১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

প্রতিবেদক
ডেস্ক নিউজ
বুধবার, ৭ ডিসেম্বর , ২০২২ ১১:১৯

৪৮ তম ওভারে মুস্তাফিজের মেইডেন ওভারের পর, ৪৯ তম ওভারে মাহমুদউল্লাহর করা ওভারে রোহিতের সংগ্রহ ২০ রান, সাথে দুইবার জীবন। ১২ বলে ৪০ রানের সমীকরণ তখন ৬ বলে ২০ রানে। তবে কি ভাঙা আঙুল নিয়েই রোহিত ম্যাচটাকে নিজেদের করে নিবেন। শেষ ওভারে ৫ বলে ১৪ রান নিয়ে যেনো সেই সম্ভাবনাটা আরো জোরালো করলেন হিটম্যান রোহিত শর্মা। এরপর শেষ বলে মুস্তাফিজুর রহমানের করা ইয়র্কারের সাথে সাথেই যেনো গগন বিধারী চিৎকারে ফেটে পড়লো টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। মিরপুরের গর্জন যেনো আচড়ে পড়লো বঙ্গোপসাগরের । সকল রোমাঞ্চ আর উত্তেজনার সমাপ্তি ঘটিয়ে ৭ বছর পর আবারো ঘরের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জয় বাংলাদেশের।

এর আগে সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া বাংলাদেশের টপ অর্ডার তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ভারতীয় বোলারদের সামনে। ব্যাট হাতে লিটন, সাকিব, মুশফিকরা ব্যর্থ হলে মাত্র ৬৯ রানেই বাংলাদেশের ৬ উইকেটের পতন ঘটে। দেড়শো ছুঁতে পারবে কিনা সেই চিন্তায় যখন নীরব মিরপুর স্টেডিয়াম ঠিক তখনই আজকেও দৃশ্যপটে অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।

প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও দলের ত্রাণকর্তা হিসাবে আবর্তিত হন মিরাজ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে দায়িত্বশীল জুটি গড়ে বাংলাদেশ কে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরান মিরাজ। ঠান্ডা মাথায় দুজন গড়েন ৭ম উইকেটে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড ১৪৮ রানের পার্টনারশিপ। এছাড়াও ভারতের বিপক্ষে যেকোন উইকেটে সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপও এটি। ৯৬ বলে ৭৭ রানের ইনিংস খেলে মাহমুদউল্লাহ ফিরে গেলেও লড়াই চালিয়ে যান মেহেদী হাসান মিরাজ।

শেষ ওভারে ২০ রান নিয়ে প্রথম বারের মতো ক্যারিয়ারের ওডিয়াই সেঞ্চুরি হাঁকান অলরাউন্ডার মিরাজ। দুর্দান্ত এ সেঞ্চুরি করতে মিরাজ খরচ করেছেন ৮৩ বল। শেষদিকে ১১ বলে নাসুমের ১৮ রানের ক্যামিওর উপর ভর করে ৫০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭১ রান।

২৭২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে ছাড়াই ওপেনিংয়ে আসে বিরাট কোহলি ও শেখর দাওয়ান। প্রথম ইনিংসের শুরুতেই দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ সিরাজের বলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন রোহিত। প্রথম ম্যাচের পর এ ম্যাচেও ব্যর্থ কোহলি, দাওয়ান ফিরেছেন ব্যাক্তিগত ১০ এর কোটা পেরোনোর আগেই। এবাদতের বলে বোল্ড হয়ে কোহলি ফিরেছেন ৫ রানে, ৮ রানে মুস্তাফিজের শিকার শেখর দাওয়ান। মিডল অর্ডারে হাল ধরতে ব্যর্থ ওয়াশিংটন সুন্দর ও লোকেশ রাহুল।

তবে শ্রেয়স আইয়ার ও আকসার প্যাটেল এর পার্টনারশিপে ম্যাচে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ভারত। এ দুজনের ১০৭ রানের জুটিতে যখন জয়ের স্বপ্ন বুনছে ভারত ঠিক তখন আবারো একবার দৃশ্যপটে মিরাজ। ভয়ংকর হয়ে উঠতে থাকা আইয়ারকে দলীয় ১৭২ ও ব্যক্তিগত ৮২ রানে ফিরিয়ে ম্যাচে আবারো লাগাম টানে বাংলাদেশ। দলীয় ১৮৯ রানে এবাদতের বলে ৫৬ রান করে আকসার ফিরে গেলে জয়ের দিকে আরো একধাপ এগিয়ে যায় টাইগাররা।

বাঁহাতের ব্যান্ডেজ নিয়ে ব্যাট করতে আসা রোহিত শর্মা ঝড় তুললেও শেষ হাসি বাংলাদেশেরই। ইনিংসের শেষ বলে ৫ রানের জয় তুলে নিয়ে ২-০ তে সিরিজ জয় নিশ্চিত হয় টাইগারদের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৭১/৭ (৫০.০ ওভার)
এনামুল ১১, লিটন ৭, শান্ত ২১, সাকিব ৮, মুশফিক ১২, মাহমুদউল্লাহ ১৪, আফিফ ৬, মিরাজ ১০০, নাসুম ১৮; সিরাজ ৭৩-২, উমরান ৫৮-২, ওয়াশিংটন ৩৭-৩।

ভারত: ২৬৬/৯ (৫০.০ ওভার)
কোহলি ৫, ধাওয়ান ৮, শ্রেয়াস ৮২, ওয়াশিংটন ১১, রাহুল ১৪, আকসার ৫৬, শার্দুল ৭, চাহার ১১, রোহিত ৫১, সিরাজ ২, উমরান ০;
মিরাজ ৪৬-২, ইবাদত ৪৫-৩, মুস্তাফিজুর ৪৩-১ , সাকিব ৩৯-২, মাহমুদউল্লাহ ৩৩-১

ফল: বাংলাদেশ ৫ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্যা ম্যাচ- মেহেদী হাসান মিরাজ।

, , ,

মতামত জানান :