১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মিচেল – নিশামে ভর করে প্রথমবার ফাইনালে কিউইরা

প্রতিবেদক
ডেস্ক নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর , ২০২১ ১২:২০

ম্যাচ জয়ের নায়ক মিচেল!

জিতলেই ফাইনাল; শারজায় মঈন আলীর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বোলাররাও আশা দেখাচ্ছিলো। কিন্তু ইংরেজদের স্বপ্নকে ভঙ্গ করে নিশাম – মিচেলের দুর্দান্ত ব্যাটে জয় তুলে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। সেই সাথে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে কিউইরা।

প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই জনির বিদায়। বাটলার আশা দেখালেও দিতে পারেননি নিজের সেরাটা। মালানের পর মঈন আলীর লড়াকু ব্যাটিং। সেই সাথে চলতি আসরে প্রথমবারের মতো ফিফটির দেখাও পান মঈন আলী। ২০ ওভার শেষে কিউইদের সামনে ১৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর ছুঁড়ে দেয় ইংরেজরা।

১৬৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই গাপটিলের বিদায়। নতুন বলে বিধ্বংসী ওকস। ১৩ রানের মাথায় অধিনায়ক উইলিয়ামসনের বিদায়। চাপে চাপে বিধ্বস্ত হতে থাকে কিউইরা। ১০ ওভার শেষে কিউইদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৫৮ রান। তখনও জয় থেকে ১০৯ রান দূরে, হাতে মাত্র ৬০ বল।

অনেকে তো ধরেই নিয়েছিলো কিউইদের বিদায় নিশ্চিত। বিপক্ষের শক্তিমত্তার বিচারে কিউইরাও তখন ছিলো বেশ পিছিয়ে। কিন্তু…

এভাবেও ম্যাচে ফেরা যায়?

লক্ষ্যমাত্রা ১৬৭ রান; ১০ ওভার শেষে কিউইদের সংগ্রহ ৫৮ রান! সেখান থেকে ৬ বল হাতে রেখে জয়। এটাকে দুর্দান্ত না বলে উপায় নেই। কি অসাধারণ ম্যাচিউরিটি দলে; পরিস্থিতিকে যেনো তারা উপভোগ করেন বাইশ গজে ব্যাট হাতে। এতো চাপের মুখেও কনওয়ে – মিচেল ফুটিয়ে তুলেছে ম্যাচিউরিটি। তারা লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এগিয়ে যায়; কিন্তু তফাৎ একটুকু, যেখানে তাদের মাঝে থাকে না কোনো তাড়াহুড়ো।

আপনি কনওয়ের ব্যাটিং দেখুন; চাপকে জয় করে কি দারুণ একটা ইনিংস উপহার দিলো। মিচেলকে দেখুন; সে কোনো স্টার নয়, কিন্তু স্টার বনে গেলেন। কিভাবে? একটু বুদ্ধির ব্যবহার করে। আপনি শুরুর মিচেলকে দেখে আশা দেখেছেন কি না তা জানি না। তবে আমি মিচেলকে নিয়ে শুরু থেকেই আশাবাদী ছিলাম। মিচেলকে ধন্যবাদ আমাকে সঠিক প্রমাণ করানোর জন্য।

লিভিংস্টোনের একটা ওভার; ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে আওয়াজ এলো, গেইম চেঞ্জিং ওভার। আচ্ছা সেই ওভারে মিচেলের ব্যাটিং লক্ষ্য করেছেন অবশ্যই৷ মিচেল হয়তো সেই ওভারের পরেই নিজের উপর জেদ করে বসেছিলো, সঙ্গী নিশাম। ২৪ বলে তখনও প্রয়োজন ছিলো ৫৭ রান! এমন পরিস্থিতি থেকেও ৭ বল হাতে রেখে জয়; ম্যাচিউরিটি না থাকলে এমন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ জয়ের নায়ক বনে যাওয়া সম্ভব না। আপনি সেই মূহুর্তের নিশামকে দেখুন, সবে মাত্র ক্রিজে এসেই যেনো ক্রিজকে জয় করে নিয়েছেন। নেই তাড়াহুড়ো, কিন্তু রয়েছে সঠিক নিশানা। নিশাম নিশানায় পৌঁছাতে না পারলেও সঠিক পথটা দেখিয়ে এসেছিলো নিশ্চইয়।

ক্রিকেট তো এমনি, গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলায় প্রতি বলে বলে রোমাঞ্চ; আর সেই রোমাঞ্চ ফুটে ওঠে মিচেলদের মতো ঠান্ডা মাথার ক্রিকেটারদের জন্য। যেখানে প্রতিটি সেকেন্ডে বদলে যায় গেইম; ঠিক যেনো পাশার দানের মতো।

আপনি বেয়ারেস্টোর ক্যাচ দেখেছেন নিশ্চিইয়; জর্ডান উল্লাসে মাতলেও ছক্কায় পরিণত হয়। একটু ফিরে ২০১৯ এ গেলে বোল্টের সেই ক্যাচ ধরেও ছক্কা হবার কথা মনে পড়ে। আজও মনে পড়েছিলো। কেমন জানি মনে হচ্ছিলো সেদিনের মতোই একটা রোমাঞ্চকর পরিবেশের তৈরি হতে চলছে। ঠিকই হয়েছে…

নিজের প্রথম তিন ওভারে দুর্দান্ত ওকসকে যেনো নিজের বশে নিয়েছিলেন মিচেল। কি দুর্দান্ত ব্যাটিং, কি দুর্দান্ত টাইমিং; পিওর ক্লাস। ক্রিকেট যেনো এই টাইমিংয়ে পূর্ণতা পায়। এমন ব্যাটের শব্দে রচিত হয় মহাকাব্য; যেখানে নায়ক খলনায়ক হতে যাওয়া সেই মিচেলই!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড – ১৬৬/৪(২০)
মঈন ৫১*, মালান ৪১;
সাউদি ২৪/১

নিউজিল্যান্ড – ১৬৭/৫(১৯)
মিচেল ৭২*, কনওয়ে ৪৬, নিশাম ২৭
লিভিংস্টোন ২২/২

ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: ড্যারিন মিচেল।

অভিনন্দন মিচেল; অভিনন্দন কিউই।

, , , ,

মতামত জানান :