড এর সম্ভাবনা থেকে খুঁজে নিয়েছি, নিজ দেশের সেরা কিংবা মহাদেশের না। সাকিব বিশ্বসেরা, নিজ দেশে সেরার রেকর্ডের কথা বলে তাই সময় নষ্ট করতে চাইনি। অবসরে যাওয়ার সময় বিশ্বের প্রতিটি ক্রিকেট ফলোয়ার ব্যক্তি বলতে বাধ্য হবে “বিশ্বসেরা একজন অলরাউন্ডারের রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা আজ শেষ হচ্ছে”- এমন আশা নিয়েই অপেক্ষা করব সাকিবের নতুন নতুন রেকর্ড গড়ার গল্প লিখতে।

 

, , ,

মন্তব্য করুন

এই বিভাগের আরো খবর