সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে হারারে স্পোর্টস ক্লাবে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলপতি তামিম ইকবাল।
প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে জিম্বাবুয়ের পক্ষে ইনিংসের উদ্ভোদন করতে ক্রিজে আসেন রাগিস চাকাভা ও মারুমানি। ওপেনিং জুটিতে তারা যোগ করেন ৩৬ রান। ব্যক্তিগত ৮ রানে সাকিব আল হাসানের বলে মারুমানি প্যাভিলিয়নে ফিরলে জিম্বাবুয়ে তাদের প্রথম উইকেটটি হারায়।
মারুমানির পর ক্রিজে আসেন ব্রেন্ডন টেইলর৷ দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে টেইলর-চাকাভা গড়েন ৪২ রানের পার্টনারশিপ। ব্যক্তিগত ২৮ রানে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের প্রথম শিকার হয়ে ব্রেন্ডন টেইলর প্যাভিলিয়ন ফিরলে তাদের পার্টনারশিপের সমাপ্তি ঘটে। টেইলরের পর ক্রিজে আসেন ডিওন মায়ারস। তৃতীয় উইকেট জুটিতে চাকাভা-মায়ারস গড়েন ৭৮ রানের দুর্দান্ত পার্টনারশিপ। ব্যক্তিগত ৩৪ রানে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ডিওন মায়ারস সাজঘরে ফিরলে তাদের পার্টনারশিপের ইতি ঘটে।
মায়ারসের পর ক্রিজে আসেন মাধেভেরে। ক্রিজে এসে নামের পাশে ৩ রান যোগ করেই মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন মাধেভেরে। মাধেভেরের পর ক্রিজে আসেন সিকান্দার রাজা। রাজা ক্রিজে আসার পরপরই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি হাকিয়ে ব্যক্তিগত ৮৪ রানে তাসকিন আহমেদের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন রাগিস চাকাভা। চাকাভার পর ক্রিজে আসেন রায়ান বার্ল। ৬ষ্ট উইকেট জুটিতে রাজা-বার্ল মিলে গড়েন ১১২ রানের বিশাল পার্টনারশিপ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৭তম ফিফটি হাকিয়ে ব্যক্তিগত ৫৭ রানে মুস্তাফিজুর রহমানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সিকান্দার রাজা প্যাভিলিয়ন ফিরলে তাদের পার্টনারশিপের ইতি ঘটে।
রাজার পর ক্রিজে আসেন জংয়ে। জংয়ে ক্রিজে আসার পরপরই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি হাকিয়ে ব্যক্তিগত ৫৯ রানে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের প্রথম শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন রায়ান বার্ল। বার্লের পর ক্রিজে আসেন ডোনাল্ড থ্রিপানো।ক্রিজে এসে ব্যক্তিগত শূন্য রানে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ডোনাল্ড থ্রিপানো। থ্রিপানোর পর ক্রিজে আসেন টেন্ডাই চাতারা৷ ক্রিজে এসে নামের পাশে ১ রান যোগ করেই মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের তৃতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান টেন্ডাই চাতারা। চাতারার পর ক্রিজে আসেন ব্লেসিং মুজারাবানি। ক্রিজে এসে নামের পাশে কোনো রান না যোগ করেই মুস্তাফিজুর রহমানের তৃতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন ব্লেসিং মুজারাবানি।
শেষ পর্যন্ত ৫৯.৩ ওভারে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ২৯৮ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। জিম্বাবুয়ের পক্ষে ব্যাট হাতে রাগিস চাকাভা ৮৪(৯১) রান, রায়ান বার্ল ৫৯(৪৩) রান ও সিকান্দার রাজা ৫৭(৫৪) রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২ উইকেট, সাকিব আল হাসান ও তাসকিন আহমেদ ১টি করে উইকেট নেন।
২৯৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে ব্যাট হাতে ইনিংসের সূচনা করতে ক্রিজে আসেন লিটন দাস ও তামিম ইকবাল । ওপেনিং জুটিতে তামিম-লিটন যোগ করেন ৮৮ রান। ব্যক্তিগত ৩২ রানে মাধেভেরের প্রথম শিকার হয়ে লিটন দাস সাজঘরে ফিরে গেলে বাংলাদেশের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে।
লিটনের পর ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তামিম-সাকিব গড়েন ৫৯ রানের পার্টনারশিপ। ব্যক্তিগত ৩২ রানে জংয়ের বলে সাকিব আল হাসান প্যাভিলিয়ন ফিরলে তাদের পার্টনারশিপের ইতি ঘটে। সাকিবের পর ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ মিথুন। তামিম-মিথুন গড়েন ৫৭ রানের পার্টনারশিপ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৪তম সেঞ্চুরি হাকিয়ে ব্যক্তিগত ১১২ রানে ডোনাল্ড থ্রিপানোর প্রথম শিকার হয়ে তামিম ইকবাল সাজঘরে ফিরলে তাদের পার্টনারশিপের সমাপ্তি ঘটে।
তামিমের পর ক্রিজে আসেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ক্রিজে এসে নামের পাশে কোনো রান না যোগ করেই ডোনাল্ড থ্রিপানোর দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। রিয়াদের পরে ক্রিজে আসেন নুরুল হাসান সোহান। ৫ম উইকেট জুটিতে সোহান-মিথুন গড়েন ৬৪ রানের পার্টনারশিপ। ব্যক্তিগত ৩০ রানে মাধেভেরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে মোহাম্মদ মিথুন সাজঘরে ফিরলে ইতি ঘটে তাদের পার্টনারশিপের। মিথুনের পর ক্রিজে আসেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ৬ষ্ট উইকেট জুটিতে সোহান-আফিফ ৩৪ রানের অনবদ্য পার্টনারশিপ গড়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
শেষ পর্যন্ত ৪৮.০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩০২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে ব্যাট হাতে তামিম ইকবাল ১১৪(৯৭) রান, নুরুল হাসান ৪৫(৩৯)* রান ও লিটন দাস ৩২(৩৭) রান করেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে মাধেভেরে ও থ্রিপানো ২টি করে উইকেট ও জংয়ে ১টি উইকেট নেন।
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচঃ- তামিম ইকবাল।
ম্যান অফ দ্যা সিরিজঃ- সাকিব আল হাসান।
জিম্বাবুয়ে একাদশঃ- চাকাভা, মারুমানি, টেইলর(ক্যাপ্টেন), মায়ারস, মাধেভেরে, রাজা, বার্ল, জংয়ে, থ্রিপানো, চাতারা ও মুজারাবানি।
বাংলাদেশ একাদশঃ- লিটন, তামিম(ক্যাপ্টেন), সাকিব, মিথুন, মাহমুদুল্লাহ, সোহান, আফিফ, মোসাদ্দেক, সাইফউদ্দিন, তাসকিন ও মুস্তাফিজ।
