সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন! ওয়েদার আপডেট অনুযায়ী ম্যাচের টাইমে বৃষ্টির সম্ভবনা ছিল, সাকিবও টসে জিতে ব্যাটিং নিতেন বলে জানিয়েছিলেন!
দক্ষিন আফ্রিকার পক্ষে ইনিংসের উদ্ভোদন করতে আসেন তাদের নিয়মিত দুই টি-টোয়েন্টি ওপেনার টেম্বা বাভুমা এবং কুইন্টন ডি কক! ইনিংসের প্রথম ওভারেই তাসকিনের বলে উইকেট কিপার সোহানের হাতে ক্যাচ দিয়ে বাভুমা ফিরেন ব্যক্তিগত ২ রানে! দক্ষিন আফ্রিকার দলীয় রান ছিলো ২-১ (১ ওভারে)
বাভুমার পর ক্রিজে আসেন রাইলি রশো! দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রশো-কক মিলে গড়েন ১৬৮ রানের বিশাল পার্টনারশিপ! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিন আফ্রিকার সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপ ছিলো এটি! দলীয় ১৫ তম ওভারে আফিফ হোসেনের বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৬৩ রানে কুইন্টন ডি কক প্যাভিলিয়নে ফিরলে ইতি ঘটে রশো-ককের দুর্দান্ত পার্টনারশিপের!
ককের পর ব্যাটিং করতে ক্রিজে আসেন ট্রিস্টিয়ান স্টাবস! ক্রিজে এসে আগ্রাসি ব্যাটিং শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেন নি স্টাবস! ব্যক্তিগত মাত্র ৭ রানে বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসানের বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন ট্রিস্টিয়ান স্টাবস। স্টাবস ফেরার পর ক্রিজে আসেন এইডেন মারকরাম! মারকরাম ক্রিজে আসার পর নিজের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর সাকিব আল হাসানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ১০৯ রানে সাজঘরে ফিরেন রাইলি রশো।
রশোর পর ব্যাট করতে ক্রিজে নামেন ডেভিড মিলার! শেষ পাঁচ ওভারে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের কারনে খুব বেশী রান করতে পারেনি দক্ষিন আফ্রিকা! শেষ পাঁচ ওভারে বাংলাদেশের বোলাররা দিয়েছেন মাত্র ২৯ রান। ইনিংসের শেষ ওভারে ১০ রানে হাসান মাহমুদের বলে এইডেন মারকরাম সাজঘরে ফিরলে ইনিংসের বাকি দুই বল খেলে আসেন পার্নেল-মিলার।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান সংগ্রহ করে দক্ষিন আফ্রিকা! দক্ষিন আফ্রিকার পক্ষে ব্যাট হাতে রাইলি রশো ১০৯(৫৬) রান, কুইন্টন ডি কক ৬৪(৩৮) রান ও মারকরাম ১০(১১) রান করেন! বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে সাকিব আল হাসান ২ উইকেট, আফিফ হোসেন, হাসান মাহমুদ ও তাসকিন আহমেদ ১টি করে উইকেট নেন।
২০৬ রানের পাহাড়সম লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে ব্যাট হাতে ওপেন করতে ক্রিজে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার! ইনিংসের শুরু থেকে আগ্রাসী ব্যাটিং করলেও বেশীক্ষণ সেই আগ্রাসন ধরে রাখতে পারেনি দুই ওপেনার! ইনিংসের প্রথম ওভারেই রাবাদার বলে ১৭ রান আনে বাংলাদেশ! কিন্তু ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ডি ককের হাতে ক্যাচ দিয়ে আনরিক নরকিয়ার বলে সৌম্য সরকার সাজঘরে ফিরলে বাংলাদেশের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে!
একই ওভারে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন নাজমুল হোসেন শান্ত! এরপর সাকিব-লিটন মিলে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে সাকিবকেও প্যাভিলিয়নের পথ ধরান আনরিক নরকিয়া! বাংলাদেশের দলীয় স্কোর তখন ৩৯-৩ (৪.৪ ওভারে)! এরপর আফিফ ক্রিজে এসে ব্যক্তিগত ১ রানে ওয়াইন পার্নেলের বলে সাজঘরে ফিরেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। আফিফের পর ক্রিজে আসেন মেহেদি হাসান মিরাজ! লিটন-মিরাজ দেখেশুনে আগানোর চেষ্টা করলেও ব্যক্তিগত ১১ রানে মিরাজকে সাজঘরে ফেরত পাঠান তারাবেজ শামসি!
মিরাজের পর মোসাদ্দেক ক্রিজে সে রানের খাতা খুলার আগেই কেসভ মহারাজের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। মোসাদ্দেকের পর ক্রিজে আসেন নুরুল হাসান সোহান। সোহানকে ব্যক্তিগত ২ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরান তারাবেজ শামসি! সোহানের পরে ব্যাট হাতে ক্রিজে আসেন তাসকিন আহমেদ! তাসকিন ক্রিজে আসার পরপরই তারাবেজ শামসির তৃপ্ত শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেন লিটন দাস!
লিটনের পর ক্রিজে আসেন হাসান মাহমুদ! রানআউটের ফাদে পড়ে ব্যক্তিগত শূন্য রানে হাসান মাহমুদ ফিরলে বাংলাদেশের ৯ম উইকেটের পতন ঘটে দলীয় ৮৯ রানে! হাসানের পর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসেন মুস্তাফিজুর রহমান! ব্যক্তিগত ১০ রানে তাসকিন আহমেদকে ফিরিয়ে ইনিংসে নিজের চতুর্থ উইকেট শিকার করেন আনরিক নরকিয়া! বাংলাদেশ দলও অলআউট হয় ১০১ রানে!
সংক্ষিপ স্কোরঃ-
দক্ষিন আফ্রিকা ২০৫/৫ (২০)
রাইলি রশো ১০৯(৫৬), কুইন্টন ডি কক ৬৩(৩৮) রান ও এইডেন মারকরাম ১০(১১) রান।
সাকিব আল হাসান ২ উইকেট, আফিফ ১ উইকেট, হাসান মাহমুদ ১ উইকেট, তাসকিন আহমেদ ১ উইকেট!
বাংলাদেশ ১০১/১০ (১৬.৬)
লিটন দাস ৩৪(৩১) রান, সৌম্য সরকার ১৫(৬), মেহেদি মিরাজ ১০(১১) রান।
আনরিক নরকিয়া ৪ উইকেট, তারাবেজ শামসি ৩ উইকেট, কেসভ মহারাজ ১ উইকেট, কাগিসো রাবাদা ১ উইকেট!
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচঃ- রাইলি রশো।
দক্ষিন আফ্রিকা একাদশঃ- বাভুমা, ডি কক, রশো, স্টাবস, মারকরাম, মিলার, পার্নেল, মহারাজ, রাবাদা, নরকিয়া ও শামসি!
বাংলাদেশ একাদশঃ- শান্ত, সৌম্য, লিটন, সাকিব, আফিফ, মিরাজ, মোসাদ্দেক, সোহান, তাসকিন, হাসান ও মুস্তাফিজ!